Sunday , November 10 2024
Breaking News
Home / Countrywide / মনজুরকে সরিয়ে সরকার বুঝিয়ে দিলো দেশে বাক্‌স্বাধীনতা নেই: সুলতানা কামাল

মনজুরকে সরিয়ে সরকার বুঝিয়ে দিলো দেশে বাক্‌স্বাধীনতা নেই: সুলতানা কামাল

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারপারসন মানবাধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল বলেছেন, নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান মনজুর আহমেদকে অপসারণ করে সরকার দেশে বাকস্বাধীনতা নেই বলে বার্তা দিচ্ছে। শুক্রবার আজকের পত্রিকাকে তিনি এ কথা বলেন।

সুলতানা কামাল বলেন, নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যানকে অপসারণ করে সরকার বার্তা দিচ্ছে যে বাংলাদেশে বাকস্বাধীনতা নেই। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্সের কথাও একটি খালি বক্তব্য। আসলে সরকার চায় না দুর্নীতি দমন হোক। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশে দুর্নীতি বেড়েছে। মঞ্জুরের ঘটনা এরকম আরেকটি নজির সৃষ্টি করেছে।

টিআইবির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন আজকার পত্রিকাকে বলেন, কোনো জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে তদন্তসাপেক্ষে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের দায় তাঁর থাকা উচিত। জনপ্রতিনিধিরা সময়ে সময়ে তাদের সম্পদের হিসাব দেবেন বলে জানানো হয়েছিল। সেই প্রতিশ্রুতিও তারা ভঙ্গ করেছে।কোন সম্পত্তি নিয়ে তাঁরা ক্ষমতায় যান, কোন সম্পত্তি নিয়ে বেরিয়ে আসেন, সেটাওতো আমরা টের পাই না।

এর আগে আজ গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান মনজুর আহমেদকে অপসারণে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানায় টিআইবি।

এক বিবৃতিতে সংগঠনটি দাবি করেছে, এই পদক্ষেপ নদী রক্ষায় সরকারের প্রতিশ্রুতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। নদী ছাড়া প্রভাবশালী দখলদারদের স্বার্থ রক্ষায় মনজুর আহমেদ চৌধুরীকে অপসারণ করা হয়েছে।

কমিশনের চেয়ারম্যানকে অপসারণের ক্ষমতা সরকারের হাতে থাকলেও এই ক্ষমতাকে এভাবে ব্যবহার করে সরকার যে বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করছে তা উদ্বেগের কারণ বলে মনে করছে টিআইবি। সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মো. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন কার্যত অকার্যকর হয়ে পড়েছে। কমিশন শুধু সরকারকে পরামর্শ দিতে পারে। তাদের দখলদার ও দূষণকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা নেই। কমিশনের রিপোর্ট বা পরামর্শ মেনে চলার বাধ্যবাধকতা নেই।

বিবৃতিতে বলা হয়,এতসব ‘নেই’ এর মাঝে সম্প্রতি দেশবাসী কিছুটা আশাবাদী হওয়ার সুযোগ পেয়েছিল সদ্য সাবেক চেয়ারম্যানের সাহসী অবস্থানের কারণে। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘নদী দখল, ধ্বংস, দূষণ কারা করছে তা অন্তত আমরা জানতে পারতাম। জনমত গড়ে উঠছিল, নদী রক্ষার আন্দোলন জোরদার হচ্ছিল। কিন্তু কমিশনের চেয়ারম্যানের নিয়োগ বাতিল করে সরকার দোষীদের নিয়ন্ত্রণ করতে চায় এবং দোষী সাব্যস্ত করার ক্ষমতা জোরদার করেছে। জনস্বার্থে তার চাকরির চুক্তি বাতিল করা হয়েছে বলে জানা গেছে। তাহলে ক্ষমতাবানদের স্বার্থ রক্ষা করা কি এখন জনস্বার্থ বলে বিবেচিত হয়? নদী ছাড়া প্রভাবশালী দখলদারদের স্বার্থ রক্ষায় কমিশনের কাজ কী?

গত বুধবার (১৮ অক্টোবর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে মেয়াদ শেষ হওয়ার দেড় বছর আগে মনজুর আহমেদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করা হয়। এর পেছনে প্রভাবশালীদের হাত রয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। কারণ ২৪ সেপ্টেম্বর বিশ্ব নদী দিবস উপলক্ষে মনজুর আহমেদ সরাসরি নাম উল্লেখ না করে বলেন, চাঁদপুরের এক নারী মন্ত্রী নদী দখলে সহায়তা করেছেন।

তিনি বলেন, মেঘনা নদী থেকে যারা অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে তাদের সঙ্গে চাঁদপুরের এক নারী মন্ত্রীর সম্পর্ক রয়েছে। মেঘনা নদী থেকে নির্বিচারে বালু উত্তোলনকে হায়েনার সঙ্গে তুলনা করে মনজুর আহমেদ বলেন, তাদের হাত থেকে নদীকে রক্ষা করা যাবে না।

এর আগে ২০২২ সালে বিশ্ব নদী দিবসে তিনি বলেছিলেন, ঢাকার খাল ও আশেপাশের নদী রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়ায় ডিএনসিসির মেয়র ও ঢাকা ওয়াসার এমডিকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের (মোবাইল কোর্ট) মাধ্যমে বিচার করে কারাগারে পাঠানো উচিত।

About Nasimul Islam

Check Also

গুলিস্তানে হামলার পরিকল্পনা: ১ ব্যাক্তিকে আটকের পর বেরিয়ে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য

রাজধানীর গুলিস্তানে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে একজন ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। শনিবার (৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় স্থানীয় …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *