ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় ১২ বছরের বোনকে পতি*তাবৃত্তিতে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে সৎ ভাইয়ের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় শিশুটির বাবা বাদী হয়ে মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে কসবা থানায় তার ছেলে ও ছেলের স্ত্রীসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেন। পরে পুলিশ তার ছেলে সোলেমান মিয়া (৪০) ও ছেলের স্ত্রী সেলিনা আক্তারকে (৩০) গ্রেপ্তার করে।
বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে পুলিশ গ্রেফতারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করে। বিষয়টি নিয়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
কসবা থানায় দায়ের করা অভিযোগে বলা হয়, শিশুটির বাবা মোশারফ হোসেনের দুই বিয়ে করেন। প্রথম স্ত্রীর সন্তান সোলেমান মিয়া এবং দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তান ওই শিশুটি। সোলেমান মিয়া কসবা সুপার মার্কেটের সামনে ফুটপাতে চায়ের দোকান চালান। শহরের শীতল পাড়ায় ভাড়া বাসায় থাকেন। গত দুইমাস আগে ছেলে সোলেমান মিয়া হঠাৎ করে গ্রামের বাড়ি গিয়ে তার সৎ ছোট বোনকে শহরের বাসায় নিয়ে আসেন। সোলেমান মিয়া তাকে জানায়- ছোট বোনকে লেখাপড়া করানোসহ বিয়ে-সাদি দেওয়ার সব ব্যবস্থা করবে। বাবা সরল বিশ্বাসে বড় ছেলের সাথে মেয়েকে তার বাসায় পাঠিয়ে দেয়। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রাত ১০টার সময় শিশু মেয়েটি গ্রামের বাড়ি হরিপুরে বাবার কাছে চলে যায়। এত রাতে মেয়ে একা চলে আসায় বিস্মিত হয়ে কারণ জানতে চাইলে তাকে সে কিছুই বলেনি।
পরের দিন ২৭ ফেব্রুয়ারি ছেলে সোলায়মান মিয়া আবার তার সৎ বোনকে গ্রামের বাড়িতে আনতে গেলে তার সাথে যেতে ভৃক্তভোগি অস্বীকৃতি জানায়। বড় ভাইয়ের সঙ্গে কেন যাবে না জানতে চাইলে সে জানায়, গত দুই মাস ধরে ওই বাড়িতে রাতে বিভিন্ন পুরুষ এসে তার সঙ্গে জোরপূর্বক খারাপ কাজ করে। এসব করতে অস্বীকার করলে তাকে মারধর করা হতো। তাই সে রাতের আধারে পালিয়ে বাড়ি চলে আসে। এ ঘটনা শুনে শিশুটিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে তার শরীরে মারধরের চিহ্ন পাওয়া যায়।
পরে মঙ্গলবার বিকেলে শিশুটির বাবা থানায় এসে ছেলে ও তার স্ত্রীসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। অন্য আসামিরা হলেন আয়নাল হক (২৬) পিতা অজ্ঞাত, শান্ত মিয়া (২৩) পিতা অজ্ঞাত ও চাইনিজ (২৪) পিতা অজ্ঞাত।
শিশুটির বাবা মোশারফ হোসেন বলেন, ভাই ও ভাবি হয়ে ছোট বোনের এমন সর্বনাশ করবে আমি ভাবতেও পারিনি। পরিবারে অভাব-অনটনের কারণে সরল বিশ্বাসে ছেলের বাসায় পাঠিয়েছিলাম। প্রাণ বাঁচাতে আমার শিশু মেয়েটি রাতের আধারে বাড়ি চলে আসে। আমি তাদের কঠিন শাস্তি দাবি করছি।
কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাজু আহমেদ জানান, শিশুটির বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে দুইজনকে আটক করে বিজ্ঞ আদালতে পাঠানো হয়েছে। শিশুটির ডাক্তারি পরীক্ষা চলছে। বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।