বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা। এই নামটি বাংলার মানুষের অনেক শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার একটি নাম। প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় আসার পর দেশ স্রোতের মত এগিয়ে যাচ্ছে উন্নতির দিকে। বাংলার প্রতিটি আনাচে কানাচে লেগেছে উন্নতির ছোঁয়া। বিশেষ করে পদ্মা সেতু হলো সর্বকালের সেরা স্থাপত্য বাংলার মাটিতে যেটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্মান করেছেন। সম্প্রতি বাংলার এই মানবদরদী প্রধানমন্ত্রী তার এক বক্তব্যে বলেছেন বাংলাদেশে যারা গত কয়েক বছরে ‘গুম’ হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে, তাদের অনেকেই বিএনপির মিছিল করছে।
বাংলাদেশে গত কয়েক বছরে যাদের ‘নিখোঁজ’ হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে তাদের অনেকেই বিএনপির সমাবেশে যোগ দিয়ে মিছিল করছে এবং কেউ ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে নিজেকে আড়াল করছেন। ভয়েস অব আমেরিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের সরকারপ্রধান এ কথা বলেন।
মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ভয়েস অফ আমেরিকার ওয়েবসাইট এবং সামাজিক মাধ্যম পেজে এই সাক্ষাৎকারটি প্রচারিত হয়। এই সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন ভয়েস অফ আমেরিকার বাংলা বিভাগের প্রধান শতরূপা বড়ুয়া। এ সময় শতরূপা বড়ুয়া বাংলাদেশের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, আসন্ন নির্বাচন ও রোহিঙ্গা বিষয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন করেন। প্রায় এক ঘণ্টাব্যাপী এই সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব প্রশ্নের উত্তর দেন এবং বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগের শাসনামলের বিভিন্ন অর্জনের কথাও তুলে ধরেন।
বাংলাদেশে গুম ও প্রাণনাশের অভিযোগে একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন গঠনের প্রস্তাব করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার কী ভাবছে?
এমন প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের একটি মানবাধিকার কমিশন আছে। তবে তারা তদন্ত করছে। তালিকা চাইলে ৭০ জনের তালিকা দেওয়া হয়। সেখানে বিএনপির বেশির ভাগ নেতাকর্মীকে দেখা গেছে, তারা মিছিল করছেন। অনেকে ব্যক্তিগত কারণে ঋণ পরিশোধ করতে না পারায় অন্যত্র চলে গেছেন।
তিনি বলেন, প্রয়ান হয়েছে এমন সাতজনের তথ্য পাওয়া গেছে। আমরা মানবাধিকার লঙ্ঘন করিনি, মানবাধিকার রক্ষা করেছি।
বিএনপির নির্বাচনকালীন সময় এবং নিরপেক্ষ সরকারের দাবি নিয়ে সরকারের অবস্থান জানতে চাইলে দেশের চারবারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান নির্বাচন কমিশন আইনের মাধ্যমে তৈরি হয়েছে। তারা সম্পূর্ণ মুক্ত। নির্বাচন যাতে সুষ্ঠুভাবে হয় সে ব্যবস্থা করা হয়েছে। ২০২৬ সালে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা ছেড়ে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হবে। আগামী পাঁচ থেকে ১০ বছরে বাংলাদেশের সামনে কী কী চ্যালেঞ্জ রয়েছে?
ভয়েজ অফ আমেরিকার প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ২০২১ সালের জন্য আমাদের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর ২০১৪ সালে নির্বাচন হয়েছিল। জনগণ আমাদের কাজে খুশি হয়ে আমাদের আবার ভোট দিয়েছে, আমরা। আমরা দ্বিতীয়বার এলাম। এর সুবিধা হলো ধারাবাহিকতা থাকলে কাজগুলো আরো এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়।
তিনি বলেন, ‘তৃতীয়বার নির্বাচন হলে তারা আমাদের ভোট দিয়েছে এবং আমরা আমাদের কাজ করতে পেরেছি। দারিদ্র্য ৪১ শতাংশ থেকে কমে ২০.৫ শতাংশে। আমাদের লক্ষ্য ছিল দারিদ্র্যের হার ১৬-১৭ শতাংশে নামিয়ে আনা। এদিকে, বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পরা রোগ এসে আমাদের অগ্রগতি কিছুটা ব্যাহত করেছে। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধও বাধা সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন সম্প্রতি একাধিকবার বলেছেন, বাংলাদেশ আর কোনো রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেবে না। ভয়েস অব আমেরিকা জানতে চায় সরকার কেন এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।
জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা এমনিতেই ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। এত রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়া, দীর্ঘদিন এভাবে থাকাটা বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। এই উদ্বাস্তুরা আর কতদিন থাকবেন, তাদের নিজ দেশে ফিরে যেতে হবে। আমি আন্তর্জাতিক স্তরে বারবার অনুরোধ করেছি, আপনারা ব্যবস্থা নিন যাতে তারা তাদের দেশে ফিরে যেতে পারে। তাদের দীর্ঘ অবস্থানের কারণে কক্সবাজারের পুরো পরিবেশ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সম্প্রতি মিয়ানমারে আবারো বিশৃঙ্খলা শুরু হয়েছে। সেজন্য বলা হয়েছিল, আমরা আর নিতে পারব না, সম্ভব নয়।’
প্রসঙ্গত, ববাংলার মাটিতে বিশাল বিশাল মেগা প্রজেক্ট নির্মান হওয়াতে বাংলাদেশের মর্যাদা বেড়ে গেছে অনেক গুণ। দেশ ও জাতির মঙ্গলের জন্য প্রধানমন্ত্রী বিরামহীনভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তারেই স্থাপত্য বাংলার মাটিতে চিরকাল অম্লান হয়ে থাকবে এবং সেই সাথে বাংলার মানুষ প্রধানমন্ত্রীকে সারাজীবন সম্মানের সহিত স্বর্ন করে যাবে।