কক্সবাজারের টেকনাফের সুবরাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূর হোসেনের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ছবিতে দেখা যায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের (৭ জানুয়ারি) ভোটের দিন নৌকা প্রতীকে সিল করা ব্যালট পেপার দিয়ে ইতিমধ্যেই তার পাশের খালি বাক্সটি পূরণ করছেন তিনি।
এ সময় কক্সবাজার-৪ আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী শাহীন আক্তারের ব্যাজ পরা ছিলেন নূর হোসেন। সাবরাং ইউনিয়নের মুন্ডার ডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের একটি ভোটকেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। এ কেন্দ্রে প্রায় সাড়ে তিন হাজার ভোটার এবং ৭০ শতাংশ ভোটার ছিল।
ঘোষিত ফলাফলে নৌকা প্রতীক নিয়ে শাহীন আক্তার পেয়েছেন ১ হাজার ৭৯০ ভোট, তার প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী (ঈগল) টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল বাশার পেয়েছেন ৬২৪ ভোট।
স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সাংবাদিকদের জানান, কেন্দ্রে নৌকায় সিল মারার ছবিও আমরা পেয়েছি। উখিয়া-টেকনাফের প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে কারচুপি হয়েছে। কোনো কেন্দ্রে ভোটার ছিল না। কিন্তু ফলাফল দেখিয়েছেন ভোটাররা। তবে কার ছত্রছায়ায় কেন্দ্রে এসব অনিয়ম হয়েছে, তারাই এখন এএলআইয়ের নৌকা মার্কা বিজয়ী।
স্থানীয় কয়েকজন যুবক বলেন, আমরা ভোটকেন্দ্রে ছিলাম। এ সময় চেয়ারম্যানের গলায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী শাহিনা আক্তারের ছবি সম্বলিত একটি কার্ড ঝুলছিল। কর্মকর্তার স্বাক্ষরের পর একের পর এক ব্যালট ছিঁড়ে ফেলা হয়। আর তিনি প্রকাশ্যে একের পর এক ব্যালট দিয়ে নৌকায় সিল মেরেছেন।
এ কেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসার ছিলেন টেকনাফ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান।
ছবিটি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন যে কেন্দ্রে তিনি দায়ী ছিলেন সেখানে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি এবং তিনি ছবিটি সম্পর্কে কিছুই জানেন না।
সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আদনান চৌধুরী জানান, টেকনাফে ৪৮ দশমিক ২১ শতাংশ ভোট পড়েছে।
ছবিটি নিয়ে নূর হোসেনের মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
আলোচিত সংসদীয় আসন থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী শাহীন আখতার ৯০ হাজার ৩৭৩ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন। এ নিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির স্ত্রী শাহীন।
তিনি উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলার ১০৪টি কেন্দ্রে ১ লাখ ২২ হাজার ৮০ ভোট পেয়েছেন। টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল বাশার ঈগল প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে পেয়েছেন ৩১ হাজার ৭০৭ ভোট।
তবে ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার মাত্র ৩০ মিনিট আগে তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। বয়কটের ঘোষণা দিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাশার বলেন, তার এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। কারচুপির অভিযোগ এনে তিনি পুনরায় নির্বাচনের দাবি জানান।