বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক বৈঠক সম্পন্ন হয়েছে। আজ মঙ্গলবার অর্থাৎ ৬ সেপ্টেম্বর বিকেলের দিকে নয়াদিল্লির হায়দরাবাদ হাউসের এই দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে বৈঠক সম্পন্ন হওয়ার পর দুই দেশের প্রতিনিধিদের মাঝে গুরুত্বপূর্ণ সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। এরপর সংবাদ সম্মেলনে হাজির হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং নরেন্দ্র মোদি। তারা তাদের আলোচনার বিষয় স্বল্পভাবে তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনে মোদি বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য দ্রুত বাড়ছে। আমরা তথ্যপ্রযুক্তি, মহাকাশ এবং পার”মা/ণবিক খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন নিয়েও আলোচনা হচ্ছে।
ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে পায়ে পা মিলিয়ে চলবে উল্লেখ করে মোদি বলেন, আগামী ২৫ বছরে বাংলাদেশ একটি উন্নত দেশে পরিণত হবে। ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর মতে, নরেন্দ্র মোদি আরও বলেছেন যে ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে একটি ব্যাপক অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (সিইপিএ) নিয়ে আলোচনা শুরু করবে।
তিনি বলেন, উভয় দেশই অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (সিইপিএ) নিয়ে একটি যৌথ সমীক্ষায় জড়িত, যা বহু বছর ধরে দুই প্রতিবেশীর মধ্যে আলোচনা চলছে। বাংলাদেশ ভারতের বৃহত্তম উন্নয়ন সহযোগী এবং বৃহত্তম আঞ্চলিক বাণিজ্যিক অংশীদার।
নরেন্দ্র মোদি আরও বলেন, দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা অটুট রাখতে ভারত ও বাংলাদেশের উচিত যৌথভাবে সন্ত্রা”/সবাদ ও মৌলবাদী শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করা।
সন্ত্রা”/সবাদ এবং মৌলবাদের বিরুদ্ধে পারস্পরিক সহযোগিতার উপর জোর দিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে ১৯৭০-এর দশকের চেতনাকে বাঁচিয়ে রাখতে, আমাদের পারস্পরিক বিশ্বাসকে আঘাত করতে চায় এমন সমস্ত শক্তিকে একসাথে মোকাবেলা করা অপরিহার্য।
এর আগে দিনের কর্মসূচির শুরুতে সকালে ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনে আনুষ্ঠানিকভাবে শেখ হাসিনাকে গার্ড অব অনার দিয়ে স্বাগত জানানো হয়। তাঁকে স্বাগত জানান নরেন্দ্র মোদি। দুই প্রধানমন্ত্রী করমর্দন করেন। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
রাষ্ট্রপতি ভবনে শেখ হাসিনা বলেন, ভারত আমাদের বন্ধু। আমি যখনই ভারতে আসি, এটা আমার জন্য আনন্দের। বিশেষ করে আমাদের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদানের কথা আমরা সবসময় স্মরণ করি। আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। আমরা একে অপরকে সাহায্য করছি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথমে ভারতের উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধানখার এবং পরে দেশটির রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে আজ বিকেলে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন বলে জানা গেছে।
বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডি এবং নোবেল বিজয়ী কৈলাশ সত্যার্থী পৃথকভাবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবেন। একই দিনে ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করার কথা রয়েছে শেখ হাসিনার।
৪ দিনের একটি রাষ্ট্রীয় সফরে বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ন বৈঠকে অংশ নিয়েছেন বলে জানা গেছে। তিনি আগামি ৮ সেপ্টেম্বর দেশে ফিরবেন কিন্তু তিনি ঐ দিন রাজস্থানে যাবেন এবং খাজা গরীব নওয়াজ দরগাহ শরীফ, আজমির (আজমির শরীফ দরগাহ) শরীফে যাবেন বলেও জানা গেছে।