মার্কিন পুলিশ যাদের নাম রয়েছে বিশ্বজোড়া। তবে এই মার্কিন পুলিশ এরই একটি ভিডিও প্রকাশ পেয়েছে সম্প্রতি যা হয়রান করে দিয়েছে সারা বিশ্ববাসীকে। যুক্তরাষ্ট্রের মিসিসিপি অঙ্গরাজ্যের মেমফিসে টায়ার নিকোলস নামের এক কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তির ওপর পুলিশের বর্বরতার একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে।
৭ জানুয়ারী ৫ পুলিশ অফিসার দ্বারা নিকোলসকে নির্যাতন করা হয়েছিল। তিন দিন পরে তিনি হাসপাতালে মারা যান। ভিডিওতে দেখা যায়, নির্যাতনের সময় তিনি ‘মামা মা’ বলে কাঁদছিলেন। চিৎকার-কান্নার পরও দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতন করা হয়।
২৯ বছর বয়সী নিকোলসকে ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনের জন্য পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল। কিছুক্ষণ কথা বলার পর তিনি ভয়ে দৌড়ে গেলে পুলিশ সদস্যরা তাকে ধরে বেধড়ক নির্যাতন করে। তারা তাকে কয়েকবার লাথি ও ঘুষি মারে।
ভিডিওটি দেখার পর প্রেসিডেন্ট জো বিডেন বলেছেন যে তিনি এই “ভয়ানক ভিডিও” দেখে “গভীরভাবে দুঃখিত”।
পুলিশ প্রাথমিকভাবে বলেছে, বেপরোয়া গাড়ি চালানোর জন্য নিকলসকে টেনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যে ৫ পুলিশ সদস্য নিকোলসকে নির্যাতন করেছিল তারাও কালো।
মেমফিস পুলিশ মোট চারটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। প্রথম ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে পুলিশ নিকোলসকে গাড়ি থেকে নেমে মাটিতে শুতে বলছে। এ সময় নিকোলস বলেন, আমি কিছুই করিনি। এ সময় একজন কর্মকর্তা চিৎকার করে বলেন, মাটিতে শুয়ে পড়। অন্য একজন অফিসার নিকোলসকে টেজার দিয়ে বৈদ্যুতিক শক দিতে বললেন।
আরেকজন অফিসারকে চিৎকার করে বলতে শোনা যায়, ‘আমি তোমার হাত ভাঙার আগে তোমার হাত ফিরিয়ে দাও।’
পুলিশের এমন আচরণে ভয় পেয়েছিলেন নিকলস। তারপর বললেন, তুমি এখন বাড়াবাড়ি করছ। আমি বাড়ি যাওয়ার চেষ্টা করছি।’
সেই মুহুর্তে নিকোলসকে বৈদ্যুতিক শক দেওয়া হয় এবং তিনি দৌড়ে যান।
এরপর সিসিটিভি ক্যামেরায় ধারণ করা একটি ভিডিওতে দেখা যায় তাদের নিকলসকে মারধর করা হয়েছে। তার মুখে মরিচের গুঁড়া ছিটানো হচ্ছে। মাথায় ঘুষি মেরে।
এরই মধ্যে এ ঘটনায় অভিযুক্ত পাঁচ পুলিশ সদস্যকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।
নির্যাতনের ভিডিও প্রকাশের পর, নিকোলসের মা বলেছিলেন যে তার ছেলেকে বাড়ি থেকে মাত্র 230 ফুট দূরে হত্যা করা হয়েছিল।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, নিকোলসের চার বছরের একটি ছেলে রয়েছে।
প্রসঙ্গত, এ দিকে এই ঘটনাটির ভিডিও প্রকাশ পাওয়ার পর থেকেই সবাই মেতে উঠেছে মার্কিন পুলিশের সমালোচনায়। বিশেষ করে এমন একটি ঘটনা জন্ম দিয়েছে তারা যা মানুষের উপর বেশ বিরূপ প্রভাব বিস্তার করবে বলে অনেকের ধারণা।