বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা একটু সংকটের দিকে। আর এই কারনে সারা দেশে এ নিয়ে ছড়িয়েছে নানা ধরনের গুজব। বিশেষ করে ব্যাংক গুলোতে মানুষ তাদের জমানো অর্থ আর রাখতে চাইছে না কোনোভাবেই। অনেকেই টাকা তুলে নিচ্ছেন সংকটের ভয়ে। এবার এ নিয়ে কথা বলেছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ‘ব্যাংকে টাকা নেই’, এ ধরনের গুজবে কান না দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংকে টাকার কোনও সমস্যা নেই। দেশের প্রতিটি ব্যাংকে টাকা আছে।
আজ মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের জাতীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের এই সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য্য।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমি একটা কথা বলতে চাই, কিছু গুজব ছড়ানো হচ্ছে। ব্যাংকে টাকা নেই, টাকা না থাকায় মানুষ টাকা তুলে বাসায় নিয়ে যাচ্ছে। আমি আগেও বলেছি এবং এখনও বলছি- চোরের সঙ্গে তাদের কি কোনো চুক্তি আছে যে, ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে বাড়িতে রাখলেই হবে চোরের বাসা! চোর চুরি করে খেতে পারে! তবে একটা কথা বলি—আমি এসডিজি সচিব, অর্থ সচিব এবং আমাদের বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে কথা বলেছি। আজ সকালে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে আমার আলোচনা হয়েছে। আমাদের কোনো সমস্যা নেই, প্রতিটি ব্যাংকে টাকা আছে। তাই বলব- গুজবে কান দেবেন না। এসব মিথ্যা কথা বলে আজ তারা ভুত দেখিয়ে বিভ্রান্ত করতে চায়। একটা ক্লাস আছে, তারা এটা করছে, কারণ তারা মিথ্যা বলতে পারদর্শী।’
উন্নত দেশগুলো ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আজ আমাদের দারিদ্র্যের হার কমেছে। মানুষের খাদ্যের অভাব নেই। প্রচুর খাদ্য আছে। আল্লাহর রহমতে উৎপাদনও ভালো হয়েছে। আমরা নিচ্ছি। আগে থেকে সব কিছুর যত্ন নিন।উন্নত দেশগুলো হিমশিম খাচ্ছে- আমি জানি ইংল্যান্ড, একটি পরিবার দোকানে এক প্যাকেটের বেশি ডিম খেতে পারে না।একের বেশি রুটি কিনতে পারে না।সবকিছুই রেশনেড।বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে ১৫০বার, একটি পরিবার হিটার চালু রেখে একটি ঘরে বসে। হিটার চালু না করে সে ঠান্ডায় বাঁচতে পারে না। তাই তাদের সেভাবেই থাকতে হবে। সে অবস্থায় বাংলাদেশের অবস্থা খুবই ভালো। এমনকি তাই আমি বলবো যখন বিশ্বব্যাপী দুর্ভিক্ষ অর্থাৎ হতাশা দেখা দেবে তখন এর প্রভাব আমাদের দেশেও অনুভূত হবে।তাই আমাদের আগে থেকেই সতর্ক থাকতে হবে।যেমন খাদ্য উৎপাদন, বিদ্যুৎ, পানি, জ্বালানি সবকিছুই হওয়া উচিত। ব্যবহারে লাভজনক। আমি সবাইকে বলব- বাসা থেকে বের হওয়ার সময় সুইচ অফ করুন মোবাইল বা ল্যাপটপের চার্জার চুলকায়। প্রত্যেকেরই এমন মিতব্যয়ী হওয়া উচিত। আগামী দিনে বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার ধাক্কা যেন বাংলাদেশে না লাগে। এদিকে, সবার মনোযোগ দেওয়া উচিত।
এ ছাড়াও এই সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রলীগকে তাদের পূর্বের কথা ও আদর্শ স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। দেশ ও জনগণের কাজে কিভাবে নিয়োজিত থাকতে হয় তা নিয়ে কাজ করতে বলেছেন।