সম্প্রতি কিছুদিন আগেই প্রেমের টানে তুরস্ক থেকে বাংলাদেশে ছুটে এসেছিলেন তুর্কি তরুণী আয়েশা ওজতেকিন। ইতিমধ্যে ভালোবাসার মানুষের সঙ্গে ঘরও বেঁধেছেন তিনি। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তুরস্কে পড়াশোনার সুবাদে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার হুমায়ুন কবিরের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে আয়েশার। আর এভাবে দীর্ঘ দিন চুটিয়ে প্রেমের পর অবশেষে গত শুক্রবার বাংলাদেশে এসে মনের মানুষের সঙ্গে ঘর বেঁধেছেন তিনি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আর সংবাদ মাধ্যমগুলোতে বিয়ের ব্যাপক প্রচারে তিনি এখন ময়মনসিংহের মানুষের কাছে বেশ পরিচিত। পরিবারের সঙ্গে কোথাও বেড়াতে গেলে মানুষ পথ আগলে সেলফি তোলার বায়না ধরেন। প্রথম আলো কথা বলেছে তাঁর সঙ্গে।
কয়েক দিন ধরে বাংলাদেশে আছেন। কেমন লাগছে?
আয়েশা ওজতেকিন: খুব ভালো লাগছে। সবচেয়ে ভালো লাগছে বাংলাদেশের মানুষ। এ দেশের মানুষ খুব সহজে মানুষকে ভালোবাসতে জানে। এটা আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে।
গত শুক্রবার আপনাদের বিয়ে হয়েছে। এই কয় দিনে স্বামীর সঙ্গে কোথায় কোথায় বেড়াতে গেলেন?
আয়েশা ওজতেকিন: খুব বেশি দূরে কোথাও যাওয়ার সুযোগ হয়নি। মুক্তাগাছার রসুলপুরে দাদার বাড়িতে বেড়িয়েছি। আর ময়মনসিংহ শহরের পার্কে (জয়নুল উদ্যান) গিয়েছি। তবে যেখানেই যাচ্ছি, সেখানে মানুষ আমাদের দেখে এগিয়ে আসছেন। সেলফি তুলতে চাইছেন। আমরা হাসিমুখে সবার সঙ্গে ছবি তুলছি।
বাংলাদেশে আসার পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রচারের কারণে আপনি খুব পরিচিত হয়ে গেছেন। এটি কোনো বিড়ম্বনার সৃষ্টি করেছে?
আয়েশা ওজতেকিন: না, কোনো বিড়ম্বনা হয়নি। মানুষ ছবি তুলতে চাইলে আমরা খুব আনন্দের সঙ্গে ছবি তুলি। বাংলাদেশের মানুষ খুব মিশুক। এটা ভালো লাগার বিষয়।
বিয়ের আগে–পরে মিলিয়ে ২০ দিন বাংলাদেশে আছেন। এর মধ্যে কতটুকু মানিয়ে নিতে পেরেছেন?
আয়েশা ওজতেকিন: মানিয়ে নেওয়া কোনো সমস্য নয়। সবাই আমার সঙ্গে খুব ভালোভাবে মিশছে। ছবি তুলে দিন কাটছে। বেশ উপভোগ করছি সবকিছু।
আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
আয়েশা ওজতেকিন: তুরস্কে আমার এখনো উচ্চশিক্ষা চলছে। পড়াশোনা শেষ হলে আমি বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে চাই। এখানে চিকিৎসক হিসেবে কাজ করব (তিনি চিকিৎসা বিজ্ঞানে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করছেন)। একটা টার্কিস রেস্তোরাঁ খুলব। আর এখানে নির্বাচন করতে চাই। নির্বাচন করার কারণ হলো, আমি এ দেশে আসার পর থেকে দেখছি নানা অনিয়ম। যেখানে–সেখানে ময়লা–আবর্জনা পড়ে থাকে। রাস্তায় ময়লা ফেলার ঝুড়ি পর্যন্ত নেই। বাংলাদেশের মানুষ খুব মেধাবী; তবে কোনো ক্ষেত্রে হয়তো তাঁদের সঠিকভাবে পরিচালনা করা হচ্ছে না।
তুরস্কে আপনার মা–বাবা আর স্বজনদের কথা মনে পড়ছে?
আয়েশা ওজতেকিন: তাঁদের খুব মিস করছি। তবে প্রতিদিন আমার মা–বাবা, খালা–খালুসহ সবার সঙ্গে যোগাযোগ হচ্ছে।
এদিকে পত্রবধু হিসেবে তুর্কি তরুণী আয়েশা ওজতেকিনকে পেয়ে হুমায়ুন কবিরের পরিবার যে অখুশি হবে, তা কিন্তু একদমই নয়। বাংলাদেশি পুত্রবধু না পেলেও আয়েশা ওজতেকিনকে পেয়ে খুব খুশি তারা। তাদের মঙ্গল কামনা করে সবার কাছে দোয়াও চেয়েছেন তারা।