বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন আব্দুর রউফ তালুকদার, আর তার দায়িত্ব নেয়ার পরপরই সংবাদ মাধ্যম বা অন্যকোন গণমাধ্যমে ব্যাংক সংশ্লিষ্ট কোনো তথ্য সরবরাহ করার বিষয়ে কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপ করেছেন। যার কারণে বাংলাদেশের এই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভেতরকার সংবাদ সংগ্রহে বেশ বড় ধরনের বাধার মুখে পড়লেন সাংবাদিকেরা। তাছাড়া যদি ব্যাংক সংক্রান্ত কোনো বিষয়ে কোনো তথ্য বা সংবাদ সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয় তাহলে সংশ্লিষ্ট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা যারা রয়েছেন তাদেরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ বা শোকজ দেয়া হচ্ছে বলে জানা যায়। বিভিন্নভাবে মানসিক চাপ সৃষ্টির পাশাপাশি বদলি ও বরখাস্তের হুমকিও দেওয়া হচ্ছে। এতে ভীত হয়ে পড়েছেন ব্যাংক খাতের নিয়ন্ত্রণ সংস্থার কর্মীরা।
এদিকে তথ্য প্রাপ্তি ও সাংবাদিকদের প্রবেশ বন্ধ করতে কয়েকটি বিভাগে তালা ঝুলানোর নির্দেশ দিয়েছেন ডেপুটি গভর্নর কাজী ছাইদুর রহমান। সাংবাদিকদের তথ্য দেওয়ার জন্য ডেপুটি গভর্নর তিন নির্বাহী পরিচালককে ডেকে তিরস্কার করেন। তাছাড়া তথ্য শেয়ার করার অভিযোগে ব্যাংক পরিদর্শন বিভাগ, অফ-সাইট বিভাগ, ফরেন রিজার্ভ এবং ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ, ব্যাংকিং নীতি ও প্রবিধান বিভাগের অন্তত ১১ জন কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করা হয়েছে।
ব্যাংক শাখার ভল্ট থেকে টাকা ‘উধাও’ হচ্ছে, খেলাপি ঋণ গোপন করা হচ্ছে। অনৈতিকভাবে ‘ক্লায়েন্টদের’ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দিয়ে ব্যাংকটি চরম সংকটে রয়েছে। এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান ব্যবস্থা নেয়ার পরিবর্তে কেন এ ধরনের অনিয়মের খবর জনগণের কাছে পৌঁছাচ্ছে তা নিয়ে ক্ষো’ভ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সাধারণ মানুষ যাতে এসব তথ্য জানতে না পারে সেজন্য তথ্য সরবরাহে কঠোরতা আরোপ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র নির্বাহী পরিচালক মো: সিরাজুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক একটি আয়নার মতো। এ কারণে পরিস্থিতি বুঝে শুধু তথ্য দিতে হবে। সব তথ্য মিডিয়াকে দেওয়া ঠিক নয়। কোনো কর্মকর্তা তথ্য প্রকাশ করলে গোপনীয়তা ভঙ্গ হয়। এ জন্য তাদের নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এটা নিয়ে ভীতিকর বা স্বেচ্ছাচারিতার কিছু নেই। মুখপাত্রের মাধ্যমে গণমাধ্যমের তথ্য পেতে হবে। কোনো ব্যাংকের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত হলে সেই ব্যাংক থেকে তার তথ্য প্রকাশ করা যেতে পারে। কিন্তু কেন এমন নোটিশ দেওয়া হচ্ছে তা জানি না।
তবে ব্যাংকের অনেক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এ ধরনের নিয়ন্ত্রণ আরোপের বিষয়ে বেশ কিছু ইতিবাচক দিক রয়েছে, যেটা অবশ্যই জনস্বার্থে দরকার। তবে অনেক বিষয় রয়েছে যেগুলো সাংবাদিকরা জানতে পারবেন সেখানে শিথিলতা রয়েছে। তবে নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যাংক গভর্নর এ বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত নেবেন সেটাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হিসেবে গণ্য হবে।