ইলিয়াস কাঞ্চন বাংলাদেশের সিনেমা জগতের একটা সময়ের সব থেকে বড় নাম ছিল এটা। দীর্ঘ দিন ধরেই বাংলাদেশের সিনেমায় কাজ করে গেছেন তিনি সফলতার সাথে। একের পর এক সিনেমা দিয়ে দর্শকের ভালোবাসা জিতেছেন তিনি। সেই সাথে সড়ক আন্দোলনের বিভিন্ন কর্মকান্ডে নিয়োজিত থাকেন। এ ছাড়া তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির বর্তমান সভাপতি। সম্প্রতি মন্ত্রী হওয়া নাকি রাজনীতি নিয়ে নানা প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন জনপ্রিয় এই নায়ক।
ইলিয়াস কাঞ্চন সাংবাদিকদের এক সাক্ষাৎকারে বলেন, মন্ত্রিত্ব দিলে তার পূর্ণ ক্ষমতা ব্যবহার করতে হবে। অনেক মন্ত্রী আছেন কিন্তু পূর্ণ ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারেন না।
রাজনীতিতে আসতে চান কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, অবশ্যই রাজনীতি করতে চাই। কারণ, দেশের মানুষের জন্য আমি যা করতে চাই তা করতে পারছি না। দেখলাম একটাই জায়গা আছে ‘রাজনীতি’। তা ছাড়া রাষ্ট্র ও দেশের পরিবর্তন সম্ভব নয়। রাজনীতি অবশ্যই প্রয়োজন। তবে কোন এলাকা থেকে তা এই মুহূর্তে বলতে চাই না। এই সব আমার চিন্তা।
তিনি আরও বলেন, এর আগে এমপি হওয়ার অনেক আলোচনা ছিল। একজন এমপি কী করতে পারেন, এমপিরা কী করেন, তার কী ক্ষমতা আছে। জনগণের আশা-আকাঙ্খা পূরণ করতে না পারলে আমি এমপি হতে চাই না। সোশ্যাল মিডিয়ায় লক্ষ লক্ষ মানুষ আমাকে কী চায় তা কি আপনি দেখতে পাচ্ছেন না? এখন ভাবতে হবে, এমন কিছু শিল্পী আছেন যাদেরকে আমরা আজীবন সদস্যপদ দিয়েছি। এখন সিনিয়র শিল্পী যারা আছেন সুচন্দা ম্যাডাম, ববিতা ম্যাডাম, ফারুক ভাই, এ ছাড়া আমাদের সোহেল ভাই আছেন। এখন যদি তারা তাদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে নেতৃত্ব দিতে চায়, তাহলে অবশ্যই আমরা তাদের সম্মানের সাথে গ্রহণ করব।
আমার ইচ্ছা এই যে, আমি যদি সেই অভাব, সেই আকাঙ্ক্ষা, যেটা মানুষ আমার কাছ থেকে চায় সেটা প্রতিফলিত করতে পারি, তাহলে একটা কাজের দায়িত্ব নিতে পারি। আমি শিল্পী সমিতিতে আসতে না চাওয়ায় সবাই আমাকে জোর করে। এই আট মাসে আমি কিছু করতে পারিনি, বলুন তো? নেতৃত্বের জায়গা পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমি কিছুই করতে পারব না।
সড়ক আন্দোলনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সড়ক চলাচলে অবশ্যই ঘাটতি রয়েছে। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সরকারের সদিচ্ছা ও পরিকল্পনা থাকতে হবে। সরকারকে কাজ করতে হবে, সরকারকে যুগোপযোগী আইন করতে হবে, সেগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে। সরকারের উচিত রাস্তা নির্মাণ করা। তাকে নিশ্চিত করতে হবে রাস্তায় যেন অযোগ্য যানবাহন না চলে। আর যারা রাস্তা ব্যবহার করেন, তাদের সঠিক নিয়ম-কানুন শেখাতে হবে। এসব কাজ সরকারকেই করতে হবে। সরকার যদি সবকিছু ঠিকঠাক না করে, তাহলে আমরা যারা সোশ্যাল মিডিয়ায় কাজ করি তারা কী করতে পারি? আমি সর্বোচ্চ ছাত্রদের বোঝাতে পারি। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সদিচ্ছা প্রয়োজন। সড়কমন্ত্রীর সঙ্গে বহুবার কথা বলেছি। তিনি বলেন, অনেকেই অসহায়, বুঝতেই পারছেন কে অসহায়। আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার এখনো বন্ধ হয়নি। আমি যে টার্মিনালে ড্রাইভারদের প্রশিক্ষণ দিতাম সেখানে আমাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছিল। আমি এখনও সেখানে যেতে পারছি না।
প্রসঙ্গত, গেলো শিল্পী সমিতি নির্বাচনে তিনি জিতেছেন। আর জেতার পরেই দায়িত্ব গ্রহণ করেন শিল্পী সমিতির সভাপতি হিসেবে। এ ছাড়াও নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলন চালিয়ে আসছেন দীর্ঘ এক দশকের বেশি সময় ধরে।