আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম ভোটের মাঠ থেকে সরে এসে পুনরায় নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে মনোনয়নপত্র তুলেছেন।
রোববার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
এ সময় হিরো আলম বলেন, আমরা প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে বলতে চাই, আপনারা তিনশ আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী নিয়েছেন। কিন্তু আমরা যারা আমজনতা যাচ্ছি, তাদের আসন কোথায়?
হিরো আলম বলেন, আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও নির্বাচনে তাদের দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রয়োজন ছিল না।
তিনি বলেন, ব্যারিস্টার সুমনের যে আসন, সেখানে তিনি কিন্তু পার হবেন। সেখানে কিন্তু আওয়ামী লীগের প্রার্থী হেরে যাবে। কারণ নির্বাচনে দেখাবে, সেখানে ফেয়ার নির্বাচন হয়েছে। ফল কিন্তু আমি আগেই বলে দিলাম, মিলিয়ে নিয়েন। ব্যারিস্টার সুমন প্রথমে দলীয় প্রতীকে মনোনয়ন চাইলেও দেওয়া হয়নি। তবে এরাও আওয়ামী লীগ ও তাদের দলের কর্মী।
নিজের প্রার্থিতা বাতিল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আপনারা সবাই বলেন— আমি ভোটের দিন প্রার্থিতা উইথড্র (বাতিল) করব। কেন উইথড্র করতে চেয়েছি, এই যে পাতানো নির্বাচন, সারা বাংলাদেশের কেউ নির্বাচনে আসতেছে না। তারা কেন আসতেছে না? তারা পরিষ্কারভাবে বুঝতে পেরেছে যে, এই পাতানো নির্বাচনে তারা (আওয়ামী লীগ) প্রতিটা আসন ভাগ করে নিয়েছে। এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে লাভ হওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। আমি আজকে বলেছিলাম, এই নির্বাচনে আমি প্রার্থিতা উইথড্র করব।
কারণ নির্বাচনের সময় আমাকে মারধর ও অপমান করা হয়েছে। শুরুতে আমি ভেবেছিলাম এই নির্বাচন একটি সুষ্ঠু নির্বাচন। আমি নিজেই দুদিন আগে বলেছিলাম, নির্বাচনে আসুন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে একতরফা আখ্যা দিয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন হিরো আলম। তিনি বলেন, আমি প্রার্থিতা উইথড্র করব না। আপনারা নিশ্চয়ই বলবেন কেন করব না?
আপনারাই হিরো আলমকে হিরো বানিয়েছেন এবং আপনারাই আবার হিরো আলমকে জিরো বানিয়ে দেন। আপনারাই বলেছেন যে হিরো আলম টাকার কারণে নির্বাচন থেকে সরে আসছেন, মার খাওয়ার ভয়ে নির্বাচন থেকে সরে আসছেন। কিন্তু না, আমি এর আগেও নির্বাচন করেছি। হিরো আলম অন্যায়ের প্রতিবাদের প্রতীক হিসেবে নির্বাচন করেছিল। এই নির্বাচন পুরোটাই সরকারের সাজানো নির্বাচন। এই নির্বাচনে মারামারি হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। এই নির্বাচন কতটা সুষ্ঠু হয়, সেটা দেখানোর মতো যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী আছে, তারা কেউ নেই। এই নির্বাচন থেকে আমি যে কোনো সময় উইথড্র করতে পারি। নির্বাচনে টিকে থাকাটাই বড় কথা।
হিরো আলম বলেন, আপনারা আমার সঙ্গে থাকবেন এবং দেখবেন— এই নির্বাচনে কীভাবে জোর করে সিল মারে।নির্বাচন কতটা সুষ্ঠু তা দেখানোর জন্যও একজন লোক থাকা দরকার। আমি হচ্ছি সেই। কিন্তু আমি যে কোনো সময় নির্বাচন থেকে সরে যেতে পারি।
এর আগে গত বুধবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন তিনি।