Friday , November 22 2024
Breaking News
Home / Politics / ভোট তো পুলিশ আর অফিসাররা দিয়েছে: বিশ্বনাথের মেয়র মুহিবুর রহমান

ভোট তো পুলিশ আর অফিসাররা দিয়েছে: বিশ্বনাথের মেয়র মুহিবুর রহমান

ভোটের কি হয়েছে? ভোট ছিল না। ভোট দিয়েছেন পুলিশ ও কর্মকর্তারা। আমার জনগণ ভোট দিলে জনগণ ভোট দেওয়ার সুযোগ পেলে আমার হারানোর কোনো সুযোগ নেই। আমার এই জনপ্রিয়তা আছে। কিন্তু এখন পুলিশ ও অফিসাররা গিয়ে ভোট দিলে কার কিছু করার আছে।’

বিশ্বনাথ পৌরসভার মেয়র মুহিবুর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি এবার সিলেট-২ (ওসমানীনগর-বিশ্বনাথ) আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। আজ শুক্রবার বিকেলে সিলেট নগরের জেল রোডের গ্র্যান্ড ভিউ হোটেলে সংবাদ সম্মেলন করেন বিশ্বনাথ পৌরসভার মেয়র মুহিবুর রহমান।

মুহিবুর রহমান স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিলে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা করেন। আপিলে বাতিল বহাল থাকলে তিনি হাইকোর্টে যান। আগামী ২৭ ডিসেম্বর হাইকোর্টে আপিলের শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে মুহিবুর রহমান বলেন, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন পৌরসভার মেয়র এবং জনপ্রতিনিধিরা তাদের পদ থেকে এমপি হয়েছেন। কিন্তু এরপর আর কোনো নতুন আইন পাস হয়নি। কাজেই, বাংলাদেশের অন্যরা যদি পদে বহাল থাকতে পারে, তাহলে আমার তা না করার কোনো কারণ নেই।

তিনি অভিযোগ করেন, জেলা রিটার্নিং অফিসার তার মনোনয়নপত্র শতভাগ সঠিক ও বৈধ হওয়া সত্ত্বেও তাকে অবৈধ ঘোষণা করেছেন। আপিলের শুনানি হয় ১০ ডিসেম্বর। অন্যান্য সমস্ত আপিল অবিলম্বে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, তবে তার সহ কয়েকটি পাঁচ দিনের জন্য বিলম্বিত হয়েছিল। রায়ে মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা করা হলে তিনি ১৭ ডিসেম্বর হাইকোর্টে যান। শুনানি হয় ১৮ ডিসেম্বর। কিন্তু হাইকোর্ট আংশিক শুনানি করে দুই দিন পর পরবর্তী শুনানির জন্য ২০ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন অ্যাটর্নি জেনারেল নিজেই। দীর্ঘ শুনানি শেষে হাইকোর্ট ২৭ ডিসেম্বর রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন।

সংবাদ সম্মেলনে ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহিবুর রহমান

মুহিবুর বলেন, “প্রতিদ্বন্দ্বীরা যেখানে প্রচারণা চালাচ্ছে, সেখানে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে ব্যস্ত আছি। কবে শেষ হবে জানি না। তবে আমি হতাশাবাদী নই, আশাবাদী। আমি প্রতীক ছাড়াই নির্বাচনী প্রচার চালিয়েছি। বিশ্বাস করুন, আমিই বিজয়ী হব, ঈশ্বর ইচ্ছা করুন।

