বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া রোগে সংকটের পর যুদ্ধ স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম রাশিয়া-ইউক্রেনের কারণে জ্বালানি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সাময়িক মূল্যবৃদ্ধির কথা উল্লেখ করে সংকট মোকাবিলায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
বুধবার (১০ আগস্ট) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরাম আয়োজিত ‘নিত্যপণ্য ও জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি: জনজীবনে চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
মন্ত্রী বলেন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ চলছে। এই যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্ব এখন উত্তাল। অর্থনীতি, সামাজিক অবস্থা, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসসহ সবকিছুতেই মানুষ ভীত। এখন আবার তাইওয়ান-চীন উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। তবে এর প্রভাব পড়বে বিশ্বব্যাপী। ভবিষ্যতে কী ঘটবে তা অনুমান করা কঠিন।
মোঃ তাজুল ইসলাম বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিশ্বের অনেক দেশ গ্যাস ও জ্বালানির জন্য রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীল। জ্বালানি উৎপাদনে ভেনেজুয়েলা প্রথম, সৌদি আরব ও রাশিয়া তৃতীয় অবস্থানে। যুদ্ধের কারণে এসব দেশ তেল সরবরাহ করতে না পারায় সারা বিশ্বে দাম বেড়ে যায়। আমাদের দেশের বাইরে নয়।
মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা কখনোই চান না দেশের মানুষ কষ্ট করুক। জাতির পিতা দেশ স্বাধীন করেছিলেন, সে লক্ষ্য পূরণে এদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা। তিনি আরও বলেন, খাবার ছাড়া গ্রামবাসী নেই। প্রতিটি মানুষ খেতে পারে। প্রত্যেক মানুষের পোশাক আছে। গ্রামের প্রায় সব রাস্তাই পাকা। প্রতিটি গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয় গড়ে উঠেছে, ঘর না থাকলে বাড়ি তৈরি করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, সব ক্ষেত্রে ভর্তুকি দেওয়া যাবে না। ভর্তুকি সমস্যার সমাধান করতে পারে না। সরকার কাকে ভর্তুকি দেবে? ধনী কিংবা গরীব? সব জায়গায় ভর্তুকি দেওয়া হলে অন্যান্য খাত শৃঙ্খলা হারাবে। সরকার কোথায় ভর্তুকি দিতে হবে তা বিশ্লেষণ করে তারপর দেয়।
মোঃ তাজুল ইসলাম বলেন, অনেক উন্নয়ন সহযোগী দেশ ও সংস্থা বিভিন্ন প্রকল্পে অর্থায়নে আগ্রহ প্রকাশ করছে। আমাদের দেশের অবস্থা এত খারাপ হলে তারা আমাদের সাহায্য করত না। একটি দল বলছে বাংলাদেশ নাকি শ্রীলঙ্কা হবে। কেন যে হবে? শ্রীলঙ্কা কি করেছে এবং আমরা কি করছি? ভয়ের কোনো কারণ নেই। আমাদের শেখ হাসিনা আছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্মতিতে জনগণের জীবনযাত্রা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম চালু রাখা হয়েছে। দেশের মানুষের কথা চিন্তা করে আগেই করোনা টিকা দেওয়ার ক্রয় অর্ডার দেওয়া হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী জানতেন যে ভ্যাকসিন সংকট দেখা দেবে। করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বাংলাদেশ বিশ্বে পঞ্চম স্থান অর্জন করেছে, এবং এশিয়ায় এক নম্বরে রয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার ডাকে সাড়া দিয়ে স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে দেশ স্বাধীন হয়েছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমাদের ৯০ শতাংশ মানুষ ঐক্যবদ্ধ হলেও যেকোনো সংকট মোকাবেলা করে বিজয় অর্জন করব। বর্তমান সংকট বৈশ্বিক তাই সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি অমিতোষ পালের সভাপতিত্বে সংলাপে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান ও সাধারণ সম্পাদক সোহেল মামুনের পরিচালনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. রুমানা হক, ঢাবির ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক রিয়াজুল হক প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
প্রসঙ্গত, দেশ ও দেশের মানুষের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। আর তাই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে উন্নতির দোরগোড়ায়। বাংলার মানুষ প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিরদিন ঋণী হয়ে থাকবে।