ভাইরাল শিক্ষিকা ও ছাত্রের বিয়ে নিয়ে এতদিন হয়েছে নানা ধরনের আলোচনা। এবার শেষ হয়ে গেছে সব। জানা গেছে সেই শিক্ষিকার আর নেই দুনিয়াতে। নিজেই নিজেকে শেষ করে দিয়েছেন বলে ধারনা করা হচ্ছে প্রাথমিক পর্যায়ে।
নাটোরে কলেজছাত্রীকে বিয়ে করে ভাইরাল হওয়া সহকারী অধ্যাপক খায়রুন নাহারের ঝুলন্ত লা’শ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার ভোররাতে নাটোর শহরের বল্লারীপাড়ায় ভাড়া বাসা থেকে তার লা’শ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নাহারের কলেজ ছাত্রী স্বামী মামুনকে আটক করেছে পুলিশ।
নাটোরের বালারপাড়ায় হাজী নান্নু মোল্লা ম্যানশনের চতুর্থ তলায় থাকতেন মামুন-নাহার দম্পতি।
নিহত খায়রুন নাহার গুরুদাসপুর উপজেলার খুবজীপুর মোজাম্মেল হক ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক ছিলেন। তিনি উপজেলার চাঁচকোড পৌর এলাকার মো. খায়ের উদ্দিনের মেয়ে মো. মামুন হোসেন একই উপজেলার ধারাবাড়িশা ইউনিয়নের পাটপাড়া গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে ও নাটোরের নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা সরকারি কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।
ভবনের বাসিন্দা ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রোববার সকালে স্বামী মামুন ভবনের অন্য বাসিন্দাদের জানান, গত রাতে তার স্ত্রী খায়রুন নাহার গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। লোকজন তার বাড়িতে গিয়ে খায়রুন নাহারের লাশ মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখে সন্দেহ হয়। তারা মামুনকে ঘরের মধ্যে তালা দিয়ে পুলিশে খবর দেয়।
এর আগে গত বছরের ১২ ডিসেম্বর ছয় মাসের প্রেমের পর স্বামীকে তালাক দেওয়া ছেলের মা খায়রুন নাহার কাজী অফিসে গিয়ে মামুনকে গোপনে বিয়ে করেন। বিয়ের ৬ মাস পর গত জুলাই মাসে ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক শিক্ষকের সঙ্গে ছাত্রীর বিয়ে নিয়ে দেশ-বিদেশের সচেতন মানুষ হাজারো মন্তব্য করেছেন।
কিন্তু তখন বর ছাত্র মামুন জোর গলায় বলতে থাকেন- ভালোবাসার কোনো বয়স নেই, মন্তব্য কখনো গন্তব্যে পৌঁছাতে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। তার বক্তব্যও ভাইরাল হয়ে যায় দেশজুড়ে। জীবনের শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত একসঙ্গে থাকার অঙ্গীকার করা এই ছাত্র-শিক্ষক দম্পতি বিয়ের মাত্র আট মাসের মাথায় তাদের প্রেমের ইতি টানেন।
নাটোর থানার ওসি মো. নাছিম আহমেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, তারা বিষয়টি তদন্ত শুরু করেছেন। সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরাও তদন্ত করবেন। তদন্ত ও ময়নাতদন্তের পর নিশ্চিত হওয়া যাবে এটি হত্যা নাকি আ’ত্মহত্যা। তবে এটি হত্যা নাকি আ’ত্মহত্যা তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।
আগে শিক্ষক মুছে ফেলুন। খায়রুন নাহার জানান, আগের স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। দিনের পর দিন ওষুধ খেয়ে ঘুমাতেন। এদিকে কলেজ ছাত্র মামুনের সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয় হয়। মামুনের সঙ্গে কথা বলে শান্তি অনুভব করেন তিনি। পরে গত বছরের ১২ ডিসেম্বর ছেলের পরিবার কাউকে না জানিয়ে বিয়ে মেনে নিলেও মেয়ের পরিবার বিয়ে মেনে নেয়নি। তাই তারা নাটোর শহরে ভাড়া বাসায় থাকতেন।
এ দিকে এই ঘটনায় ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে বয়সে ছোট সেই মামুনকে। তাকে নিয়ে এখন নানাবিধ জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তিনি কোন ভাবে এই ঘটনার পেছনে দায়ী কি না তা দেখা হচ্ছে খতিয়ে।