দীর্ঘ সময় ধরে শারীরিক ভাবে নানা ধরনের জটিলতায় ভুগছেন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। বর্তমান সময়ে তিনি রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার জন্য সরকারের কাছে কয়েক দফা দাবি জানিয়েছে বিএনপি দল এবং তার পরিবার। তবে এই বিষয়ে কোন অনুমতি মেলেনি। তাকে দেশেই চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হচ্ছে। তরা সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা জানালেন বেগম জিয়ার সাবেক প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান।
রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা জানিয়ে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে স্ট্যাটাস দিয়েছেন তার সাবেক প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান। বুধবার (৫ জানুয়ারি) দিনগত রাত সাড়ে ১০টায় মারুফ কামাল খান যে পোস্টটি দিয়েছেন সেটি হুবহু তুলে ধরা হলো-
খালেদা জিয়ার লেটেস্ট আপডেট
রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার অবস্থা সম্পর্কে আমার নিজস্ব মাধ্যমে সংগৃহীত তথ্য শেয়ার করছি। তবে আমার এ তথ্যে কেউ যেন স্বস্তিবোধ না করেন এবং মনে না করেন যে, তিনি সুস্থ হয়ে উঠেছেন এবং তার চিকিৎসা সম্পন্ন হয়েছে। তিনি গুরুতর বিভিন্ন রোগের সঙ্গে লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত। এর কোনো উপযুক্ত চিকিৎসা বাংলাদেশে সম্ভব নয়। এবার রক্তক্ষরণজনিত গুরুতর সমস্যাসহ তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে ম্যাডাম জিয়ার লিভার সিরোসিস শনাক্ত হয়। এ রক্তক্ষরণ কোনোক্রমেই পুরোপুরি বন্ধ করা যাচ্ছিল না। বাইরে থেকে রক্ত ও অন্যান্য খনিজ দিয়ে তাকে বাঁচিয়ে রাখা হচ্ছিল। পরে চিকিৎসকদের সিদ্ধান্তে বিদেশ থেকে ক্যাপসুল আনিয়ে তার ক্যাপসুল এন্ডোস্কপি করা হয়। এতে রক্তক্ষরণের উৎস হিসেবে তার ক্ষুদ্রান্তের নিচে একটি ক্ষত শনাক্ত করা সম্ভব হয়। প্রাণান্ত চেষ্টায় দীর্ঘ সময় ধরে এ এন্ডোস্কপির মাধ্যমে ডাক্তাররা ব্যান্ড লাইগেশন করে সে ক্ষতটি বন্ধ করতে পেরেছেন। এতে আল্লাহর অসীম রহমতে ম্যাডামের রক্তক্ষরণ আপাতত বন্ধ হয়েছে।
তবে এতেই তিনি ঝুঁকিমুক্ত হননি। যে কোনো সময় আবারও নতুন বা পুরানো উৎস থেকে রক্তক্ষরণ শুরু হতে পারে। তাছাড়া দ্রুত লিভারের চিকিৎসা ছাড়া এটি যে কোনো সময়ে অকেজো হয়ে পড়তে পারে এবং অন্যান্য অর্গ্যানের কার্যকারিতাও বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তাই দ্রুত বিদেশে উপযুক্ত চিকিৎসার জন্য তাকে নেওয়া দরকার এবং বর্তমান পরিস্থিতিতে সম্ভবত লিভার ট্রান্সপ্লানটেশনই একমাত্র উপায় বলেই চিকিৎসকদের অভিমত। তারা যেটুকু করেছেন তার চেয়ে বেশি কিছু করা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। কারণ এর জন্য প্রয়োজনীয় সমন্বিত সুবিধা ও সরঞ্জামাদি বাংলাদেশের কোনো হাসপাতালেই নেই।
বেগম জিয়ার নামে একাধিক মামলা রয়েছে। এমনকি বর্তমান সময়ে তিনি জিয়া অরফানেজ ট্রাষ্ট দূর্নীতি মামলায় সাজা ভোগ করছেন। এবং তার বিরুদ্ধে করা মামলা গুলো চলমান রয়েছে। তবে বিএনপি দলের নেতাকর্মীরা তার বিরুদ্ধে করা মামলা গুলো মিথ্যা ও বানোয়াট বলে অস্বীকার করে আসছে। এছাড়াও তাকে এই সকল মিথ্যা মামলা থেকে অব্যহতি দিয়ে দ্রুত বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে।