বাংলাদেশের নতুন করে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া রোগের বিস্তরণ কিছুটা বেড়েছে যার কারণে পুনরায় সতর্কতা মেনে চলার নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। আগের চেয়ে সংক্রমন পরিস্থিতি অনেকটা বেড়ে যাওয়ায় নতুন করে ধর্মীয় প্রার্থনালয়গুলোতে বেশকিছু স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। মসজিদে নামাজ আদায়ের জন্য উপস্থিত ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের নয়টি স্বাস্থ্যবিধি অধিক নির্দেশনা মেনে চলার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের সুপারিশের ভিত্তিতে মঙ্গলবার ধর্ম মন্ত্রণালয় এ বিধিনিষেধ আরোপ করে।
এতে বলা হয়েছে যে, রোগটির প্রাদুর্ভাবের কারণে সারা দেশে সংক্রমনের সংখ্যা তীব্রভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। চিঠিতে কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করে নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
এই ধরনের সৃষ্ট পরিস্থিতিতে দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে সব ধর্মের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও মসজিদে জামাতের নামাজের জন্য ৯টি শর্ত পালনের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
শর্তগুলো হলো- ১. মসজিদের প্রবেশপথে হ্যান্ড স্যানিটাইজার/হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ সাবান-পানি রাখতে হবে এবং আগত মুসল্লিদের অবশ্যই মাস্ক পরে মসজিদে আসতে হবে।
২. প্রত্যেকের নিজ নিজ বাড়ী থেকে ওযু করা উচিত, ঘরে সুন্নাত নামায পড়া এবং মসজিদে এসে ওযু করার সময় কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড সাবান দিয়ে হাত ধোয়া উচিত।
৩. মসজিদে কার্পেট বিছানো যাবে না। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আগে পুরো মসজিদ জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। মুসল্লিদের নিজ নিজ দায়িত্বে জায়নামাজ নিয়ে আসতে হবে।
৪. কাতারে নামাজের জন্য দাঁড়ানোর সময় অবশ্যই সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে হবে।
৫. ছোট ছেলে-মেয়ে, বৃদ্ধ, যে কোন অসুস্থ ব্যক্তি এবং অসুস্থদের সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তিরা জামাতে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থাকবেন।
৬. সংক্রমণ রোধ নিশ্চিত করতে মসজিদের অযু কক্ষে সাবান/হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে। মসজিদে সংরক্ষিত জায়নামাজ ও টুপি ব্যবহার করা যাবে না।
৭. জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, স্থানীয় প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে।
৮. এই রোগের প্রাদূর্ভাব থেকে রক্ষা পেতে নামাজ শেষে মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে দোয়া করবেন খতিব, ইমাম ও মুসল্লিরা।
৯. মাননীয় খতিব, ইমাম ও মসজিদ পরিচালনা কমিটি বিষয়গুলো বাস্তবায়ন নিশ্চিত করবেন।
এছাড়াও, অন্যান্য সমস্ত ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বা উপাসনালয়ে প্রবেশের সময় মাস্ক পরা, হ্যান্ড স্যানিটাইজার/সাবান দিয়ে হাত ধোয়া এবং সামাজিক স্বাস্থ্যবিধি নিয়মগুলি যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে।
এসব নির্দেশনা অমান্য করলে স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
প্রজ্ঞাপনে স্থানীয় প্রশাসন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সংশ্লিষ্ট মসজিদের ব্যবস্থাপনা কমিটিকে এই রোগের বিস্তার রোধে নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের সংক্রমণ পরিস্থিতি আগের চেয়ে অবনতি হওয়ায় স্বাস্থ্যবিভাগ সর্তকতা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, জনসচেতনতা সৃষ্টি সংক্রমণ প্রতিরোধ করার বড় উপায়। কিন্তু সংক্রমন পরিস্থিতি কমে যাওয়ায় মানুষের উদাসীনতা একদমই বেড়ে যায়, যেটা কোনোভাবেই কাম্য নয়।