ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের সাবেক খণ্ডকালীন শিক্ষক আসিফ মাহতাব উত্সা বলেন, আমাদের দেশে ট্রান্সজেন্ডার সমস্যা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। আমার কিছু ছাত্র-ছাত্রী নিজেদের ছেলে বা মেয়ে দাবি করছে, যেমন: মেয়ে নিজেকে ছেলে দাবি করছে। আমার ঘনিষ্ঠ ছাত্রছাত্রী, যারা খুব মেধাবী এবং ক্লাসের বেস্ট স্টুডেন্ট (সেরা শিক্ষার্থী) তাদের মধ্যেও কয়েকজন এই ধ্বংসাত্মক দর্শনের দ্বারা আকৃষ্ট।
আসিফ মাহতাব শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) চ্যানেল ২৪ অনলাইনের সঙ্গে সপ্তম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে ট্রান্সজেন্ডার বিষয়ক একটি অধ্যায় নিয়ে আলাপকালে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আমি আসলে এখান থেকে তাদের (ছাত্রদের) বাঁচাতে পারব না। একটি নির্দিষ্ট বয়সের পরে তাদের পরিবর্তন হবে না। ছোটবেলা থেকেই তাদের মগজ ধোলাই করা হয়। একজন দার্শনিক হিসেবে আমাকে এমন ধ্বংসাত্মক দর্শন নিয়ে কিছু করতে হবে। তাই এই উদ্যোগ নিয়েছি। আমি তাদের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে খুব সচেতন ছিলাম।
ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির দর্শন বিভাগের এই প্রাক্তন খণ্ডকালীন শিক্ষক বলেন,আমরা অনেকদিন ধরে দেখছি হিজড়ারা তাদের অধিকার পাচ্ছে না। কিছু মানুষ যারা নিজেদের তৃতীয় লিঙ্গের দাবি করছে, তারা আসলে পুরুষ। তারা নিজেরা নারী সেজে বা তৃতীয় লিঙ্গ বা হিজড়া সেজে তাদের অধিকার নিচ্ছে। আমি যতটুকু খবর পেয়েছি, অনেকে প্রধানমন্ত্রীর কাছেও গিয়েছে। যদিও তারা হিজড়া না। আলোচিত এই শিক্ষক বলেন, এর প্রেক্ষিতে আমি চেষ্টা করছি কীভাবে এই হিজড়াদের অধিকার রক্ষা করতে পারব। আমরা অনেকভাবে, অনেক মহলে চেষ্টা করেছি। হিজড়াদের একটা জনগোষ্ঠীর সঙ্গে আমি কথা বলেছি। তাদের বলেছি, আপনারা এই বিষয়ে সোচ্চার হোন। কিন্তু তারা কেউ কথা বলতে চায় না। আমরা এ ব্যাপারে বিভিন্ন মহলে গিয়েছি। ধর্মীয় নেতা বা যেসব নেতাদের পেয়েছি, তাদের এই বিষয় নিয়ে সোচ্চার হওয়ার কথা বলেছি। কিন্তু কাউকে পাইনি। শেষ পর্যন্ত যখন দেখলাম আর পজেটিভ কিছু হচ্ছে না, তখন আমি আমার পদক্ষেপ নিতে শুরু করলাম।
সম্প্রতি রাজধানীর কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে আয়োজিত ‘বর্তমান পাঠ্যক্রমের নতুন পাঠ্যপুস্তক: বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক সেমিনারে অংশ নেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষক। শিক্ষক ফোরামের ব্যানারে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলেও প্রধান অতিথি ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির (চরমোনাই পীর) মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম।
অনুষ্ঠানে আসিফ মাহতাব বলেন, সপ্তম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে ট্রান্সজেন্ডার গল্প অন্তর্ভুক্ত করে শিক্ষার্থীদের মগজ ধোলাই করা হচ্ছে। এ সময় তিনি পাঠ্যবই থেকে ‘শরীফ’ থেকে ‘শরীফা’ গল্পের পাতা ছিঁড়ে ফেলেন। মাহতাব তার নিজের ফেসবুকে এই দৃশ্যের একটি ভিডিও আপলোড করেছেন। এরপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়।