বাংলাদেশ ব্যাংকের মতে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বিপিএম-৬ অনুযায়ী বৈদেশিক মুদ্রার বর্তমান রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের কাছাকাছি। এই রিজার্ভ দিয়ে প্রায় চার মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। এটি আন্তর্জাতিক মানের দ্বারা যেকোনো অর্থনীতির জন্য আরামদায়ক।
মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। গত বছরের প্রায় সাড়ে তিন বিলিয়ন ডলারের ঘাটতি চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাস নাগাদ কাটিয়ে প্রায় এক বিলিয়ন ডলারের উদ্বৃত্ত রয়েছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। যাইহোক, আর্থিক অ্যাকাউন্টে পূর্বে আরামদায়ক উদ্বৃত্ত থেকে ঘাটতি পরিস্থিতির উদ্ভবের কারণে সামগ্রিক বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য এখনও কিছুটা ঘাটতিতে রয়েছে। নিয়ন্ত্রক আশা করে যে বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য শীঘ্রই একটি আরামদায়ক অবস্থায় ফিরে আসবে। বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংরক্ষণ মুদ্রা বিনিময় হারে স্থিতিশীলতা আনতে আরও সহায়ক হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের সময়োপযোগী ও কার্যকর নীতি গ্রহণের কারণে বর্তমান মুদ্রা বিনিময় হার প্রকৃত কার্যকর বিনিময় হার সূচকের সঙ্গে অনেকটাই সামঞ্জস্যপূর্ণ। এই ক্ষেত্রে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক যদি ভবিষ্যতে তার নীতিগত সুদের হার না বাড়ায় বা না কমায়, তবে এটি আমাদের বিনিময় হারে স্থিতিশীলতা আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, বাংলাদেশ ব্যাংক মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও প্রত্যাশা রক্ষায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে।
একই সঙ্গে অনুৎপাদনশীল খাতে ব্যয় কমিয়েছে সরকার। দরিদ্রদের উপর মূল্যস্ফীতির প্রভাব কমানোর জন্য সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর পরিধি এবং নাগাল বাড়ানো হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ সরকারের যুগপৎ সংকোচনমূলক নীতিমূলক ব্যবস্থা এবং উৎপাদন ও বিনিয়োগের সহায়ক নীতি মূল্যস্ফীতি পরিস্থিতির তীব্র উন্নতি ঘটাবে।
সার্কুলার অনুযায়ী, জানুয়ারির শেষ নাগাদ পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট ভিত্তিতে দেশের মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশে এবং জুনের শেষে ৬ শতাংশে নামিয়ে আনার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগামী সাধারণ নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠনের পর অর্থনৈতিক অবস্থার দ্রুত উন্নতি ঘটবে এবং অর্থবছরের শেষ নাগাদ দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, সাম্প্রতিক সামষ্টিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশ ব্যাংক এবং সরকার উভয়ই দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে আর্থিক ও রাজস্ব খাতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতির ফলে দেশের অর্থনীতির বৈদেশিক খাতে স্থিতিশীলতা এবং মুদ্রাস্ফীতিজনিত পরিস্থিতিতে স্বস্তিদায়ক পরিস্থিতি দেশের রপ্তানি ও রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধির মাধ্যমে খুব শীঘ্রই ফিরে আসবে বলে আশা করা যায়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক আশা করছে দ্রুত পরিবর্তনশীল বৈশ্বিক ভূ-অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে বৈশ্বিক সুযোগ গ্রহণের সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে একটি শক্তিশালী অর্থনীতিতে পরিণত হবে।