স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনো প্রতিবাদে এত হতাহতের ঘটনা বাংলাদেশ দেখেনি। কোটাসংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে ছাত্র বিদ্রোহে যেমনটা দেখা গেছে। প্রতিটি মৃত্যুই মর্মান্তিক ও বেদনাদায়ক। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু হত্যার ভিডিও দেখে শিউরে উঠতে হচ্ছে নির্মমতার মাত্রায়।
শেখ হাসিনা ৫ আগস্ট ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান। এদিন আশুলিয়ায় এক নির্মম ঘটনা ঘটে। লাশের স্তূপ করে রাখা হয় ভ্যানে। মরদেহের ভার যেন আর নিতে পারছিল না ছোট ভ্যানটি। এরপরও চরম অমানবিকতায় রক্তাক্ত মৃতদেহ ভ্যানে তোলা ও ঢেকে রাখার চেষ্টা করে সেখানে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা।
এমন বীভৎস ও লোমহর্ষক একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এখন আলোচনায়। চ্যানেল ২৪-এর অনুসন্ধানে জানা যায়, ঘটনাটি ঘটেছে সাভারের আশুলিয়ায়। আর ভিডিওতে দেখা যায় হেলমেট পরা ব্যক্তি হলেন ঢাকা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তা আরাফাত হোসেন।
এই ভিডিওটি সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই দেখেছেন এবং হাসিনা সরকারের বর্বরতার প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, গত ৫ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে আশুলিয়া থানার সামনে শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়। পরে পুলিশ তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। ফলে আন্দোলনে অংশ নেওয়া অনেককে গুলি করে হত্যা করা হয়। পরে পুলিশ হতাহতদের ভ্যানে করে অন্য জায়গায় নিয়ে যায়। এমনকি পুলিশের একটি গাড়িতেও কয়েকজনকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী হাবিবুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, ওই দিন আন্দোলনকারীরা একদিকে, অন্যদিকে পুলিশ। এক পর্যায়ে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে গুলি চালায়। ঘটনাস্থলেই কয়েকজনের মৃত্যু হয়। এরপর বেশ কয়েকটি লাশ ভ্যানে করে নিয়ে যায় পুলিশ। কিছুক্ষণ পর পুলিশের গাড়িতে লাশগুলো পাওয়া যায়। তখন মরদেহগুলোসহ সেই গাড়িটি আগুনে জ্বলছিল।
ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশের ইনচার্জ রিয়াজ উদ্দিন বিপ্লব গণমাধ্যমকে বলেন, ভিডিওটি অস্পষ্ট। তবে আরাফাত হোসেন আমাদের ঢাকা উত্তরের গোয়েন্দা পুলিশের তদন্ত হিসেবে কর্মরত রয়েছে।
৫ আগস্ট আরাফাতকে কোথায় ডিউটিতে ছিলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, সাভার থানায় গোয়েন্দা পুলিশ সদস্যরা ডিউটিতে ছিলেন। তবে ওই দিন আরাফাত কোথায় ডিউটিতে ছিলেন তা নিশ্চিত করতে পারেননি তিনি।