টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে ক্লুলেস মুকুল (২৪) হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটনের দাবি জানিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) টাঙ্গাইল। এছাড়া নিহতের বড় ভাইসহ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত প্রধান আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই এ তথ্য জানায়।
সংবাদ সম্মেলনে পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সিরাজ আমিন বলেন, ছোট ভাইয়ের নানা অপকর্ম ও পৈতৃক বাড়ি ও জমি নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় বড় ভাই সোহেল ছোট ভাইকে হত্যা করেছে। এছাড়াও, মুকুল মাদক ক্রয়-বিক্রয়, বিভিন্ন ব্যক্তি ও এনজিও থেকে ঋণ নেওয়া এবং ঋণগ্রস্ত হওয়া সহ বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত ছিল। অন্যদিকে মাকুল তার বড় ভাইয়ের স্ত্রীকে বিভিন্ন সময় যৌন নিপীড়নের চেষ্টা করে। মুকুলের আচরণে বিরক্ত হয়ে তার বড় ভাই মো: সোহেলে এ হত্যার পরিকল্পনা করে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার পারখি গ্রামের মো. হানিফার ছেলে নিহতের বড় ভাই। সোহেল (৩৪) ও পরেশ চন্দ্র শীল ওরফে নাজমুল হোসেন (৪০) দিনাজপুর জেলার চিরির বন্দর থানার উত্তর ডগারবাড়ি গ্রামের মৃত রমণী কান্ত শীলের ছেলে। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি কোদাল ও নিহতের মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানা যায়, গত ১২ ফেব্রুয়ারি কালিহাতী উপজেলার বগা বিল থেকে মাটি চাপা অজ্ঞাত এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় পিবিআই পুলিশের পরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমান আনসারীর নেতৃত্বে একটি চৌকস দল ছায়া তদন্ত শুরু করে।
পরে নিহতের স্ত্রী লিমা আক্তার তার স্বামী মুকুলকে শনাক্ত করেন। মুকুল কালিহাতী উপজেলার পারখি গ্রামের মো. হানিফার ছোট ছেলে। সে সখীপুর উপজেলার ইন্দরজানি এলাকায় শ্বশুর বাড়িতে থাকত এবং খুঙ্গারচালা বাজারে বৈদ্যুতিক সামগ্রীর ব্যবসা করত। গত ২৭ জানুয়ারি বিকেলে তিনি ব্যবসা থেকে বেরিয়ে যান। পরে রাতে তিনি তার শ্বশুরকে ফোনে জানান, তিনি কালিহাতীতে আছেন এবং রাতে ফিরবেন না। এরপর থেকে তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
১২ ফেব্রুয়ারি ভোরে বগা বিলের ধানক্ষেতের গলিতে ভেজা মাটিতে পুঁতে রাখা লাশের হাত ও মাথার খুলি দেখে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়রা। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি মুকুলের স্ত্রী লিমা আক্তার বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ ঘটনার পর বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে গাজীপুর ও ঢাকা জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ডিসিস্টের বড় ভাই সোহেল ও তার সহযোগী পরেশ চন্দ্র শীল ওরফে নাজমুল হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তারা হত্যার কথা স্বীকার করে।
পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সিরাজ আমিন জানান, আজ তাদের আদালতে হাজির করা হবে। আসামিরা স্বেচ্ছায় দোষ স্বীকার করতে রাজি হয়েছে।