কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেশের সকল ব্যাংকের নীতিমালা প্রণয়ন করে থাকে এবং বাণিজ্যিক ব্যাংকসহ সকল ব্যাংকের সুদের হার নির্ধারণ এবং তা পরিবর্তন করে থাকে। তবে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকট বিশেষ করে রিজার্ভ সংকট দেখা দেওয়ায় ব্যাংক ঋণের ক্ষেত্রে সুদের হারে এই মুহূর্তে কোন পরিবর্তন আনতে পারছে না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা স্থিতিশীল রাখতে সকল ধরনের পরিকল্পনা গ্রহণ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তিনি ব্যাংকগুলোর সুদের হার পরিবর্তন নিয়ে কথা বলেছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার বলেছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে ব্যাংক ঋণের সুদের সর্বোচ্চ সীমা উঠিয়ে দেয়া যাচ্ছে না। রউফ তালুকদার আরো বলেন, সুদের হারের এক অংকের নির্দেশনা তুলে দিলে বেসরকারি খাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
শনিবার (২৭ আগস্ট) বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
গভর্নর বলেন, পুরো বিশ্ব চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তাই এ মুহূর্তে ঋণের সুদের সর্বোচ্চ সীমা উঠানোর কোনো সিদ্ধান্ত আসবে না। উঠিয়ে দিতে গেলে সরবরাহ ব্যাহত হবে।
রউফ তালুকদার বলেন, ইতোমধ্যে ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা ও সম্ভাবনা জানার চেষ্টা করেছি। দেশে বর্তমান ডলার সংকট বেশিদিন থাকবে না। দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে সব ঠিক হয়ে যাবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জুন শেষে ব্যাংকিং খাতে মোট বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৩ লাখ ৯৮ হাজার ৫৯২ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১ লাখ ২৫ হাজার ২৫৮ কোটি টাকা খেলাপি হয়েছে, যা এখন পর্যন্ত খেলাপি ঋণের সর্বোচ্চ পরিমাণ।
এদিকে ঋণ ও বিনিয়োগে সর্বোচ্চ সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিট বাস্তবায়নের ঘোষণা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ক্রেডিট কার্ড ছাড়া সব ধরনের ঋণ ও বিনিয়োগে সর্বোচ্চ সুদের হার হবে ৯ শতাংশ। ব্যাংকগুলো চাইলে প্রতিযোগিতামূলক ভিত্তিতে কম সুদের হার নির্ধারণ করতে পারে। ব্যাংকগুলো ১ এপ্রিল, ২০২০ থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করে আসছে।
উল্লেখ্য, বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে যে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংকট দেখা দিয়েছে সেটা কাটিয়ে ওঠার পর ব্যাংক সুদের হার নতুনভাবে নির্ধারণ করা যেতে পারে বলে মনে করছেন অর্থনৈতিক বিশ্লেষকেরা। এদিকে দেশের অর্থনীতির যে ব্যালেন্স সেটা কবে নাগাদ ঠিক হবে সেটা নিয়েও তারা অনিশ্চয়তার কথা বলেছেন, কারণ বাংলাদেশের অর্থনীতি আন্তর্জাতিক অর্থনীতি তারা অবশ্যই প্রভাবিত হবে।