মমতাজ হলেন বাংলাদেশের একজন খুব জনপ্রিয় কন্ঠশিল্পী। তিনি তার কোকিল সুরের কন্ঠে গান শুনিয়ে বাংলার মানুষকে করেছেন মাতোহারা। তার কন্ঠ খুবই সুমিষ্ঠ। তার কর্মজীবনে ৭০০ এর অধিক গান গেয়েছেন। এই মহান কন্ঠশিল্পী মানিকগঞ্জ-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। সম্প্রতি জানা গেছে মমতাজের উপর গ্রেফতারি পরোয়ানা স্থগিত হয়েছে।
আদালতে আত্মসমর্পণ করার শর্তে বাংলাদেশি গায়িকা ও সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমের গ্রেফতারি পরোয়ানার ওপর অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। একই সঙ্গে বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি সিদ্ধার্থ রায় চৌধুরীর ডিভিশন বেঞ্চ গায়িকাকে নিম্ন আদালতে মূল মামলার বিচারে অংশ নেওয়ার নির্দেশ দেন।
আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে হাইকোর্টের দেওয়া অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশে তিনি অন্য কোনো কারণে দেশে প্রবেশ করতে পারবেন না বলেও জানিয়েছে আদালত। জনপ্রিয় বাংলা গান ‘খায়রুন লো… তোর লম্বা মাথার কেশ’ বা ‘নান্টু ঘটক কথা শুইন্যা’-এর গায়ক মমতাজের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল আদালত।
জানা যায়, প্রায় চৌদ্দ বছর আগেও তিনি ভারতের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিতেন। গায়ক ২০০৪ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গান গাওয়ার জন্য শক্তিশঙ্কর বাগচীর সাথে একটি লিখিত চুক্তি করেছিলেন। একইভাবে, ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে, বেহরামপুরের একটি অনুষ্ঠানে, উদ্যোক্তারা মমতাজকে প্রধান শিল্পী হিসাবে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু টাকা নিয়েও অনুষ্ঠানে আসেননি গায়ক। যথারীতি অনুষ্ঠানস্থল ভাংচুর করা হয়। অনুষ্ঠানের আয়োজক শক্তিশঙ্কর বাগচীকে চরম হয়রানির মুখে পড়তে হয়েছে। পরে মমতাজ টাকা ফেরত দিতে অস্বীকার করেন। শক্তি তখন চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগে স্থানীয় থানায় যান। কিন্তু পুলিশ অভিযোগ মানতে রাজি হয়নি। শক্তিকে বহরমপুর আদালতে যেতে বাধ্য করা হয়। তিনি বিশ্বাসভঙ্গ ও প্রতারণাসহ বিভিন্ন ধারায় মমতাজের বিরুদ্ধে মামলাও করেন। একই ভিত্তিতে ২০০৯ সালে মমতাজের বিরুদ্ধে সমন জারি করেছিল আদালত। পরে সমন কার্যকর না করায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। এদিকে নিম্ন আদালত থেকে আগাম জামিনে বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন গায়ক। নিম্ন আদালতের আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে শক্তি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। ২০১০ সালে, হাইকোর্ট নিম্ন আদালতের আদেশ প্রত্যাখ্যান করে এবং মমতাজের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
হাইকোর্টে মুমতাজের আইনজীবীরা আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে মুর্শিদাবাদ আদালতে আত্মসমর্পণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আদালতের নির্দেশে তিনি বিচারিক প্রক্রিয়ায়ও অংশ নেবেন। তাঁর দৃষ্টিতে, হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ বলেছে যে তিনি যদি প্রতিশ্রুতি অনুসারে আত্মসমর্পণ না করেন তবে মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশ সুপার মামলার যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন।
হাইকোর্টে শক্তি শংকরের অভিযোগ, বাংলাদেশি গায়ককে গ্রেপ্তার করে এদেশে প্রবেশ করতে না দেওয়ায় এদেশের আইন ও বিচার ব্যবস্থা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পরও সে তার পাসপোর্টে নাম পরিবর্তন করে এদেশে পুলিশের নাকের ডগায় ঘুরে বেড়াচ্ছে।
প্রসঙ্গত, মমতাজ বাংলাদেশের অন্যতম একজন কন্ঠশিল্পী। গান দিয়ে মানুষের মন জয় করার পাশাপাশি তিনি এখন জনতার নেত্রী সাধারণ মানুষের সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। মানিকগঞ্জের মানুষ তাকে নেত্রী হিসেবে পেয়ে অনেক খুশি। তাই তারা তাদের ভালোবাসা দিয়ে মমতাজকে নির্বাচিত করেছেন।