সম্প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিকসহ বিভিন্ন মহলে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। তবে তার এই বক্তব্যের দায় সরকার নয় বলে বিভিন্ন মন্ত্রী ও দলের পক্ষকে থেকে বলা হয় এটির তার ব্যক্তিগত মতামত। কিন্তু দলের ভিতর তার এই বক্তব্যে নিয়ে অস্বস্তি প্রকাশ করা হয়। বক্তব্যের বিষয় নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিন্ন
দাবি করে বলেন তার বক্তব্য ভিন্ন ভাবে উপস্থাপন করেছেন সংবাদকর্মীরা।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেনের বক্তব্য বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে বলে দাবি করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সোমবার রাতে দেয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি করে বলা হয়, মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেনের প্রদত্ত বক্তব্য নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকরা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এমপিকে ঘেরাও করেন, সাংবাদিকদের অনুরোধে তাদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাকে যে অভিযোগে অভিযুক্ত করা হচ্ছে তার ধারেকাছেও আমি বলিনি। আমি নির্বাচনের কথা নিয়ে কিছু বলিনি। ভারতে (গিয়ে) ইলেকশন নিয়ে কোনো সাহায্যের জন্য বলিনি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাংবাদিকরা আরও জানতে চান, আপনি তাহলে কী বলেছেন? এ প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমি স্থিতিশীলতার কথা বলেছি। আমি গ্লোবাল কন্টেক্সটে সব জায়গায় যে অস্থিতিশীলতা হচ্ছে- স্ট্যাবিলিটির কথা বলেছি। তখন সাংবাদিকরা জানতে চান, আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে আপনি কী বলেন? এ প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এগুলো তো একেবারে ডাহা..।
কিন্তু কিছু মিডিয়ায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ওই বক্তব্য উল্লেখ না করে তা বিকৃতভাবে প্রচার করেছে বলে দাবি করা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
১৮ আগস্ট, চট্টগ্রামে জন্মাষ্টমী উদযাপনে এক অনুষ্ঠানে আয়োজকরা পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর চেয়েছিলেন।
বিজ্ঞপ্তি অনুসারে,তিনি সম্প্রতি ভারত সফরের সময় ভারত সরকারের কাছে দেওয়া বক্তব্যের বিষয়ে তুলে ধরেন (ওই অনুষ্ঠানে)। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরে নির্বাচন নিয়ে কোনো কথা হয়নি। আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি গৌহাটিতে গিয়েছিলেন এবং সেখানে আসামের মুখ্যমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, স/ন্ত্রাসী তৎপরতা বন্ধ হওয়ায় আসামে স্থিতিশীলতা এসেছে এবং অনেক উন্নয়ন হচ্ছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন ভারত সরকারকে বলেছেন যে উন্নয়নের জন্য, উভয় দেশের কল্যাণের জন্য স্থিতিশীলতা অপরিহার্য। কোনো ধরনের সাম্প্রদায়িক ইস্যুকে বাড়াবাড়ি করে উভয় দেশে যাতে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি না হয় সেজন্য সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। ভারতে যখন সাম্প্রদায়িক সমস্যা দেখা দেয়, তখন তা আমাদের দেশেও আঘাত করে। শেখ হাসিনা স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের প্রতীক। শেখ হাসিনা থাকলে অসাম্প্রদায়িক সমাজ ব্যবস্থা গড়ে উঠবে। তাই তাকে টিকিয়ে রাখার জন্য যা যা করা দরকার আমরা করব। বন্ধুপ্রতিম দেশ হিসেবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাদের সাহায্য চেয়েছেন।
প্রসঙ্গত, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দাবি তিনি যে সব কথা বলেছেন সেগুলো সঠিক ভাবে উপস্থাপন করা হয়নি। তার নামে যে অভিযোগ গুলো করা হচ্ছে সেগুলো সঠিক নয় বিভ্রান্তি ছড়ানোর জন্য এগুলো করা হয়েছে বলে তিনি জানান।