দুই পুত্রের ঘটনায় ভারতে আ’লো/ড়ন সৃষ্টি হয়েছে। প্রথম যে জন সে হলো বলিউড কিং শাহরুখ খানের পূত্র আরিয়ান খান, যিনি গত রবিবার প্রমোদ তরীর একটি পার্টিতে নিষিদ্ধ দ্রব্যের অভিযোগে আট’ক হন। দ্বিতীয় জন হলেন একই দেশের আশিস মিশ্রা যিনি জুনিয়র স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পূত্র, যার বিরু’দ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে, তিনি আ’/ন্দো’/লনরত কৃষকদের উপর তার গাড়ি তুলে দিয়েছে, যে ঘটনায় আ’/হ’/ত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে বলে খবর পাওয়া যায়।
আরিয়ান এবং আশিস দুজনেই তাদের প্রতি যে অভিযোগ আনা হয়েছে সেটা অস্বীকার করেছেন।
দুটি ঘটনার মধ্যে কোন সম্পর্ক নেই। কিন্তু দুই যুবকের প্রতি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার আচরণ এবং আরিয়ান খানের ক্ষেত্রে মিডিয়ার বিপুল আকর্ষণ মিডিয়ার এজেন্ডা নিয়ে অনেকের মনে প্রশ্ন তুলেছে। অনেকেই মিডিয়াকে বলিউডকে ক’ল/ঙ্কিত করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন।
ভারতের ড্রা’/গ কন্ট্রোল ডিপার্টমেন্টের নারকোটিকস কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি) আরও বেশ কয়েকজন সহ আরিয়ানকে গ্রে’ফ’তার করেছে। ‘অ’বৈধ নিষিদ্ধ দ্রব্য বহন, ব্যবহার ও পাচা’র’ আইনের অধীনে তাদের আ’ট/ক করা হয়। আরিয়ান খান (২৩) কে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য চলমান মাসের আগামি ৭ তারিখ পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রি’মান্ডে পাঠানো হয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, আরিয়ানের গ্রে’/ফ’তার সংক্রান্ত কাগজে যে পরিমাণ নিষিদ্ধ দ্রব্যের কথা বলা হয়েছে তাতে তাকে জা’মিন না দেয়ার কোনো কারণ নেই। তার আইনজীবী সাতিশ মানশিন্ডে জো’/রালোভাবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। জামি’ন শু’নানিতে তিনি ম্যাজিস্ট্রেটকে বলেন, আরিয়ান খানকে ‘জাহাজে ওঠার আগে দুইবার ত’ল্লা’শি করা হয়েছে’ এবং ‘সেখানে কোনো নিষিদ্ধ বস্তু মেলেনি’ এবং ‘তিনি যে নিষিদ্ধ দ্রব্য সেবন করেছেন এমন কোনো প্রমাণ নেই’।
বি’ক্ষো’/ভ, গাড়ি তুলে দেয়া ও মৃ’/’ত্যু
দ্বিতীয় ঘটনাটিতে জড়িত আশিস মিশ্রা, যিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মন্ত্রিসভার সদস্য অজয় মিশ্রার ছেলে। উত্তর প্রদেশের লাখিমপুর এলাকায় একদল কৃষকদের ওপর একটা গাড়ির বহর থেকে গাড়ি তুলে দেয়ার অভিযোগ তার বিরু’দ্ধে।
সব মিলিয়ে আটজন মা’/’রা গেছেন এই ঘটনাপ্রবাহে। কৃষকদের ইউনিয়ন বলছে, গাড়িচাপায় দু’জন বি/ক্ষো’/ভকারী ঘটনাস্থলেই মা’/রা গেছেন। আরো দুজন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর মা’/রা গেছেন। এছাড়া বি’ক্ষো’/ভকারীদের পি’/টু’/নীতে মা’/রা গেছেন তিনজন বিজেপি কর্মী ও একজন গাড়িচালক।
প্রাথমিক খবরে বলা হয়, আশিস মিশ্রা বলেছেন উ/ত্তে’জিত কৃষকদের পিটুনীর হাত থেকে রে’হাই পেতে ক্ষেতের ভেতর দিয়ে পা’/লিয়ে যান তিনি। পরে আবার তিনি বলেন, ঘটনার সময় তিনি গাড়িতেই ছিলেন না। তার বাবাও তার এই দা’বিকে সমর্থন করেন।
/
বিরো’ধী দল ও কৃষকদের সংগঠনগুলোর প্রতি’বাদের পরে সোমবার সকালে পিতা ও পুত্রের বিরু’দ্ধে অভিযোগ এনে পু’/লি/শ একটা তদন্ত শুরু করে। উত্তর প্রদেশ পু’/লি’/শের একজন সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তা ভিক্রাম সিং বলেছেন, ‘অভিযোগ দাখিল করতে পু’/লি’/শ যে অবহেলা দেখিয়েছে ও সময় নষ্ট করেছে তা ক্ষমার অযোগ্য।’ তিনি বলেন, ‘লাখিমপুরে প্রা’ণহা/’নি হয়েছে যা অনেক বেশি শো’কের, কিন্তু আরিয়ান খানের গ্রেফ’তারের খবরই সব প্রচারের আলো কে’/ড়ে নিয়েছে।’
মিডিয়া কভারেজ
