বাংলাদেশের নির্বকং নিয়ে রয়েছে অনেক আলোচনা আর সমালোচনা। আর এই আলোচনা সমালোচনার শুরু হয়েছে ২০১৮ এর নির্বাচন থেকে। এবার সেই সব কথার জবাব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে তার সরকারের সদিচ্ছার কথা পুনর্ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ভোট চুরির ইচ্ছা থাকলে আমরা নতুন নির্বাচন কমিশন আইন করলাম কেন? আমি খালেদা জিয়ার মতো সেই ‘আজিজ মার্কা’ নির্বাচন কমিশন করতে পারতাম। আমরা তা করিনি। কারণ জনগণের প্রতি আমাদের আস্থা ও বিশ্বাস আছে। সেই বিশ্বাস নিয়েই আমরা হাঁটছি।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা সকল বাধা মোকাবেলা করে ২০৪১ সালের মধ্যে একটি সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়বে। আঘাত আসবে, ষড়যন্ত্র হবে। তবে সেই ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় অবশ্যই নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যাবেন। অপশক্তি যতই ষড়যন্ত্র করুক না কেন, বাঙালি এগিয়ে যাবে। বাংলাদেশ পিছিয়ে যাবে না, এগিয়ে যাবে। ইনশাআল্লাহ আমরা এই অগ্রগতির পথে জাতির জনকের স্বপ্ন পূরণ করব।
শনিবার রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। এ সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ছাড়াও অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ড.
১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির প্রহসনের নির্বাচনে খালেদা জিয়া ভোট চুরি করে ক্ষমতায় এসেছিলেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, জনগণ ভোট চুরি করতে ছাড়ে না, বিএনপিও ছাড়ে না। জনগণই তাদের ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে দেশের অবকাঠামো উন্নয়নে সহায়তা করে।
তিনি বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর থেকে আওয়ামী লীগ সরকার টানা তিনবার ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশকে বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হিসেবে পরিণত করেছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন বাস্তব।
প্রধানমন্ত্রী চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ভয়াবহতার কথা উল্লেখ করার পাশাপাশি শান্তির পক্ষে বাংলাদেশ ও এর সরকারের দৃঢ় অবস্থান তুলে ধরে বলেন, আমরা যুদ্ধ চাই না, আমরা শান্তি চাই। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য আমি বিশ্ব নেতাদের আহ্বান জানাই। তাদের উস্কানি দেওয়া বন্ধ করুন।
‘জাতীয় ধনকুবের শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের উন্নত, সমৃদ্ধশালী ও ডিজিটাল বাংলাদেশের’ স্লোগানে উপমহাদেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। কর্মী বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার কারণে এবারের সম্মেলন অনাড়ম্বরভাবে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা বলা হলেও নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনার কমতি নেই।
দলের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার মৃত্যুতে দলের নেতা-কর্মীসহ দেশ ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনের বিশিষ্টজনেরা শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন। উদ্বোধনী অধিবেশনে স্বাগত বক্তব্য দেন সম্মেলন উপলক্ষে গঠিত সংবর্ধনা উপ-কমিটির আহ্বায়ক শেখ ফজলুল করিম সেলিম। সাধারণ সম্পাদকের প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন ওবায়দুল কাদের। দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ডাঃ আব্দুস সোবহান গোলাপ এবং উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন পরিচালনা করছেন।
সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচন কমিশনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কমিশনার নিয়োগের জন্য নতুন আইন প্রণয়ন, ছবিসহ ভোটার তালিকা, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স এবং বেশ কয়েকটি স্থানে ইভিএমসহ তার সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন। জায়গা. তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনকে সম্পূর্ণ স্বাধীন করেছি। এর আগে নির্বাচন কমিশনের আর্থিক সামর্থ্য ছিল না। পুরোটাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে রাখা হয়েছিল। আমরা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নির্বাচন কমিশনের কাছে হস্তান্তর করেছি। তাদের বাজেট থেকে সরাসরি অর্থ প্রদান করা হয়। যাতে তারা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে। ইভিএমের পর ভোট কারচুপির কোনো সম্ভাবনা আছে কিনা জানি না।
প্রসঙ্গত, গতকাল ছিল বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের ২২তম সম্মেলন। আর এই সম্মেলনে টানা ১০ম বারের মত আওয়ামীলীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই সাথে বর্তমান সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের উপরেই আস্থা রেখেছে দলটি। আর এই কারনে তাকে তৃতীয় বারের মত করা হয়েছে সাধারণ সম্পাদক।