ভ্লাদিমির পুতিন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট তিনি। শুধু রাশিয়ায় নয় সারা বিশ্বই তাকে চিনে থাকে এই নামে। তবে সম্প্রতি তাকে নিয়ে উঠেছে নানা ধরনের জল্পনা আর আলোচনা। বিশেষ করে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের অসুস্থতা নিয়ে বহুদিন ধরেই নানা জল্পনা-কল্পনা চলছিল। গত বছরের শেষ দিকে তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হবেন না বলে জানান। তাদের কাছে একটি ভিডিও বার্তাও পাঠান তিনি।
সে সময় জেনারেল এসভিআর নামের রাশিয়ান টেলিগ্রাম চ্যানেল দাবি করেছিল, পুতিন একাধিক শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। এর মধ্যে রয়েছে ক্যান্সারের মতো মারণ রোগ। এছাড়া সিঁড়ি থেকে পড়ে পায়ুপথে চোট পেয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট।
এরই মধ্যে, পুতিন বেঁচে নেই এমন জল্পনাকে উস্কে দিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। জেলেনস্কি বৃহস্পতিবার সকালে সুইজারল্যান্ডের ডাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) মূল অনুষ্ঠানের ফাঁকে ইউক্রেনীয় প্রাতঃরাশ নামক একটি প্রোগ্রামে অংশ নেন। সেখানে তাকে প্রশ্ন করা হয়, রাশিয়ার সঙ্গে শান্তিপূর্ণ আলোচনা কবে শুরু হবে?
তখনই পুতিন সংক্রান্ত বিস্ফোরক মন্তব্য করেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট।
তিনি বলেন, “আজ আমি বুঝতে পারছি না কার সঙ্গে কথা বলব। কী নিয়ে আলোচনা করব। কারণ আমি জানি না রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট, যাকে মাঝে মাঝে দেখা যায়, তিনি সত্যিই ভ্লাদিমির পুতিন কিনা। আমি জানি না তিনি বেঁচে আছেন কি না। তিনি দেশের সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন কি না।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের মন্তব্যের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ক্রেমলিন প্রতিক্রিয়া জানায়। রাশিয়ান নেতারা দাবি করেছেন যে জেলেনস্কি কেবল রাশিয়াকেই নয়, তাদের রাষ্ট্রপতিকেও শেষ করতে চান।
রুশ মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, “ইউক্রেন এবং প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি রাশিয়া এবং প্রেসিডেন্ট পুতিনকে নিয়ে খুব চিন্তিত। স্পষ্টতই, জেলেনস্কি ব্যক্তিগতভাবে রাশিয়া বা পুতিনের অস্তিত্ব চান না। কিন্তু যত তাড়াতাড়ি তিনি স্বীকার করবেন যে রাশিয়ার অস্তিত্ব আছে, জেলেনস্কির জন্য ততই মঙ্গল।”
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের ঘোষণা দেন। এরপর ১১ মাসেরও বেশি সময় ধরে দুই দেশের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। উভয় পক্ষের অনেক হতাহতের খবর পাওয়া গেছে। তবে এখন পর্যন্ত লড়াই শেষ হওয়ার কোনো লক্ষণ নেই। উল্টো পূর্ব ইউক্রেনে দুই দেশের মধ্যে বিরোধ বেড়েছে।
প্রসঙ্গত, এ দিকে দীর্ঘদিন ধরেই কোনো দেখা নেই প্রেসিডেন্ট পুতিনের। আর এই কারণেই এত বেশি আলোচনা হচ্ছে তাকে নিয়ে। তবে এ বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছুই বলতে চাইছে না রাশিয়া। আর এটাও একটি বড় জল্পনার কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে সবার জন্য।