রোববার দিনভর কিছু টিভি চ্যানেল খান পরিবারের ক’ঠিন পরীক্ষা নিয়েছে। আরিয়ান খানকে পু’/লি’/শী হেফা’জতে নেয়ার পুরো ঘটনার ছবি তোলা হয়েছে এবং ভিডিও করা হয়েছে। তার ‘অ্যারেস্ট মেমো’ টিভিতে দেখানো হয়েছে এবং হোয়াটস্যাপেও শেয়ার করা হয়েছে ব্যাপকভাবে।
আরিয়ানের এই গ্রে’ফতারকে ‘আমোদ পার্টি থেকে গুরুত্বপূর্ণ গ্রেফ’তার’ বলে অভিহিত করেন একজন সংবাদ উপস্থাপক। আরেকজন উপস্থাপক দাবি করেন ‘বলিউডের সাথে নিষিদ্ধ দ্রব্যের সংশ্লিষ্টতার’ অবসান হোক। এসব চ্যানেলে আলোচকরা আরিয়ান খানের বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ ছাড়াই নানা দায় চা’পান। একইসাথে শাহরুখ খান ও গৌরী খানের সন্তান প্রতিপালনের মান নিয়েও সমালোচনা করেন।
টুইটারে দিনভর আরিয়ান খানের নাম ট্রেন্ড করেছে, অর্থাৎ সবচেয়ে বেশি আলোচিত হয়েছে। BollywoodDruggies ও BollyDruggiesShamingNation শীর্ষক হ্যাশট্যাগও ছিল ট্রেন্ডিং। কিন্তু ঘটনার লাখিমপুরের ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পরও মিশ্রাদের কাউকেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পর্যন্ত থা’/নায় ডাকা হয়নি। টিভি চ্যানেলগুলোও ছিল এ ব্যাপারে নিরব।
নামকরা টেলিভিশন উপস্থাপকেরা মিশ্রার গ্রে’ফতার দাবি থেকে নিজেদের বিরত রেখেছে। কেউ কেউ এমনকি এসব মৃ’/ত্যু ও স’/হিং’/সতার জন্য কৃষকদের ওপর দো’ষ চাপি’য়ে দিয়েছেন (যে কৃষকেরা এক বছর ধরে ভারতের নতুন তিনটি আইনের বিরুদ্ধে আ’/ন্দো’লন করছেন। সোমবার সকালে টুইটাটরে একমাত্র যে হ্যাশট্যাগটি ট্রেন্ড করছিল সেটির বিষয়বস্তু ছিল উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ইয়োগি আদিত্যনাথ ‘কৃষক ও বি’ক্ষো’/ভকারীদের লা’ঠিপে’/টা করেছেন’।
‘তারকাপুত্র’ বনাম অচেনা মন্ত্রীপুত্র
সাবেক সাংবাদিক জন থমাস বলেন, নিষিদ্ধ দ্রব্যের পার্টি থেকে গ্রেফ’তা/রের ঘটনার খবর ছিল, “সবার ওপরে”, কিন্তু এটা ‘আমাদের চটকদার ও ক্লিক প্রত্যাশি সাংবাদিকতায় কাঙ্ক্ষিত ঘটনা ছিল’। তিনি বলেন, ‘তারকাপুত্রের তারকাখ্যাতি নিয়ে টিভি ও সংবাদপ্রের ভোক্তাদের আগ্রহই এর পেছনে কারণ বলে অনুমিত।’
‘অন্যদিকে রাজনীতিবিদের ছেলে, যিনি দেশজুড়ে বলতে গেলে প্রায় অচেনা, এবং যার পিতাও তেমন চেনাজানা কেউ নন। মোদি সরকারের একজন জুনিয়র মিনিস্টারকে কে চিনবে?’ পু’/লি’শের সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তা ভিক্রাম সিং বলেছেন, এমন উপর্যুপরি কভারেজের পেছনে বলিউডকে কল’ঙ্কিত করার ‘একটা গো/প’ন এজেন্ডা ও কু’টিল পরিকল্পনা’ কাজ করেছে।
“আরিয়ান খানকে আ’টকের পর তার কাছে পাওয়া নিষিদ্ধ দ্রব্যের তালিকা দেখে, এটা স্পষ্ট যে তার কাছে নিষিদ্ধ দ্রব্যের পরিমাণ খুব কমই ছিল, কিন্তু এটি তার অর্থাৎ কিং খানের পরিবারের সম্মানকে কল’ঙ্কিত করার দিকেই ধা’বিত হয়েছে।” এটা বিবেচনায় আনলে বলা যায় সে এটা জা’মিন পাওয়ার যোগ্যর মতোই অপ’রাধ। তাহলে কেন এনসিবি তাকে রি’মা/ন্ডে নেওয়ার জন্য আবেদন করলো? ’প্রশ্ন করলেন বিক্রম সিং।
‘অভিযুক্ত হয়েছেন তিনি কিন্তু তার পরিচয় মিডিয়ার সামনে আনা উচিত ছিল না। এবং তার প্রতিটা পদক্ষেপ অনুসরণ করার যে বিষয়টি সেটার প্রতিবেদন প্রকাশ করার অনুমতি প্রদান করাও কোনোভাবে উচিত ছিল না। তার মতো অনেক তরুন এবং যুবকেরা এই ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে চলেছে, যেটা ভিক্রম সিংয়ের দৃষ্টিতে মানবিক বিপ,র্যয় হিসেবেই দেখছেন। তিনি কর্তৃপক্ষকে “সংবেদনশীল” হওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। ‘মাদক নির্মূলের বিষয়টি কখনও সম্ভব নয়। অতএব, মাদকাসক্তদের মাদক নিরাময় চিকিৎসা কেন্দ্রে পাঠানোর মাধ্যমে তাদের পুনর্বাসন করতে হবে যার মাধ্যমে মাদকের অপব্যবহার মোকাবেলা করতে হবে। ‘
খবর বিবিসির।