সাম্প্রতিক সময়ে খুলনায় মরিয়ম মান্নানের মা রহিমা বেগমের নিখোঁজ হওয়া বিষয়টি দেশজুড়ে আলোচনায় উঠে আসে। নিখোঁজ হওয়ার এক মাস পর পুলিশ রহিমা বেগমকে সুস্থ এবং জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। এদিকে মরিয়ম মান্নানের মাকে জীবিত উদ্ধারের পর অপহরণের নাটক বিষয়টি সামনে আসতে শুরু করেছে। এবারে বিষয়টি নিয়ে কথা বললেন পিনাকী ভট্টাচার্য। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মরিয়ম মান্নানের মায়ের নিঁখোজ হওয়ার বিষয় নিয়ে তার একটি পোস্টটি হুবুহু তুলে ধরা হলো-
পেটে ক্ষুধা নিয়ে বাজার করতে যাবেন না। তাইলে পুরা বাজার তুলে আনার খায়েশ হবে। টেস্ট করে দেখতে পারেন। তাই আবেগাক্রান্ত থাকলে কোন সিদ্ধান্ত নেবেন না। আখেরে পস্তাবেন। আমি তো আগে অনেকবার বেলতলায় গেছি তাই একটু সমঝে চলি। আল্লাহ বাচাইছেন এইবার। মরিয়ম মান্নানের কেইস নিয়া আমি প্রথম জানি যখন আমার ইনবক্স ভাইস্যা যাইতেছিলো। রীতিমতো অনেকে অভিযোগ করতেছিলো ক্যান এইটা নিয়া লেখতেছেন না। আমি নিউজগুলা দেখলাম। মরিয়ম মান্নানের কান্নার ছবি দেখলাম। আবেগে ভাসলাম, চোখ থিকা মনে হয় দুয়েক ফোট অশ্রুও আসছিলো।
কিন্তু এইটা নিয়া কিছু লিখতে সায় দিতেছিলো না। মনে হইতেছিলো একজন মধ্য বয়ষ্কা মহিলাকে কেউ কেন অপহরন করবে? মোটিভ কী? মরিয়ম মান্নানের অভিযোগে দেখলাম জমিজমা সংক্রান্ত বিষয়ে বিরোধ ছিলো বলে কয়েকজনের নাম উল্লেখ করছে অভিযোগপত্রে। কাম অন। অপহরণ একটা হাই স্টেক এক্সপেন্সিভ ক্রিমিনাল অপারেশন। হিউজ লজিস্টিক সাপোর্ট লাগে। আপনাকে তো ভিকটিমকে লুকায়ে রাখতে হবে। মরিয়ম মান্নানেরা কী এতোই ধনী যে তাদের জমির বিরোধ মেটানোর জন্য এতো বড় হাই স্টেক ক্রিমিনাল অপারেশন করবে প্রতিপক্ষ?
এরপরে সে বললো মায়ের নিথর দেহ পাইছি। একটু তব্দা খাইলাম। আবারো আবেগ চাগায়ে উঠলো। আবার দেখলাম মৃ”তদেহের বয়স ৩০-৩২, আর সেইটারেই মরিয়ম দাবী করতেছে তার মা হিসেবে। বাংলা ট্রিবিউন একটা রিপোর্ট করছিলো, নিথর দেহটা কি মরিয়মের মায়ের? এই শিরোনামে। দ্বিতীয় খটকা লাগছে মায়ের দেহটা পাওয়া গেছে এইটা তার ভাই জানেনা। মায়ের দেহ শনাক্ত করার সময়ে ভাইয়ের সাথে কথাও বলেনি মরিয়ম।
আমি মোটামুটি শিওর হইছিলাম কেইসটা জটিল। আর এইটায় ম্যালা মিসিং লিংক আছে। কিন্তু কেন করছে মরিয়ম মান্নান আর তার মা সেইটা রহস্যজনক। প্রতিপক্ষকে ফাসানোর জন্য হতেই পারে। কিন্তু মায়ের রিএপেয়ারেন্স বা যীশুর মতো রিজারেকশনের বা পুনরুত্থানের ইস্যুকে কেমনে সামাল দিতো এইটা জানতে হবে।
পুরা জাতিকে প্রতারণা করার জন্য সাহস না লাগে নিরেট বেকুবি। এমন বেকুব আপনি ফে’ইসবুকে অনেক পাইবেন।
এখন আপনি এই ধরণের প্রতারণা থিকা কীভাবে রক্ষা পাইবেন? এইটা বলে দেয়া মুশকিল। আপনি বিশ্বাস করবেন কিন্তু কেয়ারফুলি, সময় নিয়ে। নিজের আবেগ থিতিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন। তারপর নিরাবেগ সিদ্ধান্ত নেবেন। নিজের মধ্যে প্রশ্ন তৈরি করবেন, উত্তর খুজবেন। নিজের সিদ্ধান্তকে চ্যালেইঞ্জ করবেন।
এই কেইস আদালতে উঠলে মরিয়ম মান্নান চিপা চুপা দিয়া বাইর হয়ে যাইতে পারবে। সে বেনেফিট অব ডাউট পাবে। কিন্তু মরিয়ম মান্নানের মা তার বর্তমান স্বামী যার বাসায় প্রথম রাতে ছিলো আর তারে আশ্রয় দেয়া কুদ্দুস এই তিনটার জেইল হবে আমি শিওর।
মরিয়ম মান্নান কোন চিপায় ছাড়া পাইবে এইটা আমারে জিগাইয়েন না। এইটা তার উকিল খুজে বাইর করুক। এর ফলে কী গু’ম বিরোধী লড়াই ক্ষতিগ্রস্থ হইছে? না হয় নাই। মরিয়ম মান্নান গুমের অভিযোগ করে নাই, সে নিখোজের অভিযোগ করছে। তারপরে এখন অপহরণের অভিযোগ করতেছে। নিখোজ, অপহরণ আর গুম তিনটা ভিন্ন ভিন্ন বিষয়। মরিয়ম মান্নানকে একটা ধন্যবাদ দিতেই পারেন। সে পুরা জাতিকে শিখায়ে দিয়ে গেলো কীভাবে আবেগের হেফাজত করতে হবে।
প্রসঙ্গত, ধারণা করা হচ্ছে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে প্রতিপক্ষকে ঘা’য়েল করার জন্যই এই ধরনের অপহরণ সাজানো হয়েছে। তবে এ বিষয়ে মরিয়ম মান্নানের মা কোন কিছুই বলছিলেন না পুলিশকে। তবে তিনি ঘটনার বিষয়ে মুখ খুলতে শুরু করেছেন বলে জানিয়েছেন পুলিশ সূত্র।