বেনজীরের দৌড় শেষ? ইন্টারপোলের জালে সাবেক আইজিপি

দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ ক্ষমতার অপব্যবহারে লিপ্ত ছিল। প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ে অন্তত দুই ডজন পুলিশ কর্মকর্তা নিজেদের স্বার্থেই বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। হাসিনা সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর এসব বিতর্কিত পুলিশ কর্মকর্তারা এখন আত্মগোপনে। কিন্তু ষড়যন্ত্র এখানেই থেমে নেই। পলাতক অবস্থাতেও সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ সরকারবিরোধী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।

এক দশকেরও বেশি সময় ধরে পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে তিনি বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের মুখে ছিলেন। সম্প্রতি তিনি সামাজিক মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত সরকারের ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন, যা নতুন ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত দেয়।

তবে এবার পরিস্থিতি বদলাচ্ছে। ইন্টারপোলের মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করতে আদালত নির্দেশ দিয়েছে। ২০২১ সালে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্র র‍্যাবের সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়, যার মধ্যে বেনজীর আহমেদও ছিলেন। নিষেধাজ্ঞার পরও তিনি বিদেশ সফর করলেও এবার পালানোর সুযোগ সীমিত হয়ে আসছে।

তবে প্রশ্ন রয়ে গেছে— ইন্টারপোলের রেড নোটিশ আদৌ কার্যকর হবে কি না।

ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল পুলিশ অর্গানাইজেশন (ইন্টারপোল) বিভিন্ন দেশের পুলিশ বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় সাধন করে। কোনো অপরাধী নিজ দেশ থেকে পালিয়ে অন্য দেশে আশ্রয় নিলে, ইন্টারপোলের সহযোগিতায় তাকে ফেরত আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়।

বাংলাদেশ ১৯৭৬ সালে ইন্টারপোলের সদস্য হয়। বর্তমানে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ তালিকায় ১৯৫টি দেশের ৬,০৬৯ জন অপরাধীর নাম রয়েছে, যার মধ্যে বাংলাদেশি ৬৪ জন। ২০০৯ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে মাত্র ১৫ জন পলাতক আসামিকে দেশে ফেরানো সম্ভব হয়েছে। এবার সেই তালিকায় সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের নাম যুক্ত হতে যাচ্ছে।

প্রশ্ন থেকেই যায়— তিনি কি আদৌ গ্রেফতার হবেন, নাকি আগের মতোই আইনের ফাঁক গলে বেরিয়ে যাবেন?