বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে স-পরিবারে শেষ করে দেয়া হয়েছিল আগস্টের ১৫ তারিখে। আর সেই কারনেই আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই এ দিনটিকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করে আসছে দলটি এবং এবং সারা দেশ।
এ দিকে ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হ’ত্যার পর নেতাদের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের নেতারাও আছেন। জাতির জনকও অনেককে ডেকেছেন। তারা কী করেছিলো? সবাই বেঁচে থাকে বেঁচে থাকার জন্য। জীবন্ত প্রমাণ যে মারা গেলে কেউ থাকে না।’
মঙ্গলবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম মৃত্যুবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
কিছু আশা না করে শেখ হাসিনা বলেন, এর জন্য আমি কিছু আশা করি না। সবকিছু সহ্য করেছি, আমি কখন ক্ষমতায় যেতে পারি তার জন্য অপেক্ষা করেছি। আর এ দেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে পারি। দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পারি। তবেই এই হত্যার প্রকৃত প্রতিশোধ নেওয়া হবে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘ধানমন্ডির ওইসব লাশ পড়ে ছিল। কত স্লোগান, বঙ্গবন্ধু তুমি কোথায় আমরা। অনেক স্লোগান ছিল। কোথায় ছিল সেই মানুষগুলো? একজন মানুষ এগিয়ে আসার সাহস পাননি? একজন মানুষ কি প্রতিবাদ করেনি? কেন পারলেন না? এত বড় সংগঠন, এত সমর্থক, এত মানুষ। কেউ একটা কথা বলার সাহস পেল না। ১৫ আগস্ট থেকে ১৬ আগস্ট পর্যন্ত সেখানে লাশ পড়ে ছিল।
টুঙ্গিপাড়ায় যাতে কেউ যেতে না পারে সেজন্য জাতির জনকের মরদেহ রাখা হয়েছে দাবি করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ সেখানে মানুষ ঢল ঢালছে।
বঙ্গবন্ধু কিছু কেড়ে নেননি, তিনি দিয়েছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি একটি দেশ দিয়েছেন। দৌড়ে পাশ করেছে। পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। নিজের পরিচয় দিলেন। বিধ্বস্ত বাংলাদেশ গড়ার মধ্য দিয়ে তিনি উন্নয়নের যাত্রা শুরু করেন। বাংলাদেশের মানুষের কাছ থেকে তিনি কিছুই নেননি। রিলিফ কাপড়ের কিনারা ছিঁড়ে বাংলাদেশের দরিদ্র জনগণকে যে ত্রাণ দিতে পারতেন তা দিয়ে তাকে কাফন দেওয়া হয়েছিল। আমার বাবা-মা, ভাই-বোন বাংলাদেশের মানুষের কাছ থেকে কিছুই নেয়নি। ১৬ তারিখ সব লাশ নিয়ে বনানীতে দাফন করা হয়।
মুসলিম হিসেবে শেখ হাসিনা জানাজার নামাজও পড়েননি উল্লেখ করে বলেন, সামান্য কাফনও দেননি। ৭৫ বছর বয়সী ঘাতকদের হত্যার পর বাংলাদেশকে ইসলামী রাষ্ট্র ঘোষণা করা হয়। কিন্তু তারা কোন ইসলামী বিধান মানেনি।
প্রসঙ্গত, বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পরে দলের হাল ধরেন তার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা। আর থেকেই দলের কান্ডারী হয়ে আছেন তিনি। বর্তমানে টানা তিন বার নিজের দলকে ক্ষমতার মসনদে রাখতে সক্ষম হয়েছেন তিনি।