ভোটে অনিয়মের অভিযোগে সদ্য সমাপ্ত লক্ষ্মীপুর-৩ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ উপনির্বাচনের গেজেট ফলাফল প্রকাশ স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আজ মঙ্গলবার বিকেলে ইসি সচিব মোঃ জাহাঙ্গীর আলম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট জেলার ডিসি, এসপি ও নির্বাচন কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
গত ৫ নভেম্বর লক্ষ্মীপুর-৩ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ সংসদীয় আসনের উপনির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ উঠেছে। ভোটার তালিকায় ত্রুটি রয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন প্রার্থীরা। এর মধ্যে লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের একটি কেন্দ্রে সাবেক এই ছাত্রলীগ নেতাকে প্রকাশ্যে নৌকা প্রতীকে স্ট্যাম্প দিতে দেখা গেছে। সিল মারার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
মঙ্গলবার উপনির্বাচনের ফলাফল গেজেট হওয়ার কথা ছিল। লক্ষ্মীপুর-৩ উপনির্বাচনে বিজয়ী গোলাম ফারুক পিংকু আজ নির্বাচন কমিশনে ছিলেন। আনিসুর রহমানের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো.
বেলা ৩টার দিকে নির্বাচন ভবনে প্রবেশ করেন কমিশনার আনিচুর রহমান। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে পিংকুকে ইসি থেকে বের হতে দেখা যায়।
সাবেক ছাত্রলীগ নেতার ভিডিওতে নৌকা প্রতীকে সিল মারার বিষয়ে সাংবাদিকরা তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওই ব্যক্তি ছাত্রলীগের সদস্য নন।
নির্বাচন কমিশনে আসার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার একটি হজ এজেন্সি আছে। নির্বাচন কমিশনের সচিব থেকে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ডিএস (উপসচিব) ড. জাহাঙ্গীর আলম ও ধর্ম সচিবের পর থেকে নির্বাচন কমিশনার আনিসুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালও আমাকে ব্যক্তিগতভাবে চেনেন।
তিনি বলেন, আজাদ (অভিযুক্ত সাবেক ছাত্রলীগ নেতা) এক সময় লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। তবে এখন তিনি ছাত্রলীগের সদস্য নন। বিতর্কিত কাজ করায় প্রায় দুই বছর আগে তাকে বহিষ্কার করা হয়।
গোলাম ফারুক পিংগুও অভিযোগ করেন, আজাদ অন্য কোনো উদ্দেশ্যে এসব কাজ করেছেন। তিনি বলেন, ওই কেন্দ্রে ভোট রয়েছে মাত্র চার হাজার। সেই ভোট বাদ দিলেও আমিই বিজয়ী।
এ সময় পিংকুর সঙ্গে থাকা সাজু নামে এক ব্যক্তি বলেন, ওই ছেলেটি ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত নেতা। সে নিজেই ভিডিও ধারণ করে পরদিন চলে যায়।
তিনি বলেন, ‘সংসদ অধিবেশনও হয় না। শুধু একটি গ্যাজেট…মনের শান্তি। খরচ হয়েছে পাঁচ-ছয় কোটি টাকা। একজন গেজেট দেবেন আর একজন শপথ নেবেন। এ ছাড়া আর কোনো কাজ নেই।
নির্বাচনে পাঁচ-ছয় কোটি টাকা খরচ হয়েছে? নির্বাচন কমিশনার আনিকুর রহমানের পিএস কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এমন প্রশ্নের জবাবে ওই ব্যক্তি বলেন, হ্যাঁ, ১১৫টি কেন্দ্র। ১১৫টি কেন্দ্রে খরচ হয়েছে দেড় লাখ টাকা। ভোটের আগের রাতে নগদ টাকা! নেতা-কর্মীদের খাবার খরচ। সকালের নাস্তা পরিবেশন করা হয়। দুপুরের খাবার দিতে হবে। ৪-৫ কোটি টাকা ব্যয়। কোন লাভ নেই! সুবিধা হলো, একটাই সাইনবোর্ড দরকার- সাবেক এমপি।’ এ সময় তার পাশে ছিলেন গোলাম ফারুক পিংগু।