সাত বছর আগে কারাগারে মারা যাওয়া বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন মাহবুবের তিন বছর তিন মাসের কারাদণ্ড হয়েছে। দুই বছর আগে মারা যাওয়া আরেক নেতাকেও পৃথক মামলায় চার বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেন, গত ২৩ নভেম্বর লালবাগ থানার একটি মামলায় প্রধান মহানগর আদালতের বিচারক সামছুল ইসলাম ৫০ বিএনপি নেতা-কর্মীকে সাজা দেন। তবে ওই মামলার আসামি আনোয়ার খান। লালবাগ থানার ২৩ নং ওয়ার্ডের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হোসেন মাহবুব ২০১৬ সালে কারাগারে মারা যান। সাত বছর আগে যিনি মারা যান তিনিও কারা দন্ডে দণ্ডিত হয়েছেন। এটাই বর্তমান আইন-আদালত।
জানা যায়, নাশকতার অভিযোগে ২০১৩ সালের নভেম্বরে রাজধানীর লালবাগ থানায় মামলা করে পুলিশ। তদন্ত শেষে পুলিশ ৭৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে। ওই মামলার ৩১ নম্বর আসামি ছিলেন আনোয়ার হোসেন।
এদিকে রাজধানীর দক্ষিণখান থানায় নাশকতার মামলায় গতকাল বিএনপির ৩৮ নেতাকর্মীকে চার বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক মো. মঈনুল ইসলাম। দুই বছর আগে মারা যাওয়া বিএনপির এক নেতাও এ মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন। মামলার আইনজীবী সৈয়দ নজরুল ইসলাম জানান, মামলার ১১০ নম্বর আসামি উত্তরখান বিএনপির সাবেক সভাপতি মমতাজ উদ্দিন দুই বছর আগে মারা গেছেন। গতকাল তাকে সাজা দেওয়া হয়।
মমতাজ উদ্দিনের ছেলে জাহিদুল ইসলাম অপু সমকালকে বলেন, তার বাবা ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এরপর বিভিন্ন সময় পুলিশ কর্মকর্তারা বাবার তার খোঁজে বাড়িতে আসেন। এরপর তারা তাদের বাবার ডেথ সার্টিফিকেট তাদের দেখান। তবে বাবার মৃত্যুর পর তাকে কীভাবে শাস্তি দেওয়া হয়েছে তা তিনি বলতে পারছেন না।
এর আগে গত ২৩ নভেম্বর মারা যাওয়া বিএনপি নেতাকে পৃথক তিনটি মামলায় ১১ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। পরিবারের সদস্যরা জানান, পুরান ঢাকার বিএনপি নেতা ইমরান নাহিদ ৩৮ বছর বয়সে ২০১৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর গ্রিন লাইফ হাসপাতালে স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। গত তিন মাসে তার বিরুদ্ধে তিনটি মামলার রায় হয়েছে। এসব মামলার প্রতিটিতেই তিনি দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।
নাহিদের বড় ভাই মোহাম্মদ নাজিম জানান, নাহিদের মৃত্যুর পর আসা সব পুলিশ কর্মকর্তাকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের দেওয়া ডেথ সার্টিফিকেট ও হাসপাতালের কাগজপত্র দেওয়া হয়েছে। এরপরও গত সেপ্টেম্বরে কোতোয়ালি থানার একটি মামলায় এমএম-৪ আদালত ইমরান নাহিদকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেন। গত ১৬ নভেম্বর কোতোয়ালি থানার আরেকটি মামলায় এমএম-২৩ আদালত দুই বছরের কারাদণ্ড দেন। গত বৃহস্পতিবার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল একটি মামলায় নাহিদকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেন। নাহিদের মোট ১১ বছরের সাজা হয়েছে।
মোহাম্মদ নাজিমের আইনজীবী হারুন অর রশিদ ভূঁইয়া বলেন, বিশেষ ট্রাইব্যুনালের মামলায় ইমরান নাহিদ জামিনে নেই। তাঁর অকাল মৃত্যুর কারণে তিনি নিয়োগপ্রাপ্ত আইনজীবীও ছিলেন না বলে আদালতকে তিনি বিষয়টি জানাতে পারেননি।