Sunday , November 17 2024
Breaking News
Home / International / ভারতে বসে শেখ হাসিনার কর্মকাণ্ড প্রসঙ্গে যা জানাল যুক্তরাষ্ট্র

ভারতে বসে শেখ হাসিনার কর্মকাণ্ড প্রসঙ্গে যা জানাল যুক্তরাষ্ট্র

ভারতের সাথে বাংলাদেশের নানা ইস্যুতে নিয়মিত আলোচনা হয় বলে জানিয়েছেন মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। ভারতের সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চলমান আলোচনায় বাংলাদেশ প্রসঙ্গ প্রায়শই উঠে আসে বলে জানান তিনি। এমনই একটি সময়ে, বাংলাদেশ এবং ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোড়ন সৃষ্টিকারী একটি অভিযোগ সামনে আসে, যেখানে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারতের মাটিতে বসে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার পরিকল্পনায় অভিযুক্ত করা হয়েছে। এ অভিযোগ নিয়ে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা—এই প্রশ্নের জবাবে মিলার জানান, এ ধরনের ইস্যুতে আলোচনার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কিছু বলতে না পারলেও আঞ্চলিক ইস্যুতে বাংলাদেশ নিয়মিত আলোচনার অংশ হয়।

স্থানীয় সময় ৮ অক্টোবর, মঙ্গলবার, ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত একটি নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এ কথা জানান। এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, “বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে বসে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে কি ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো আলোচনা হয়েছে?”

মিলার তার জবাবে বলেন, “ভারত সরকারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক চলাকালে আঞ্চলিক ইস্যুতে কথা বলার সময় প্রায়ই বাংলাদেশ প্রসঙ্গ উঠে আসে। তবে এর বাইরে এই ইস্যুতে সুনির্দিষ্টভাবে বলার মতো কিছু আমার কাছে নেই।” তার বক্তব্য থেকে এটা স্পষ্ট হয় যে, আঞ্চলিক রাজনীতি এবং স্থিতিশীলতা নিয়ে ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে নিয়মিত আলোচনা হয়, যার মধ্যে বাংলাদেশও একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হিসেবে থাকে।

বাংলাদেশের সঙ্গে বাইডেন প্রশাসনের সম্পর্কের ভবিষ্যৎ দিক নিয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে সাংবাদিক আরও জানতে চান। মিলার জবাবে উল্লেখ করেন, “অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, গণতন্ত্র, নিরাপত্তা এবং রোহিঙ্গা শরণার্থী ইস্যুর মতো চ্যালেঞ্জগুলোর ওপর গুরুত্ব দিয়ে আমরা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।” তার এই মন্তব্যে বোঝা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বাংলাদেশ কেবল একটি আঞ্চলিক ইস্যু নয় বরং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।

এছাড়াও মিলার উল্লেখ করেন যে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন সম্প্রতি বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে একটি সফল বৈঠক করেছেন। তিনি আরও বলেন, “এই সমস্ত বিষয়ে অগ্রগতি অব্যাহত রাখার জন্য আমরা উন্মুখ।” মিলারের মন্তব্যে স্পষ্ট যে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্ক বজায় রাখতে এবং দেশটির নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যৌথভাবে কাজ করতে আগ্রহী। বিশেষ করে অর্থনৈতিক উন্নয়ন, গণতন্ত্রের স্থিতিশীলতা, নিরাপত্তা এবং মানবাধিকার ইস্যুতে তারা তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে।

বাংলাদেশের আঞ্চলিক ভূ-রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে ভারত, এবং এ বিষয়টি আন্তর্জাতিক মহলের মনোযোগ কাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্রও দক্ষিণ এশিয়ার এই অঞ্চলের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিয়ে উদ্বিগ্ন। বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা, নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতা এবং রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সরকার আগেও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ভারতের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠকে এসব বিষয় আলোচনার টেবিলে আসে, বিশেষ করে যখন বাংলাদেশের ভবিষ্যত রাজনৈতিক ধারা নিয়ে আলোচনা হয়।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে উঠা অস্থিতিশীলতার অভিযোগও এই আঞ্চলিক রাজনীতির একটি অংশ হিসেবে গণ্য হতে পারে। যদিও যুক্তরাষ্ট্র এই বিষয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য করেনি, তবে এর আগেও তারা বাংলাদেশে সুশাসন এবং মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আহ্বান জানিয়েছে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের নেওয়া পদক্ষেপেরও প্রশংসা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে শেখ হাসিনা এবং তার সরকারের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ে ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনা কেমন হয়, তা নিয়ে সুনির্দিষ্ট কিছু জানা যায়নি।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারত, দুই দেশই বাংলাদেশকে তাদের আঞ্চলিক কৌশলের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচনা করে থাকে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ এশিয়ায় তার প্রভাব বিস্তারে বাংলাদেশকে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে দেখে। এদিকে, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ওঠা সাম্প্রতিক অভিযোগ এবং তার পরবর্তী প্রতিক্রিয়া বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি আলোচিত বিষয় হয়ে উঠেছে। তবে, যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি এ বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া না জানালেও, আঞ্চলিক রাজনীতি ও বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে তাদের আগ্রহ এবং অংশগ্রহণ অব্যাহত রয়েছে।

About Nasimul Islam

Check Also

হাসিনার ট্রাভেল ডকুমেন্টে কী লিখেছে ভারত

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যিনি টানা চারবার ক্ষমতায় ছিলেন, বর্তমানে ভারতীয় মাটিতে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছেন। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *