সাধারণ মানুষের ধারণা কাস্টমসে যারা চাকরি করেন তারা বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়ে যান খুব কম সময়ের মধ্যে। সাধারন মানুষের ধারণা কাস্টমস এর মাধ্যমে সেখানকার নিয়োজিত কর্মকর্তা কর্মচারীরা বিপুল পরিমাণ অর্থ ঘুষ নিয়ে থাকেন। এবার রাজধানীর আরমানিটোলার কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটে নিজেদের পরিচয় লুকিয়ে অর্থাৎ ছদ্মবেশে অভিযান পরিচালনা করে দুর্নীতি দমন কমিশনের অর্থাৎ দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম তারা এই অভিযান পরিচালনার সময় ভ্যাট সেবা নেওয়ার জন্য যান।
এ সময় ঘুষের বিনিময়ে অনৈতিক সুবিধা দিতে চান একজন কর্মকর্তা। যার রেকর্ড টিমের কাছে রয়েছে। এছাড়া আরও কয়েকজন কর্মকর্তার অসহযোগিতার প্রমাণ পেয়েছে দলটি। বুধবার (১০ আগস্ট) দুপুরে অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মোহাম্মদ শফিউল্লাহ।
তিনি বলেন, ঘুষের বিনিময়ে নির্ধারিত পরিমাণের চেয়ে কম ভ্যাট আদায় করে সরকারি রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুদকের সহকারী পরিচালক আফরোজা হক খানের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি এনফোর্সমেন্ট টিম এ অভিযান পরিচালনা করেছে। অভিযানের পুরো বিষয়টি কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তার নজরে আনা হয় এবং তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনকে জানানোর সুপারিশ করা হয়।
দুদক জানায়, আরমানিটোলা কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ভ্যাট আদায়ে ঘুষের বিনিময়ে নির্ধারিত পরিমাণের চেয়ে কম ভ্যাট আদায় করে সরকারি রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে এ অভিযান চালায় এনফোর্সমেন্ট টিম।
অভিযানকালে এনফোর্সমেন্ট টিম জানতে পারে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি মো. রফিকুল ইসলাম গত ২৭ জুলাই থেকে চট্টগ্রামে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। কিন্তু ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে তিনি প্রতি শনিবার ঢাকায় অফিসে যান। তাকে না পেয়ে এনফোর্সমেন্ট টিমের দুই সদস্য ব্যবসায়ীর ছদ্মবেশে উক্ত অফিসের আরেকজন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মো. মাঈন উদ্দিন আরমানের কাছে ভ্যাট সংক্রান্ত সেবা নিতে যায়। এরপর তিনি ঘুষের বিনিময়ে তাদের অনৈতিক সুবিধা দিতে রাজি হন। যা রেকর্ড করা হয়। বিষয়টি রাজস্ব কর্মকর্তা সুদীপ্ত শেখর দাসকে অবগত করা হলে তিনি অসহযোগিতামূলক আচরণ করেন।
দুদক আরও বলেছে, পুরো বিষয়টি কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তার নজরে আনা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনকে জানানোর সুপারিশ করা হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এনফোর্সমেন্ট টিমকে জানান যে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযুক্ত ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে খুব শীঘ্রই ব্যবস্থা নেবে বলেও জানা গেছে। তবে রাজস্ব কর্মকর্তা যে ধরনের আচরণ করেছে সেটা কোনোভাবেই একজন সেবা প্রদানকারী হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয় এমনটাই জানিয়েছে দুদকের কর্মকর্তারা। তবে কাস্টমসে এমন ধরনের দুর্নীতি এবং ঘুষের ঘটনা যাতে আর না হয়, সে বিষয়ে সক্রিয় থাকবে দুর্নীতি দমন কমিশন এমনটাই জানিয়েছেন দুদক কর্মকর্তারা।