সম্প্রতি বাংলাদেশের ব্যাংকগুলো ছড়িয়ে পড়েছে নানা ধরনের গুজব। বিশেষ করে সকলে বলছে অর্থ শুন্য হয়ে যাচ্ছে দেশের ব্যাংকগুলো। সেই সাথে অর্থশূন্য হয়ে পড়ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর এই খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই সারা দেশে শুরু হয়েছে অস্থিরতা। অবশেষে এ নিয়ে কথা বললো বাংলাদেশ ব্যাংক। বিভিন্নভাবে ভুল তথ্যের মুখে ব্যাংকিং ব্যবস্থায় তারল্যের বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত সোমবার (১৪ নভেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, বর্তমানে দেশের ব্যাংকগুলোর কাছে ১ লাখ ৬৯ হাজার কোটি টাকা বেশি রয়েছে।
গত ১০ দিনে ৫২টি ব্যাঙ্ক ১৩ হাজার কোটি টাকার ঋণ খুলেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র জিএম আবুল কালাম আজাদ বলেন, ব্যাংকে তারল্য সংকট এবং বাণিজ্যিক ঋণ খোলার বিষয়ে কয়েকটি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যেসব বার্তা ছড়িয়েছে তা গুজব ও ষড়যন্ত্র।
ব্যাংকে নগদ পাওয়া যায় না। ডলার সংকটে ওপেন লেটার অব ক্রেডিট (এলসি)। ঝুঁকিতে গ্রাহকের আমানত।’ দৈনিক প্রথম আলোসহ কয়েকটি গণমাধ্যমের এমন প্রতিবেদন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। আবার এসবকে পুঁজি করে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চেষ্টায় লিপ্ত একটি মহল।
এ বিষয়ে প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারির একদিন পর কেন্দ্রীয় ব্যাংক আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে ব্যাংকিং খাতে তারল্য ও বাণিজ্যিক ঋণ খোলার পরিসংখ্যান তুলে ধরে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র বলেন, প্রায় দুই লাখ কোটি টাকার অতিরিক্ত তারল্য রয়েছে। তাই আমানত নিয়ে গ্রাহকদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থায় তারল্য সংকট নেই। ব্যাংকিং ব্যবস্থায় বর্তমানে ১ লাখ ৬৯ হাজার ৫৮৬ কোটি টাকার অতিরিক্ত তারল্য রয়েছে।
চলতি মাসের প্রথম ১০ দিনে পণ্য আমদানির জন্য ১৩ হাজার কোটি টাকার ঋণ খোলা হয়েছে। আগের মাসের একই সময়ে যা ছিল প্রায় ১২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ প্রায় ৩০০ কোটি টাকা বেশি। ঋণপত্র খোলা ও বন্ধের খবরকে ষড়যন্ত্র বলে মন্তব্য করেন মুখপাত্র।
তিনি বলেন, চলতি মাসের ১০ তারিখে ৫৫টি ব্যাংক এলসি খুলেছে। যদি ৩০ লাখের বেশি এলসি খোলা হচ্ছে, তাহলে আমরা মনিটরিং করছি। কী আমদানি হচ্ছে সেদিকে নজর রাখছি।
এছাড়া রেমিট্যান্স প্রবাহও স্বাভাবিক রয়েছে। চলতি মাসের প্রথম ১০ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ৬ হাজার ৭৯৮ কোটি টাকা। যা আগের মাসের চেয়ে ২০৬ কোটি টাকা বেশি। এসব মিলিয়ে আমদানি-রফতানিতে রাজস্ব ফাঁকির তথ্য পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
প্রসঙ্গত, এ দিকে ব্যাংকগুলো নিয়ে চিন্তা নেই বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলো। তারা বলছে গ্রাহকদের রাখা আমানতের কোনো ক্ষতি হবে না। এ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক তড়িঘড়ি দিয়েছিলো একটি গণবিজ্ঞপ্তিও।