ই-কমার্স কোম্পানি ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. রাসেল বলেন, যেসব গ্রাহক ও ব্যবসায়ী ইভ্যালির কাছে টাকা পান, আমি আপনাদের কষ্ট অনুভব করছি। আমি মনে করি যদি ইভ্যালিকে ব্যবসা করার অনুমতি দেওয়া হয়, আমি কয়েক দিনের মধ্যে আপনাদের সমস্ত ঋণ পরিশোধ করে দেব। কখনোই ভাববেন না আমি পালিয়ে যাব। দরকার হলে মারা যাব কিন্তু বিদেশে পালাব না।
শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) ইভেলির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ‘ফেসবুক লাইভ উইথ সিইও’ শিরোনামের লাইভ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন রাসেল। তিনি বলেন, আগামী দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে আমরা ঋণ পরিশোধ শুরু করব। টাকার পরিমাণ পরে জানানো হবে। জাতীয় নির্বাচনের পর গ্রাহক, ব্যবসায়ী ও গণমাধ্যমের সব প্রশ্নের উত্তর দিতে সংবাদ সম্মেলন করব।
রাসেল বলেন, ইভ্যালিকে অনেকেই ভালোবাসে বলেই আজ ইভ্যালি ফিরে আসতে পেরেছে। ইভলির দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ অল্প কিছু লোকই নিজের বা অন্যদের দ্বারা ইভলির বিরুদ্ধে অপপ্রচার ছড়িয়েছে। ইভ্যালিকে ব্যবসার সুযোগ দেওয়া হলে রাসেল বা ইভ্যালির চেয়েও বেশি লাভবান হবে এদেশের মানুষ। যারা ইভ্যালিতে কেনাকাটা করে পণ্য পাননি এবং যারা ইভ্যালিতে পণ্য দিয়ে পেমেন্ট পাননি, তারাও উপকৃত হবে।
লাইভে ইভ্যালির সিইও আরও বলেন, ‘প্রয়োজনে আমাকে গৃহবন্দি করুক, না হলে অফিসে বন্দি করে রাখুক। প্রয়োজনে এখানেই খাব, এখানেই ঘুমাব। আমি বিদেশে কেন পালাব? দেশেই মারা যাব কিন্তু বিদেশে পালাব না। কখনোই ভাববেন না আমি পালিয়ে যাব। আপনারা সব বলেন কিন্তু কেউ কোনো ট্যাগ লাইন দিয়েন না, যে আমি দেশ ছেড়ে পালাব। আমি কোর্টে আমার পাসপোর্ট জমা দিয়ে এসেছি; আমার দেশ ছেড়ে পালানোর কখনোই চিন্তা ছিল না।’
ইভ্যালি বাজারে নতুন অফার নিয়ে এসেছে তা উল্লেখ করে রাসেল বলেন, “আজকের প্রচারাভিযান আমি যা উপার্জন করি তা দিয়ে বিলাসবহুল জীবনযাপন করা নয়।” বরং আজকের লাভের টাকা দিয়ে অন্তত কয়েকজন গ্রাহকের জন্য এই ঋণ থেকে মুক্তি চাই। এতে আমার চাপ কিছুটা কমবে।
ঋণ পরিশোধের প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে আমাদের কাছে ৩৫ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। নিঃসন্দেহে এটি একটি বড় পরিমাণ। যদি আমরা স্মল স্কেলে চিন্তা করি। কিন্তু বৃহৎ স্কেলে চিন্তা করলে আজকের দিনে ইভ্যালি বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ই-কমার্স। এই জনপ্রিয় ই-কমার্স হওয়ার কারণ এ প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যবসায়ী ও গ্রাহক। গ্রাহক কখনোই আমরা ধরে রাখতে পারতাম না, যদি মার্চেন্টরা স্পেশাল প্রাইস না দিতেন। এই ব্যবসায়ীরা যে বিশেষ মূল্য আমাদের দেন, সেখান থেকেই আমরা একটা প্রোফিট রেখে সেগুলো সেল করি। আপনার মনে হতে পারে, এত ঋণ কিন্তু দেশের ৫ শতাংশ মানুষও যদি ইভ্যালি থেকে তাদের পণ্য কেনে তাহলে এই ঋণ পরিশোধ করা খুব সহজ হবে।
প্রসঙ্গত, ইভ্যালির প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও মোহাম্মদ রাসেল ১৮ ডিসেম্বর কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি পান। এর আগে ২০২১ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাসেল এবং কোম্পানির চেয়ারম্যান ও তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।