**টাইটেল: বৃহৎ ‘ইসলামী জোট’ গঠনের উদ্যোগ: কোন দলগুলি একত্রিত হতে চায়**
৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতন ও দেশত্যাগের পর বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতি তোলপাড় হয়ে গেছে। সরকার পতনের পর বিএনপি, জামায়াতসহ নানা রাজনৈতিক দল মাঠে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এর মধ্যে ইসলামী দলগুলো একটি বৃহৎ ‘ইসলামী জোট’ গঠনের পরিকল্পনা করছে।
জামায়াতে ইসলামী এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এই উদ্যোগে সামনের সারিতে রয়েছে। তারা সমমনা দলের নেতাদের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেছে এবং জোট গঠনের বিষয়ে আলোচনা করছে।
জানা গেছে, জামায়াতে ইসলামী এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ ও খেলাফত মজলিসের মতো পুরনো সহযোগীদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। এছাড়া, জাকের পার্টি, নেজামে ইসলাম পার্টি ও ইনসানিয়াত বিপ্লবের মতো অন্যান্য ইসলামী দলের সঙ্গেও নিয়মিত আলোচনা চলছে।
ইসলামী ও সমমনা দলের নেতারা জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের শাসনামলে ১৫ বছর ধরে তারা নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। তাই, মতভেদ দূর করে একত্রিত হওয়ার জন্য ইতিবাচক আলোচনা চলছে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ ইউনুস আহমাদ জানান, ‘‘আমরা পর্যায়ক্রমে প্রতিটি ইসলামী দলের সঙ্গে আলোচনা করব। আমাদের উদ্দেশ্য কোরআন ও সুন্নাহর আলোকে সাম্য, মানবিক মর্যাদা এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা।’’
বৃহৎ জোট গঠনের লক্ষ্যে ২০ আগস্ট জামায়াতে ইসলামী প্রধান ডা. শফিকুর রহমান কওমি মাদরাসাভিত্তিক কয়েকটি ইসলামী দলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের সাথে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে এবং গত ১৫ বছরে নির্যাতনের শিকার আলেম-উলামাদের সঙ্গেও মতবিনিময় করা হয়েছে।
জামায়াতের পক্ষ থেকে একটি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘‘ইসলামী দল ও সংগঠনগুলোর মধ্যে জাতীয় ঐক্য ও সংহতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ইসলামী আদর্শ প্রতিষ্ঠায় আমাদের মধ্যে ঐক্য গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়েছে।’’
জামায়াতে ইসলামী সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার জানান, ‘‘আমাদের মূল লক্ষ্য অভিন্ন। আমরা সমমনা দলের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা করছি। ছোটখাটো মতপার্থক্য আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করার চেষ্টা চলছে।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলীয় জোটের শরিক ইসলামি দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করার কোনও পরিকল্পনা আমাদের নেই। আমরা পতিত স্বৈরাচারের সহযোগীদের সঙ্গে আলোচনা করব না।’’
সূত্রের মতে, বাংলাদেশে নিবন্ধিত ৪৪টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ১১টি ইসলামী দল রয়েছে। এছাড়া, অনিবন্ধিত ইসলামী দল মিলিয়ে মোট সংখ্যা প্রায় ৭০। এসব দলের মধ্যে ধর্মীয় রীতিনীতি ও মতাদর্শ নিয়ে নানা মতপার্থক্য বিদ্যমান।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব ইউনুস আহমাদ জানান, ‘‘আমাদের অনৈক্যের কারণে ১৫ বছর ধরে ফ্যাসিস্ট শাসনের নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে। ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আমরা আলোচনা চালিয়ে যেতে চাই এবং মতপার্থক্য দূর করতে হবে।’’