সোশ্যাল মিডিয়ায় রাতারাতি ভাইরাল হয়ে গিয়েছিলেন ভারতের বীরভূমের কুড়ালজুলির বাসিন্দা ভুবন বদ্যাকার। তিনি মূলত বাদাম বাদাম দাদা কাঁচাবাদাম, আমার কাছে নাই গো বুবু ভাজা বাদাম, আমার কাছে আছে শুধু কাঁচাবাদাম―গান গেয়ে আলোচনায় আসেন। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে টলিউড ইন্ডাস্ট্রির তারকাদের কাছে পৌঁছে গিয়েছে তাঁর নাম।
ভুবন একজন সংগীত তারকা হিসাবে বিখ্যাত হয়েছিলেন কিন্তু ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে এসে আধুনিক সময়ে প্রতারিত হন। পড়ালেখা সম্পর্কে তেমন কিছু না জানার কারণে তিনি সমস্যায় পড়েন। যে গান গেয়ে আলোচনায় এসেছেন, সেই গানই প্রকাশ করলে কপিরাইট নিয়ে বিপাকে পড়েন। ভুবন বদ্যাকার পৃথিবীর নানা ঝামেলার মধ্যে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে অনেক চেষ্টা করেছেন।
ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, অনেক ঝড়ের পর কপিরাইট সমস্যার সমাধান পেয়েছেন ভুবন বাদ্যকার। গায়ক এটা নিয়ে খুবই উচ্ছ্বসিত। তবে এ বিষয়ে আদালত কী সিদ্ধান্ত দেবেন সেটাই দেখার বিষয়।
ভুবন বাদ্যকর বলেন, গানটি যখন বীরভূম থেকে প্রথম ছড়িয়ে পড়ল তখনই সবাই রিমিক্স করতে থাকল। বাঁকুড়া থেকে বিশ্বজিৎ সাউ এসেছিলেন। আমি তাকে কপিরাইট দিয়েছিলাম। সেখান থেকে ঘুরে এসে ইসলামবাজার থেকে একজন আসেন। তার নাম ছিল গোপাল ঘোষ। তিনি আমায় টাকা দেয়ার কথা বলছিল বারবার। তিন লাখ টাকা দেয়ার কথা বলেছিল। কিন্তু কোনোটাই নিজ অ্যাকাউন্ট থেকে দেয় না। ভাইয়ের অ্যাকাউন্ট থেকে দুবার টাকা দিয়েছে।
‘কাচা বাদাম’ খ্যাত এই গায়ক আরও বলেন, কিছু কাগজে আমার স্বাক্ষরও নিয়েছেন। আমার সাথে সম্পূর্ণ প্রতারণা হয়। আমি ইংরেজি জানি না পরে মামলা করি। এবার কপিরাইটও দিতে পারব না আর।
এদিকে ভুবন বদ্যাকরের পাশে দাঁড়িয়ে দিলখুস খান বলেন, আমরা শুরু থেকেই ভুবনবাবুর সঙ্গে ছিলাম। এখনও আছি, ভবিষ্যতেও থাকব। তার গানে কপিরাইট সমস্যা নেই। বীরভূম চ্যানেল যখন প্রথম ভাইরাল হয়, তখন বিশ্বজুড়ে হাইলাইট হয়েছিল বিষয়টি। কিন্তু দু’দিন পরই দেখা যায় রিমিক্স হচ্ছে গানটি।
তিনি বলেন, আমরা বিশ্বজিতের কাছেই প্রথম কপিরাইট দেই। তিন-চার দিন পর গোপাল ঘোষ এসে বললেন, শিল্পী ভাতার নামে সব করা হবে। আর ভাতার কাগজ হিসেবে ভুবনবাবুর স্বাক্ষর নেন। সে বেশি লেখাপড়া জানে না। তাকে লোভ দেখিয়েছে মাসে চল্লিশ হাজার টাকা করে দেয়া হবে। এভাবেই ফাঁদে ফেলা হয়েছে তাকে। অথচ গোপাল বাবুর কাছে কোনো ট্রেড লাইসেন্স বা কাগজপত্র নেই। আমরা প্রথম থেকেই কপিরাইট বিশ্বজিতকে দিয়েছি।
এছাড়া এলম বাজারের গোপাল সাহা ও তার কোম্পানি গোধুলী বেলা মিউজিকের বিরুদ্ধে অজান্তে কপিরাইট কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন ভুবন বদ্যাকার।
তিনি অভিযোগ করেন, বেঙ্গল রিমিক্স মিউজিকের সঙ্গে কপিরাইট চুক্তির পরও গোপাল সাহা তাকে আইপিআরএস শিল্পী ভাতা দেওয়ার নামে কপিরাইট মালিকানা লিখে নেন। এর জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কপিরাইট বোর্ডের কাছে কপিরাইট ফেরত চেয়ে অভিযোগ করেছেন ভুবন বাদ্যকর।