মুহিবুর রহমান বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে বলেন, আমি আপনাদের মনে করিয়ে দিতে চাই, চৌদ্দ বছরে কীভাবে নির্বাচন হয়েছিল। যদিও আমি সরকারকে সমর্থন করি। সরকারের সমর্থক হলে কি হবে, আমি অন্ধ সমর্থক নই। আমি UK থেকে এসেছি। আমিও সেখানে সিভিল সার্ভিসে কাজ করেছি, অফিসার ছিলাম। আমি চাই আমার দেশে প্রকৃত রাজনীতি, প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হোক। আমরা এসব মিথ্যা ও প্রলাপ থেকে মুক্তি চাই। তিনি অবাধ ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন, আমাকে যদি বিনা ভোটে এমপি নির্বাচিত হতে হয়, তাহলে আমি 1986 সালে এমপি হতে পারতাম, আমি ৮৭ সালে এমপি হতে পারতাম, আমি ৯০ সালে এমপি হতে পারতাম। আমি চারবার এমপি হতে পারতাম বা পাঁচবার. আমি ভোট ছাড়া এমপি হতে চাই না। সে জন্য অন্যদের মনোনয়ন দিয়েছি। লামা সাব (মাকসুদ ইবনে আজিজ লামা) আমার মনোনয়ন। আমার মনোনয়নে কেরানি সাব হয়ে গেল। তোমাকে আর কি বলবো!’

বিশ্বনাথের প্রথম উপজেলা চেয়ারম্যান ও প্রথম পৌর মেয়র মুহিবুর রহমান বলেন, ‘তিনবার স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচিত হয়েছি। আমি কোনো তন্ত্র-মন্ত্র দ্বারা নির্বাচিত নই। আমি স্বতন্ত্র নির্বাচিত হয়েছি। আর তিনবার মুখ দেখিয়েছি। আর আমি এই দুইবার বলেছি যে আমি ১৪ এর কথা বলেছি এবং আমি ১৮ এর কথা বলেছি। এটা এদেশে বা বিশ্বের কারো অজানা নয়। এটা সবার জানা।

২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে মুহিবুর বলেন, ‘চতুর্দশ নির্বাচনে যিনি নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি আমাকে ফোন করে বলেছিলেন, এই ইয়াহিয়া আমাকে ডেকে বললেন, চাচার ভোট তোমার।’ আমি পাস করব আমি এর আগে দুবার সাংবাদিকদের বলেছি।তিনি তখন পাস করেছেন।সুরঞ্জিত দা (সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত) আমাকে ডেকে বললেন, মুহিব, সংসদে আসুন। সেখানে দেখা হবে। আমি যদি নিশ্চিত না হতাম, যদি সুরঞ্জিত দা না হতেন। নিশ্চিত, তিনি কথা বলতেন না।এর পর নির্বাচনের দিন দেখলাম ইয়াহিয়া আমাকে ডেকেছেন এবং তিনি তাই বলেছেন।

তিনি বলেন, আমি এতদূর ফিরে যেতে চাই না। আমরা চৌদ্দ থেকে বলছি, চৌদ্দ থেকে ইতিহাস আঁকছি। আপনি যদি মনে করেন আমি যা বলছি তা সঠিক, সত্য বলছি তবে আপনি আমার সাথে থাকবেন। আমাকে সাহস দাও। দয়া করে আমাকে লিখে সাহায্য করুন। ইনশাআল্লাহ আমি এদেশে সংগ্রাম চালিয়ে যাবো। যাতে সত্যিকার অর্থে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয় এবং মিথ্যার ওপর ভিত্তি করে কাউকে যেন এমপি, চেয়ারম্যান, উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত করা না হয়।

উল্লেখ্য, মুহিবুর রহমান ২০২২ সালের ২ নভেম্বর নৌকার প্রার্থীকে ৫ হাজার ২১১ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মেয়র নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৮৫ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রথমবারের মতো উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০০৯ সালের উপজেলা নির্বাচনে পরাজিত হয়ে তিনি দ্বিতীয়বারের মতো উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

About Zahid Hasan

Check Also

‘আ.লীগ রঙ দেখছে, কিন্তু রঙের ডিব্বা দেখেনি’ দল যে সিদ্ধান্ত নেবে মাথা পেতে নেব

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমান বলেছেন, বিএনপি যদি ব্যক্তিগতভাবে স্থানীয় নির্বাচনে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেয়, তাতে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *