বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) সাবেক চেয়ারম্যান এবং পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত আইজি) একেএম শামসুদ্দোহা খন্দকারের স্ত্রী ফেরদৌসী সুলতানা খন্দকার পেশায় একজন গৃহিণী। তার আয়ের নির্দিষ্ট কোনো উৎস নেই। তবে ঢাকার দোহাসহ বিভিন্ন স্থানে তার ২৭ কোটি টাকার বেশি সম্পদ রয়েছে।
ফেরদৌসী সুলতানা খন্দকার স্বামীর অবৈধ আয়ের টাকায় এসব সম্পদ গড়ে তোলেন তিনি। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধানে এ তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল মঙ্গলবার ওই দম্পতির বিরুদ্ধে ৬৬ কোটি ৫০ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে সংগঠনটি। দুদকের সহকারী পরিচালক খোরশেদ আলম তদন্ত প্রক্রিয়া শেষে এই চার্জশিট দাখিল করেন। বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির সেক্রেটারি খোরশেদা ইয়াসমিন এ তথ্য জানান।
ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুর্নীতির মাধ্যমে বিভিন্ন তফসিলি ব্যাংকের হিসাবে সন্দেহজনক উৎসের অসামঞ্জস্যপূর্ণ ও অস্বাভাবিক লেনদেনের মাধ্যমে ২১ কোটি ৫ লাখ ২৫ হাজার ১৮২৯ টাকা জমা করে পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় উত্তোলন করে তার অবস্থান, প্রকৃতি, উৎস, মালিকানা আড়াল করার চেষ্টা করেছেন। দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে তিনি ৮ কোটি ৪৪ লাখ ১০ হাজার ২২১ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপনসহ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া দুদকের অনুসন্ধানে ২ কোটি ৮৭ লাখ ৩ হাজার ৭৮ টাকার অবৈধ সম্পদের তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে।
যে কারণে তার বিরুদ্ধে দুদক আইন ২০০৪-এর ২৬ (২) ২৭ (১) এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি দমন প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। অন্যদিকে তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ২৮ কোটি ৪৭ লাখ ৩ হাজার ৮৯১ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করা এবং ২৭ কোটি ৪৮ লাখ ৮২ হাজার ৪৯১ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে দ্বিতীয় চার্জশিটে। যেখানে মো. শামছুদ্দোহা খন্দকারকে সহযোগী আসামি করে তার স্ত্রী ফেরদৌসী সুলতানাকে প্রথম আসামি করা হয়েছে।
শামসুদ্দোহা ২০১১ সালে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যানের পদ গ্রহণ করেন। ২০১৯ সালে, দুদক তার বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়ের বাইরে সম্পদ অর্জনের জন্য একটি মামলা করে। স্ত্রী ফেরদৌসী সুলতানাও ওই মামলার আসামি। শামসুদ্দোহা ২০২১-২২ সালের কাউন্সিলে ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। তার বিরুদ্ধে কয়েক হাজার কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে।