আগামী বছর বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন। কলকাতার মেয়র এবং পশ্চিমবঙ্গের পৌরসভা এবং নগর উন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম চান বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ সেই নির্বাচনে ক্ষমতায় আসুক।
তিনি বলেন, আমরা কখনই ভারতবিরোধী শক্তিকে স্বাগত জানাব না। তাই শেখ হাসিনার সরকার আবার ক্ষমতায় আসুক।
কারণ হিসেবে তিনি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সবচেয়ে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক শেখ হাসিনার। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক এখন আত্মীয়ের মতো হয়ে গেছে। ফলে আমি চাই যারা সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে কাজ করছে, যারা উন্নয়নের জন্য কাজ করছে তারা বাংলাদেশেই থাকুক। আর সেই সরকার দিতে পারে একমাত্র শেখ হাসিনা।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ এই মন্ত্রী ভোটের পর বাংলাদেশে কী ধরনের সরকার হওয়া উচিত এমন প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।
মঙ্গলবার দক্ষিণ কলকাতার চেতলা অগ্রণী ক্লাবে দুর্গা পূজার (ফিরহাদ হাকিমের পূজা নামেও পরিচিত) উদ্বোধন করার পর, ফিরহাদ হাকিম মিডিয়ার সামনে আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমন একজন যাকে আমি অনেক শ্রদ্ধা করি। আমার জন্য এটা সৌভাগ্য যে তিনি আমাকে ব্যক্তিগতভাবে চেনেন। আমি আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর বাড়িতে খেয়েছি। তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে তাঁর ছোট বোন বলে সম্বোধন করেছিলেন। হাসিনা ও মমতা- দুজনেরই মানসিকতা একই। বাংলাদেশে যখন স্বাধীনতা যুদ্ধ চলছিল, বাংলা ভাষার অস্তিত্বের জন্য আন্দোলন চলছিল, তখন ভারত ও আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র পশ্চিমবঙ্গ বাংলাদেশের জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের পাশে দাঁড়িয়েছিল। এছাড়া এই কলকাতা শহরের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে। তাই আমরা মনে করি না যে আমরা আলাদা।
ফিরহাদ হাকিম আরও বলেন, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের মধ্যে কাঁটাতারের বেড়া থাকলেও আমাদের হৃদয় এক। আমরা নজরুলের ভক্ত, রবীন্দ্রনাথের ভক্ত, শরৎচন্দ্রের ভক্ত। আমরা সবাই লেখকের ভক্ত, সৃষ্টির ভক্ত।
এদিন সন্ধ্যায় চেতলা অগ্রণী ক্লাবে প্রদীপ জ্বালিয়ে পূজা মণ্ডপের দরজা খুলে দেন বিশ্বখ্যাত ব্রাজিলিয়ান ফুটবল তারকা রোনাল্ড দিনহো। তিনি বর্তমানে দুই দিনের সফরে কলকাতায় অবস্থান করছেন। তাকে সামনে দেখে অভিভূত হয়ে পড়েন কলকাতার ফুটবলপ্রেমীরা। প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের পর পূজা মণ্ডপ পরিদর্শন করেন ফুটবল তারকা।
কলকাতার পুজোয় মানুষের আগমন নিয়ে ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘কলকাতা ভালো পুজো করার চেষ্টা করে। আমাদের পুজোয় শিল্প আছে। বাংলা শিল্প দেখতে মানুষ আমাদের পূজা মণ্ডপে ভিড় করে। কারণ আমরা যারা বাঙালী তারা এই দেশেরই- আমরা বাঙালিরা সংস্কৃতিপ্রেমী, আমরা শিল্পপ্রেমী। আমরা নতুন নতুন সৃষ্টি তৈরি করতে চাই এবং দুর্গোৎসবের দিনে সেগুলোকে এমনভাবে প্রদর্শন করতে চাই যাতে দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসে কলকাতায়।