বাংলাদেশ সরকারের আইনমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বে থাকা আনিসুল হক বলেছেন, বাঙালির রীতি অনুসারে যদি শত্রুর ঘরে কেউ প্রয়াত হন তাহলে তার প্রতি সমবেদনা জানানো বা সহানুভূতি প্রকাশ করা হয়। বেগম জিয়ার ছেলে প্রয়াত হয়েছিলেন, স্বাভাবিকভাবেই তার মাকে (খালেদা জিয়া) সমবেদনা জানাবার জন্য তার বাড়িতে গিয়েছিলেন মমতাময়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু সেই সময়ে তার মুখের ওপর গেট বন্ধ করে দেওয়া হয় যার কারনে তিনি আর বাসায় ঢুকতে পরেননি অর্থাৎ ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এটা শুধুমাত্র জননেত্রী শেখ হাসিনার জন্য একটি অপমানজনক বিষয় নয়, সারা দেশের মানুষকে অপমান করা।
তিনি বলেন, এর পরও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে বলেছেন- তারা বলছেন বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ। যেহেতু তার পরিবার আবেদন করেছে, তুমি আইনের মারফতে ছেড়ে দাও। এরপর আমরা খালেদা জিয়াকে দুইটি শর্তে ছেড়ে দিলাম। তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না, আর অন্যটি হলো- তাকে তার বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে হবে।
শুক্রবার সকালে আখাউড়ায় সড়কবাজার মুক্তমঞ্চে পৌর আওয়ামী লীগের আয়োজনে শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আনিসুল হক বলেন, তার (খালেদা জিয়া) অন্যায় এত গভীর যে, এতিমের টাকা মেরে দিছেন, এ জন্য বিচারিক আদালত পাঁচ বছরের জায়গায় ১০ বছরের সাজা দিয়েছেন। উনি এবং উনার ছেলেরা দুস্থদের টাকা মেরে দিয়েছে, সেখানেও বিচারিক আদালত তাকে সাত বছরের সাজা দিয়েছেন। এতকিছুর পরও মানবিক কারণে প্রধানমন্ত্রীর নির্বাহী আদেশে দণ্ডাদেশ স্থগিত রেখে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। উনি চিকিৎসা করাচ্ছেন।
তিনি বলেন, দাঁড়াইতে দিলে বসতে চায়, বসতে দিলে শুইতে চায়; আর শুইতে দিলে ঘুমাইতে চায়— তাদের অবস্থা এখন এই রকম। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, আইন, আইনের গতিতে চলবে, জিয়াউর রহমানের গতিতে আইন চলবে না। আইন, আইনের বইয়ে যেভাবে চলে সেভাবেই চলবে।
অনুষ্ঠানে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক সচিব মো. গোলাম সারওয়ার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক হায়াত উদ দৌলা খান, পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান, আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রোমানা আক্তার, পৌর মেয়র তাকজিল খলিফা কাজল, কসবা উপজেলা চেয়ারম্যান রাশেদুল কাউসার ভূঁইয়া জীবন, আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বাক জয়নাল আবেদীন, যুগ্ম আহ্বায়ক সেলিম ভূঁইয়া, মনির হোসেন বাবুল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে আখাউড়ায় আন্তঃনগর মহানগর প্রভাতি ট্রেনে করে আসেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। পরবর্তীতে তিনি সড়ক পরিবহনের মাধ্যমে নিজ উপজেলা কসবায় গিয়েছেন। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক তার নিজস্ব খরচে ৬শো’রও বেশি অসহায়, দরিদ্র, দুস্থ ও শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। তিনি ঐ এলাকায় বেশ কয়েকটি স্থানে যাবেন এবং সেখানে দলীয় বক্তৃতা দিবেন। তিনি তার কাজ শেষ হওয়ার পর ঢাকায় ফিরে আসবেন।