Sunday , November 10 2024
Breaking News
Home / Countrywide / বেকুসর খালাস পাবেন সেই ওসি প্রদীপ ও চুকমি: আইনজীবী সমীর

বেকুসর খালাস পাবেন সেই ওসি প্রদীপ ও চুকমি: আইনজীবী সমীর

মেজর সিনহাকে নিথর করার পর সারাদেশে তুমল আলোচনার সৃষ্টি হয় । এ ঘটনায় অসিপ্রদিপ সহ আরো অনেককে সাজা প্রদান করে আদালত। এ ঘটনার পর এই পর্যন্ত সে কত টাকা দূর্নিতি করে আয় করেছেন সে বিষয়ে সন্ধান ‍শুরু করে দুদক। এ ঘটনায় আটক হন তার স্ত্রীও। দুদকের সেই মামলার রায় ঘেষনার দিন আজবুধবার (২৭ জুলাই) ঘোষণা করা হবে।

দুদকের মামলার আইনজীবী চট্টগ্রাম আদালতের আইনজীবী পিপি মাহমুদুল হক এক সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ আদালতে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন তারা। আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

অপরদিকে আসামিদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সমীর দাশগুপ্ত সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আদালতে অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি। আশা করি প্রদীপ ও তার স্ত্রী চুমকি খালাস পাবেন।

বুধবার (২৭ জুলাই) সকালে চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ মুন্সী আবদুল মজিদ এ মামলার রায় ঘোষণা করবেন।

দুদকের আইনজীবী মাহমুদুল হক এক সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় ওসি প্রদীপ ও তার স্ত্রী চুমকির বিরুদ্ধে আদালতে প্রাসঙ্গিক নথিসহ প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়েছে। আমি অভিযুক্ত প্রদীপ ও তার স্ত্রী চুমকির বিরুদ্ধে আয়ের বাইরে সম্পদ অর্জন, সম্পদ গোপন করা, মানি লন্ডারিংসহ যাবতীয় অভিযোগ পুরোপুরি প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। এ মামলায় আদালত আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দেবেন বলে আমরা আশাবাদী।

আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বলছেন, আপনি (দুদক) অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেননি- এ বিষয়ে আপনি কী বলেন? জবাবে মাহমুদুল হক বলেন, দায় এড়াতে আসামিরা যা-ই বলবেন। আমরা আদালতে আমাদের অভিযোগ প্রমাণ করতে পেরেছি। অভিযুক্ত কখনই বলবে না যে সে অপরাধ করেছে। আশা করি অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ শাস্তি হবে।

প্রদীপ দম্পতির আইনজীবী অ্যাডভোকেট সমীর দাশগুপ্ত ঢাকা পোস্টকে জানান, এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ ২৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৪ জনকে আদালতে হাজির করতে সক্ষম হয়েছে। দুইজন ছাড়া 22 জন আনুষ্ঠানিকতা। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও বোয়ালখালীর মৎস্য কর্মকর্তাকে গুরুত্বপূর্ণ বলে জিজ্ঞাসাবাদের চেষ্টা করি। বাকি 22 জনকে জিজ্ঞাসা করলাম তারা মামলা সম্পর্কে জানেন কি না, তারা সবাই সর্বসম্মতিক্রমে বলেছিলেন যে তারা মামলা সম্পর্কে কিছুই জানেন না।

তিনি বলেন, দুদকে অভিযোগকারী ওসি প্রদীপকে মামলায় সাক্ষী করা হয়েছে। কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষ তাকে সাক্ষী হিসেবে আদালতে হাজির করতে পারেনি। তিনি হাজির না হওয়ায় সন্দেহের সুফল আসামিদের কাছে যাবে।

আসামি পক্ষের আইনজীবী বলেন, আমরা বলতে চাই রাষ্ট্রপক্ষ সন্দেহাতীতভাবে রাষ্ট্রপক্ষের মামলা প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। আমরা যে মৎস্য চাষের কথা বলছি তার চুক্তি থেকে শুরু করে সব কাগজপত্র আদালতে জমা দিয়েছি। এ ছাড়া আমাদের পক্ষে দুজন সাক্ষী সাফাই বিল দিয়েছেন। রাষ্ট্রের তরফে তাদের জেরা করা হয়েছে। জেরায় তারা কোনো অসারতা খুঁজে পায়নি।

আইনজীবী অ্যাডভোকেট সমীর দাশগুপ্ত বলেন, সরকার এ মামলায় ঘুষ, দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের বিষয়ে কিছুই প্রমাণ করতে পারেনি। অভিযুক্তরা সম্পূর্ণ নির্দোষ। আদালত নিরপেক্ষভাবে বিচার বিশ্লেষণ করে রায় দিলে চুমকি ও প্রদীপ খালাস পাবেন বলে আমার বিশ্বাস।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ২৩ আগস্ট দুদকের সহকারী পরিচালক প্রদীপ কুমার দাস ও তার স্ত্রী চুমকির বিরুদ্ধে দুদকের জেলা কার্যালয়-১-এ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলাটি করেন। রিয়াজ উদ্দিন।

তাদের বিরুদ্ধে ২০০৪ সালের দুদক আইনের ২৬ (২) ও ২৭ (১), প্রিভেনশন অব মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট, ২০১২ এর ধারা ৪ (২), দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়। , 1947 এবং দণ্ডবিধির 109 ধারা।

এরপর গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মুন্সী আবদুল মজিদ দুর্নীতির মামলায় প্রদীপ ও তার স্ত্রী চুমকির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন।

এর আগে গত বছরের ২৬ জুলাই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদক চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। রিয়াজ উদ্দিন। প্রদীপকে গ্রেফতার করে জেলে গেলেও প্রদীপের স্ত্রী চুমকি চলতি বছরের ২৩ মে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে শুনানি শেষে তাকে কারাগারে পাঠান আদালত। বর্তমানে তারা কারাগারে রয়েছেন।

জানা যায়, চুমকির বৈধ ও গ্রহণযোগ্য আয়ের পরিমাণ ২ কোটি ৪৪ লাখ ৬৬ হাজার ২৩৪ টাকা স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের বিপরীতে ৪ কোটি ৮০ লাখ ৬৪ হাজার ৬৫১ টাকা। বাকি সম্পদ অর্থাৎ ২ কোটি টাকা অবৈধভাবে অর্জনের প্রমাণ পেয়েছে দুদক। ৩৫ লাখ ৯৮ হাজার ৪১৭ টাকা।

প্রদীপের স্ত্রী চুমকির চট্টগ্রামের পাথরঘাটায় একটি ছয়তলা বাড়ি, ষোলশহরে একটি বাড়ি, ৪৫ ভরি সোনা, একটি গাড়ি ও একটি মাইক্রোবাস, কক্সবাজারে একটি ফ্ল্যাট রয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্তে জানা গেছে, প্রদীপের স্ত্রী চুমকি ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ দিয়ে এসব সম্পদ অর্জন করেছেন। এ ছাড়া চুমকি নিজেকে মাছ ব্যবসায়ী দাবি করলেও কোনো প্রমাণ পায়নি দুদক।

২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর মেরিন ড্রাইভ চেকপোস্টে অবসরপ্রাপ্ত সেনা মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানকে গু/ লি করে হ/ ত্যা করা হয়। এ ঘটনায় একই বছরের ৬ আগস্ট থেকে কারাগারে রয়েছেন ওসি প্রদীপ।

প্রসঙ্গত, ওসি প্রদীপ ধরা পড়ার পর তার বিরুদ্ধে কথা বলায় বিপাকে পড়েছে অনেকেই। তার মধ্যে এক সংবাদ মাধ্যমের কর্মীর সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা বেশ আলোচনায় আসে। জানা যায় প্রদীপের বিরুদ্ধে কথা বলায় তাকে তুলে নিয়ে প্রহর করে তার লোকেরা। এছাড়া ১১ মাসে জেল পর্যন্ত খাটানো হয় মিথ্য মামলায়।

About Nasimul Islam

Check Also

জিরো পয়েন্ট প্রস্তুত শত শত ছাত্র-জনতা, অপেক্ষা আ.লীগের

গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে রোববার (১০ নভেম্বর) আওয়ামী লীগ রাজধানীতে একটি বিক্ষোভ মিছিলের ঘোষণা দেয়। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *