সম্প্রতি এক ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে লেবু নাকে এক ভ্যান চালক। একপর্যায়ে লেবুকে জুতা পেটা করেন ইউপি চেয়ারম্যান। অফিসে আটকে রেখে সেই জুতা দিয়ে মারধরের ভিডিও রেকর্ড করেন তিনি। গত সোমবার ১৮ জুলাই বিকেলে জয়পুরহাট সদর উপজেলার দোগাছি ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত চক ভারুনিয়া গ্রামের মনসুর আলী, পার্শ্ববর্তী বিল্লা গ্রামের মামুনুর রশিদ ও পেঞ্চুলিয়া গ্রামের আনিসুর রহমান জানান, চক ভারুনিয়া গ্রামে আব্দুল মুমিন (৬০) ও লেবু হোসেনের (৪৫) মধ্যে প্রায় ৬ বছর থেকে সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। মাস কতক পূর্বে. মুমিন তার সম্পত্তির কিছু অংশ লেমুর কাছে বিক্রি করে দেন। পরে মেয়ের বিয়ের জন্য বাকি জমি একই গ্রামের শাহ আলমের (৫০) কাছে বিক্রি করতে চাইলে লেবু তাকে বাধা দেয়। এরপর থেকে বিরোধ শুরু হলে উভয় পক্ষই মিমাংসার জন্য ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন করে।
তারপর উভয় পক্ষকে নথি, দাবিত্যাগ এবং ফি সহ প্রয়োজনীয় প্রমাণ উপস্থাপন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। প্রয়োজনীয় প্রমাণাদি না থাকা সত্ত্বেও লেবু বিশ্বাসীদের জমি জোর করে দখলের চেষ্টা করে। মুমিনের এমন অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রাম পুলিশ লেবুকে ইউনিয়ন অফিসে ডেকে আনলে সে চেয়ারম্যানকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এ সময় চেয়ারম্যানের কয়েকজন কর্মী-সমর্থক লেবু হোসেনকে জুতা দিয়ে পিটিয়ে ইউনিয়ন অফিসের একটি কক্ষে আটকে রাখে।
তবে চেয়ারম্যান গ্রাম পুলিশ পাঠিয়ে তাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে ইউপি অফিসের একটি কক্ষে তিন ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে বলে অভিযোগ করেন লেবু। পরে চেয়ারম্যান এসে তাকে চড় মারেন। তার (লেবুর) ভাগ্নে আবু মুসা তাকে মারধরের দৃশ্য মোবাইল ফোনে রেকর্ড করছিলেন। এ সময় চেয়ারম্যান তার কাছ থেকে মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে ভিডিওটি ডিলিট করে বিকেলে ছেড়ে দেন।
এদিকে ইউপি চেয়ারম্যান সামছুল আলম সুমন লেবুকে আটকের কথা স্বীকার করলেও তাকে মারধরের কথা অস্বীকার করে বলেন, লেবু ও তার ভাতিজাকে কোনো কাগজপত্র ছাড়া অন্যের সম্পত্তি জোরপূর্বক দখল করায় শাস্তি দেওয়া হয়েছে। গত নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় আমার প্রতিপক্ষ জনগণকে আমার বিরুদ্ধে উসকানি দিয়ে আমার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করছে।
তিনি আরও জানান, আটকের খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে লেমুকে মুক্ত করেন। এরপর লেবুর স্ত্রী সেখানে উপস্থিত হয়ে জুতা দিয়ে মারধর করলেও স্থানীয় লোকজন তাকে বাধা দেয়।
জয়পুরহাট সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) গোলাম সারোয়ার জানান, জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল করে বিষয়টি জানানো হয়। পুলিশ আসার আগেই তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি।