Tuesday , November 5 2024
Breaking News
Home / Countrywide / ভারত পালিয়ে যাওয়ার পর শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি

ভারত পালিয়ে যাওয়ার পর শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি

বাংলাদেশ কারাগারে অন্ধকার প্রকোষ্ঠে পরিণত হয়েছে উল্লেখ করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, দেশে মানুষের স্বাভাবিক মৃত্যুর কোনো নিশ্চয়তা নেই। শোক করার অধিকার নেই। পঁচাত্তরের পরেও কুচক্রী মহল একই পরিবেশ তৈরি করেছিল। আজ প্রশ্ন জাগে মুক্তিযোদ্ধারা কি এই বাংলাদেশ চেয়েছিলেন?

৩ নভেম্বর জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।শনিবার (২ নভেম্বর) বিকেলে ফেসবুকে আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড পেজে এ বিবৃতিটি আপলোড করা হয়। ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে যাওয়ার পর এটাই শেখ হাসিনার প্রথম বক্তব্য।

বাণীতে শেখ হাসিনা বলেন, ৩ নভেম্বর আমাদের জাতীয় জীবনে একটি শোকাবহ দিন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারকে হত্যার দ্বিতীয় কলঙ্কজনক অধ্যায় ৩ নভেম্বর। আগস্ট হত্যাকাণ্ডের মাত্র তিন মাসের মধ্যে জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং এ.এইচ.এম. শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর হিসেবে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী কামারুজ্জামানকে ১৯৭১ সালের এই দিনে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। কারাগারে এমন বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবিহীন। জাতির পক্ষ থেকে জাতীয় চার নেতার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন,

কারাগারের নির্জন প্রকোষ্ঠে জাতীয় চার নেতার হত্যাকাণ্ড ছিল শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার ধারাবাহিকতা। এ ঘৃণ্য হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে স্বাধীনতার পরাজিত শক্তি ও দেশবিরোধী চক্র বাংলার মাটি থেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, প্রগতিশীল রাজনীতি ও আওয়ামী লীগের নাম চিরতরে মুছে ফেলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস এবং বাঙালি জাতিকে নেতৃত্বশূন্য করার অপচেষ্টা চালিয়েছিল। ’৭৫-এর সেই ষড়যন্ত্রকারী ও হত্যাকারীদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদতদাতারা বিভিন্ন সময়ে দেশের ক্ষমতা কুক্ষিগত করেছে।

আত্মস্বীকৃত খুনিদের রক্ষা করতে ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জারি করেও রক্ষা করতে পারেনি মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘হত্যাকারীদের বিচারের বদলে দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করেছে এবং রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছে। স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি বরাবরই দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে দেশের গণতান্ত্রিক ধারা ব্যাহত করতে এবং স্বাধীনতার সপক্ষ শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করতে বারবার হামলা করেছে। কিন্তু দিনশেষে ষড়যন্ত্রকারীরা সফল হয়নি এবং ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে, ভবিষ্যতেও হবে।’

‘স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির যে কোনো ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলার জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকবে হবে। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশবাসী ঐক্যবদ্ধ হয়ে সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের ধারা সমুন্নত রাখবেন বলে আমি বিশ্বাস করি। জাতীয় চার নেতার জীবন ও কর্মের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর এটাই উৎকৃষ্ট পন্থা,’ যোগ করেন তিনি।

শেখ হাসিনা আরও বলেন,

ইতিহাসের নির্মম বাস্তবতা হলো, সময়ের পরিক্রমায় একদিন সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠা হবে। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশের চেতনা চির জাগরুক থাকবে এবং জাতীয় চার নেতার অবদান জাতি চিরদিন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে। শহীদ জাতীয় চার নেতার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।

ছাত্র বিদ্রোহের মুখে গত ৫ আগস্ট দেশ ত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি দিল্লিতে আছেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর থাকলেও সম্প্রতি তাকে দিল্লি থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। তবে শেখ হাসিনা দিল্লিতেই অবস্থান করছেন এবং সেখানকার কোন এলাকায় আছেন, তা সম্প্রতি জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘দ্য প্রিন্ট’।

About Nasimul Islam

Check Also

ড. ইউনূস আমাকে ফোন করে আশ্বস্ত করেছেন: সোহেল তাজ

জাতীয় চার নেতা হত্যার দিন ৩ নভেম্বরকে জাতীয় শোক দিবস ঘোষণা সহ তিনটি দাবি জানিয়ে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *