কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় দীর্ঘ চার দশক বিনা বেতনে ইমামতি করা মাওলানা মো. সিরাজুল ইসলাম (৭৬) ওমরাহ পালনের সময় মক্কায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। তিনি পাকুন্দিয়া উপজেলার জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের মধ্য তারাকান্দি গ্রামের বাসিন্দা এবং তারাকান্দি আকন্দ বাড়ির জামে মসজিদের ইমাম ছিলেন।
মাওলানা সিরাজুল ইসলাম ৪৮ বছর ধরে ইমামতির দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০২২ সালের মার্চ মাসে, ৭৫ বছর বয়সে অবসর নেওয়ার পর গ্রামবাসীরা তাকে সংবর্ধনা প্রদান করেন। তার দীর্ঘ কর্মজীবনের স্মৃতিস্বরূপ গ্রামবাসী তাকে জমকালো বিদায় দেন এবং যুবকেরা মোটরসাইকেল বহরে করে তাকে বাড়ি পৌঁছে দেন।
তার ছোট ছেলে আকিকুল ইসলাম জানান, গত ১৫ সেপ্টেম্বর (রোববার) বাংলাদেশ সময় সকাল সোয়া ৯টায় মক্কায় রাস্তা পার হওয়ার সময় দুর্ঘটনার শিকার হন তার বাবা। পাসপোর্ট ও ভিসা সঙ্গে না থাকায় তাৎক্ষণিকভাবে তার পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। পরে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে আঙুলের ছাপের মাধ্যমে পরিচয় নিশ্চিত করে পুলিশ, যা বৃহস্পতিবার পরিবারের কাছে জানানো হয়।
নিহতের ভাই আব্দুল ওয়াদুদ মাস্টার বলেন, ওমরাহ পালন করতে গিয়ে ভাই কাফেলা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন। ভিসা ও পাসপোর্ট না থাকায় মৃত্যুর খবর পরিবারের কাছে পৌঁছাতে চার দিন লেগে যায়।
জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান তৌফিকুল ইসলাম জানান, মাওলানা সিরাজুল ইসলাম অত্যন্ত ধার্মিক ও সম্মানিত ব্যক্তি ছিলেন। নবীর দেশে ওমরাহ করতে গিয়ে তার মৃত্যু হওয়াকে আল্লাহর ইচ্ছা হিসেবে মেনে নেওয়া হচ্ছে এবং তাকে জান্নাতুল ফেরদাউসে স্থান দেওয়ার জন্য দোয়া করা হচ্ছে।
মাওলানা সিরাজুল ইসলাম তারাকান্দি ঈদগাহ মাঠের ইমাম, পাকুন্দিয়ার চরফরাদি দাখিল মাদ্রাসার সাবেক সুপার এবং তারাকান্দি সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার গভর্নিং বডির সভাপতি ছিলেন।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, আগামী সোমবার মক্কার জান্নাতুল মুয়াল্লা কবরস্থানে তার মরদেহ দাফন করা হবে। তিনি স্ত্রী, তিন ছেলে, পাঁচ মেয়ে ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।