বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) বর্তমান সময়ে অনেক ছাত্র এবং অভিভাবকের জন্য একটি ভয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ দেশের সর্বোচ্চ এই বিশ্ববিদ্যালয় নিথর করে দেয়া হয় একজন মেধাবী ছাত্রকে। সেই মেধাবী ছাত্রের নাম আবরার ফাহাদ। এবার তো ছোট ভাই ও বুয়েটে চান্স পেয়েছে। আবরার ফাহাদের স্বপ্ন ছিল তার ছোট ভাই ও বুয়েটে ভর্তি হয়ে পড়াশোনা করুক। তার সেই চাওয়া পূরণ হয়েছে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে বুয়েটে ভর্তি হওয়ার পর আবরার ফাহাদ চেয়েছিলেন তার ছোট ভাইও বুয়েটে যেন পড়ে। প্রয়াত আবরার ফাহাদের সেই ইচ্ছা
আজ পূরণ হয়েছে। তার ছোট ভাই ফায়াজ আবরার এবার বুয়েটে চান্স পেয়েছেন। তবে বুয়েটের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে চরম উ”দ্বেগ প্রকাশ করেছে পরিবারটি। আবরার ফাহাদকে হারানোর পর তার মা চান না আরেকটি ছেলে বুয়েটে ভর্তি হোক। তাই তারা এখনও আবরার ফায়াজকে ভর্তির সিদ্ধান্ত নেননি।
আবরার ফাহাদের ছোট ভাই ফায়াজ দেশের সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে চান্স পেয়ে মেধা তালিকায় ৪৫০ তম স্থান অধিকার করেন। এরপরও তার পরিবারে চলছে শোকের মাতম। কারণ, ফাইয়াজ যে আবরারের ছোট ভাই। আবরার ফাহাদ দেশসেরা এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই খু/”ন হন। এই ঘটনাটি দেশ-বিদেশে আলোচিত হওয়ার পর আবরারের মা রোকেয়া খাতুন আর চান না তার ছোট ছেলে বুয়েটে পড়ুক।
শুক্রবার (১ জুলাই) সকালে কুষ্টিয়ার পিটিআই রোডে আবরারের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় তাদের কোনো আনন্দ নেই। উল্টো আবরারের কথা বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন মা রোকেয়া খাতুন।
রোকেয়া খাতুন দেশের একটি জনপ্রিয় সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, বুয়েটে এমন কিছু হারিয়েছে যা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। বুয়েট মানেই তার কাছে ভয় আর আ’ত/”ঙ্ক। বুয়েট শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হলেও তাদের প্রতি ক্ষো”ভ ও বিদ্বে”ষের নাম। ওই জায়গা থেকে বের হতে পারবে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বুয়েট।
বাবা বরকত উল্লাহ গনমাধ্যমকে বলেন, ফায়াজের সুযোগ পাওয়াটা অনেক বড় ব্যাপার, কারণ তার ভাই আবরার ফাহাদ চেয়েছিলেন তার ছোট ভাইও বুয়েটে ভর্তি হোক। কিন্তু এখন আমি সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না ভর্তি করবো কি না। সেখানে ভর্তি হওয়ার পর ফায়াজ কি পারবে ওই ক্যাম্পাসে গিয়ে ভাইয়ের স্মৃতি বহন করতে? নিরাপত্তা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এখনও পর্যন্ত কেউ নিখুঁত সমাধান পাঠাতে সক্ষম হয়নি, যা অদ্ভুত নয়।
আবরার ফায়াজ বলেন, “আমিও স্বপ্ন দেখতাম আমার ভাইয়ের সঙ্গে বুয়েট ক্যাম্পাসে পড়ার। কিন্তু গত তিন বছরে সব বদলে গেছে। আমিও বুয়েটে আমার প্রিয় ভাইকে হারানোর ভ”য়ে আছি। ঈদের সময় পরিবারের সবার সঙ্গে কথা বলে ভর্তির সিদ্ধান্ত নেব।
২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর রাতে বুয়েটের একটি হলে ৮ ঘণ্টা ধরে নি/”র্যা”তন করে আবরারকে চিরতরে নিথর করে দেয় ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। গত ৬ অক্টোবর তার বাবা চকবাজার থানায় ১৯ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মাম”লা করেন। মাম”লার তদন্ত শেষে পুলিশ মোট ২৫ জনকে আসামি করে, যাদের সবাই বুয়েটের বিভিন্ন বর্ষের ছাত্র এবং ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত।
গত বছরের ৬ ডিসেম্বর এ মামলায় ২০ জনকে মৃ/”ত্যুদ”ণ্ড ও পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদ’ণ্ড দেন আদালত।
প্রসংগত, বুয়েটের বর্তমান পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক তারপরও অনেক ছাত্রছাত্রী কাছে বিষয়টি অমলিন হয়ে রয়েছে। আবরার ফাহাদ এর ঘটনা অনেকের হৃদয়ে এখনো বিরাজ করছে। যার কারণে অনেকে ভ”য়ে থাকেন কখন ঘটনা আবার কোন দিকে মোড় নেয়। তবে সবকিছু স্বাভাবিক হবে এটাই বুয়েটের শিক্ষার্থীদের আশা।