দীর্ঘ দিন আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় থেকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। এ উন্নয়নের গতিধারা বজায় রাখতে দলের মধ্যে ঐক্য তৈরী করে সামনে এগিয়ে যেতে হবে বলে জানান উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমু। তিনি বলেন, সাংগঠনিক ভাবে নিজেদেরকে মজবুজ করে আগামী নির্বাচনে আবার জয়ী হতে হবে। আমরা অন্যায় করলে শেখ হাসিনার চেষ্টার সুফল আসবে না বলে মন্তব্য করে যে কথা বললেন উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমু।
দলীয় ও কর্মের ব্যর্থতা এবং নেতৃত্বের ত্রুটিগুলো চিহ্নিত করতে পারলে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয় সুনিশ্চিত হবে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমু।
তিনি বলেন, আগামী এক বছর এসব বিষয় মাথায় রেখে কাজ করলেই শেখ হাসিনা আবার ক্ষমতায় আসবেন। আমরা যদি এলাকায় অন্যায় করি, কাজের বিনিময়ে টাকা নেই, তাহলে শেখ হাসিনার প্রচেষ্টার সুফল আসবে না। ভুলগুলো শুধরে নিয়ে এখনই এগিয়ে যেতে হবে।
শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম নগরীর এলজিইডি মিলনায়তনে এক শোকসভায় আমির হোসেন আমু এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করে তিনি বলেন, আমরা শেখ হাসিনার কার্যক্রমের সুফল ঘরে তুলতে পারছি না। সেটা যদি তুলতে পারি আমাদের নির্বাচন নিয়ে চিন্তা করতে হবে কেন। অথচ বিশ্ব যখন হিমশিম খাচ্ছে তখন তিনি দেশকে দাঁড় করিয়ে রেখেছেন। উনার কাজের প্রশংসা করতে হবে আমাদের। আমরা যদি সেটি পরিবেশিত না করি তাহলে ফলাফল জিরো। উনার জনসেবা ঠিকভাবে পাচ্ছে কি না, ভুলভ্রান্তি হচ্ছে কি না দেখতে হবে। এখানে যদি ভুল হয় ফলাফল ঘরে আনা যাবে না।
আওয়ামী লীগ কেন নির্বাচনে জিততে পারে তা বিশ্লেষণ করে সাবেক মন্ত্রী বলেন, প্রতিটি ইউনিয়নে ৫০০ পরিবার সুবিধাভোগী। স্বাভাবিকভাবেই তাদের সাথে যোগাযোগ সুবিধা বয়ে আনবে। আমাদের প্রতিটি ইউনিয়নে ৪৫০ জন লোক রয়েছে। তবুও ভোটের অভাব হবে কেন? আমাদের তো ঘুমিয়ে ভোট পাওয়ার কথা। তবুও কেন এত ভাবনা। এটা যদি বিশ্লেষণ করে সঠিকভাবে এগুতে পারি কেউ আওয়ামী লীগকে পরাজিত করতে পারবে না।
মরহুম আবু সালেহকে স্মরণ করে আমির হোসেন আমু বলেন, আমি ১৯৬৭ সালে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক ছিলাম। সে সময় তার প্রথম সম্পর্ক হয়। তার এক বছর আগে ৬ দফাসহ গ্রেফতার হন বঙ্গবন্ধু। সে সময় চট্টগ্রামের ছাত্র সমাজের নেতা ছিলেন আবু সালেহ। তিনি বঙ্গবন্ধুর কট্টরপন্থী সমর্থক ছিলেন। তার মধ্যে আপস বলতে কিছু ছিল না।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বলেন, সবাইকে এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে হবে। কার কখন ডাক আসবে কেউ জানে না। খন আপনজন হারাই তখন কষ্ট পাই। ছোটবেলা থেকেই চাচা সালেহকে কাছ থেকে দেখেছি। জেলা আওয়ামী লীগে বাবা ছিলেন সভাপতি, সালেহ চাচা ছিলেন সম্পাদক। রাজনৈতিক সম্পর্কের পাশাপাশি পারিবারিক সম্পর্কও ছিল। তিনি একজন মেধাবী ছাত্রনেতা ছিলেন। ৭৫ পরবর্তী আওয়ামী লীগের রাজনীতির ভূমিকা স্মরণ করবো।
তিনি আরও বলেন, সাধু সাবধান। ষ/ড়যন্ত্র হচ্ছে, হবে। এর জন্য প্রস্তুত থাকুন। বাইরে থেকে কিছু লোক দলের ক্ষতি করার চেষ্টা করছে। যারা নতুন তাদের বুঝেশুনে পোস্ট দিতে হবে। অন্তত সাত-আট বছর দেখতে হবে। ষ/ড়যন্ত্রকারীরা আমাদের অনুপ্রবেশ করেছে। তাদের চিহ্নিত করতে হলে বিএনপি-জামায়াতকে মিছিল করতে দিতে হবে। এসব মিছিলে কারা থাকছে তা দেখেই ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত করা সহজ হবে।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমানের সভাপতিত্বে ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম, আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক মো. সভায় সচিব আমিনুলও বক্তব্য রাখেন। ইসলাম আমিন, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জ. এম.নাছির উদ্দিন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম চৌধুরী, প্রয়াত আবু সালেহ কন্যা ডা.মেহজাবিন তুলি প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সকলকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমু। তিনি বলেন, নির্বাচনে জয় নিশ্চিত করতে সকলকে ঐক্যবদ্ধের মাধ্যমে এগিয়ে যেতে হবে।