সীতাকুন্ত ইস্যুতে এই পর্যন্ত অনেক মানুষ ক্ষতি গ্রহস্থ হয়েছেন। অনেককে এখনো সনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। ডিএনে টেষ্ট করে অনেকে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তরে করা হয়েছে। এই ঘটনায় ভুক্তভোগী হয়েছেন ইব্রাহিমের পরিবার। ইব্রাহিম শিপিং অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে প্রাণ আরএফএল কম্পনিতে কর্মরত ছিলো।
তার ভাই গন মাধ্যমকে ঘটনা সম্পর্কে জনাান, আমার ভাই ভিডিও কলে কথা বলতে হারিয়ে গেছে। আমার ভাই ফুরোতে গেল যেখানে আমার মা চিৎকার করছিল। ভাই, আর কখনো এসো না। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কন্টেইনার ডিপোতে বি’স্ফোরণে নিহত ইব্রাহিম হোসেনের শ্যালিকা সেলিনা আক্তার তার ভাইকে হারিয়ে কাঁদছেন।
২৮ বছর বয়সী ইব্রাহিম ওই এলাকায় শিপিং অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে প্রাণ আরএফএল কোম্পানিতে কাজ করতেন। সে যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার জহুরপুর ইউনিয়নের নরসিংহপুর গ্রামের আবুল কাশেম মুন্সীর ছোট ছেলে।
নিহতের চাচাতো ভাই শিমুল হোসেন জানান, শনিবার রাতে যোগাযোগ মাধ্যমে লাইভে আ’গুন লাগার ভিডিও দেখছিলেন ইব্রাহিম। কিছুক্ষণ পর ডিপোর কন্টেইনারে আচমকা বি’স্ফোরণ হয়। এরপর থেকে ইব্রাহিমের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
পরে ঘটনাস্থল তল্লাশি করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে তার লাশ উদ্ধার করে। মোবাইল ফোনে কথা বলার সময় বিস্ফোরণে তার মৃ’ত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে রোববার সকাল থেকেই ইব্রাহিমের বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছেন প্রতিবেশী ও গ্রামবাসী। মা দুলুপী বেগম ও বাবা আবুল কাশেম ছেলের জন্য অপেক্ষা করছেন। জীবনসঙ্গীকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন স্ত্রী মুন্নী খাতুন। ভাই-বোনসহ অন্যান্য আত্মীয়-স্বজনদের আকাশচুম্বী আহাজারিতে তার চারপাশ ভারী হয়ে উঠলেও তার চোখে অশ্রু ছিল না।
ইব্রাহিমের মা বলেন, শনিবার রাত ৯টায় মোবাইল ফোনে ইব্রাহিমের সঙ্গে আমাদের শেষ কথা হয়। ঈদে বাড়িতে এসে সন্তানের মুখ দেখতে চেয়েছিলেন। ছেলে সন্তান হলে মাদ্রাসায় পড়াতে চেয়েছিলেন, হাফেজ তৈরি করবে।কিন্তু ইব্রাহিমের স্বপ্ন আগুনে পুড়ে গেল।
জহুরপুর ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান মিন্টু জানান, ইব্রাহিম পাঁচ বছর আগে প্রাণ আরএফএলে চাকরি পান। দেড় বছর আগে নিজ গ্রামে বিয়ে করেন। তার স্ত্রী এখন নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা। ইব্রাহিমের মৃত্যুর পর পুরো গ্রাম শোকে মুহ্যমান।
তিনি আরও জানান, রোববার সন্ধ্যায় হাসপাতাল থেকে লাশ নিয়ে ইব্রাহিমের চাচাতো ভাই শিমুল যশোরের উদ্দেশে রওনা হন।
সোমবার সকালে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে বলে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন।
শনিবার রাত ৮টার পর স্মার্ট গ্রুপের অধিভুক্ত বিএম কনটেইনার ডিপোর প্রবেশপথে একটি কন্টেইনারে আগুন লাগে। খবর পেয়ে সীতাকুণ্ড ফায়ার স্টেশনের কর্মীরা ছুটে আগুন নেভায়। তাদের সঙ্গে যোগ দেন ডিপোর কর্মীরাও। স্থানীয়রাও সাহায্য করতে ছুটে আসেন। আগুন লাগার কিছুক্ষণ পরেই একটি কন্টেইনারে ভয়াবহ বি’স্ফোরণ ঘটে। দুপুরের পরপরই দমকলকর্মী, পুলিশ কর্মকর্তা, ডিপোর কর্মী ও চালকদের ভিড়ের সামনে কন্টেইনার গুলো আঘাত হানে।