বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এর মেধাবী ছাত্র ফারদিন নুর পরশের হ”/ত্যাকাণ্ডের বিষয়টি দেশজুড়ে আলোচনায় আসে। গত ৭ নভেম্বর শীতলক্ষ্যা নদী থেকে তার নিথর দেহ উদ্ধার করে নৌ-পুলিশ। এরপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ফারদিনের ঘটনার রহস্য উদঘাটনের জন্য তদন্ত শুরু করে। শেষ পর্যন্ত ফারদিনের নিথর কান্ডের রহস্য উৎঘাটন করতে সক্ষম হয় পুলিশ। পুলিশের পাশাপাশি ছায়া তদন্তে নামে র্যাব।
বুয়েটের ছাত্র ফারদিন নূর পরশ হ”/ত্যা করেছে চনপাড়ার অপরাধী চক্রের হাতে। আর এই হ”/ত্যাকাণ্ডের নেতৃত্ব দিয়েছে চিহ্নিত নিষিদ্ধ দ্রব্য ব্যবসায়ী রায়হান গ্রুপ। এই গ্রুপের বিরুদ্ধে পুলিশের ওপর হাম”লাসহ দশটির বেশি মামলা রয়েছে। ছায়া তদন্তকারী সংস্থা র্যাব বলছে, তারা হ”/ত্যার মোটিভ জানার চেষ্টা করছে।
গত ৪ নভেম্বর ভোর রাত পৌনে দুইটা থেকে আড়াইটার মধ্যে পরশকে নিথর করা হয়। ওই সময় ঘটনার সঙ্গে জড়িত বেশ কয়েকজন ব্যক্তিকে এবং একটি প্রাইভেট কার তার দেহটি সরিয়ে নেওয়ার নিতে ওই এলাকার কিছু সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়।
রাত ১টা ২৮ মিনিটে ৬ যুবক চনপাড়ার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের গলি থেকে বেরিয়ে চনপাড়া-রূপগঞ্জের প্রধান সড়কে গিয়ে ১ নং ওয়ার্ডের দিকে মোড় নিতে দেখা গেছে। ১টা ৫১ মিনিটে তারা ৬ নং ওয়ার্ডে ফিরে আসে। রাত ২টা ২৩ মিনিটে চার যুবক বালু ব্রিজ এলাকা থেকে ৬ নম্বর ওয়ার্ডে আসে। ২০ মিনিট পর বেশ কয়েকজন যুবক ঘটনাস্থলে যায়।
রাত ২টা ৪৪ মিনিটে দুই যুবক রাস্তায় এসে হাঁটতে থাকে। রাত ২টা ৫২ মিনিটে বালু ব্রিজ এলাকা থেকে একটি দ্রুতগামী সাদা টয়োটা এক্সিও গাড়ি এসে ৬ নম্বরের দিকে চলে যায়। একই সময়ে গলির প্রবেশপথে পাহারা দেওয়া দুই যুবক গলির বাইরে চলে যায়।
ঠিক ১১ মিনিট পর সাদা প্রাইভেটকারটি দ্রুত ৬ নং ওয়ার্ড থেকে যে দিক থেকে এসেছিল, ঠিক সেদিকেই অর্থাৎ বালু ব্রিজের দিকে চলে যায়। গাড়িটি ৬ নং ওয়ার্ডের গলি পার হলে গাড়ির দুপাশে দুজন লোক হেঁটে গাড়িটিকে লেন পার করে দেয়।
র্যাব জানিয়েছে, রায়হান গ্রুপের হাতেই বুয়েটের ছাত্র খু”/ন হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) বিকেলে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, পরশ হ”/ত্যার মূল রহস্য উদঘাটন করতে না পারলেও পরশের ঘটনায় জড়িত কয়েকজনকে আমরা শনাক্ত করেছি। তার এই ঘটনায় রায়হান গ্রুপের জড়িত থাকার সন্দেহ রয়েছে। রায়হানের বি’রুদ্ধে একাধিক মা’মলা রয়েছে। সে চনপাড়ায় নিষিদ্ধ দ্রব্য ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।
আল মঈন বলেন, আমরা এখনো বলার মতো কোনো অবস্থানে আমরা নেই। পরশ বড় হয়েছে চানপাড়া থেকে বেশি দূরে নয়। এটা পর্যালোচনা করা হচ্ছে। চনপাড়ায় এ কাণ্ড ঘটেছে তা নিশ্চিত। যাদের নাম আসছে তাদের সবাইকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে।
এদিকে তদন্ত সংশ্লিষ্ট একটি সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জের চানপাড়ায় বুয়েট ছাত্র পরশকে নিথর করার মিশনে ১০ থেকে ১২ জন অংশ নেয়। তাকে আইন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর সোর্স ভেবে তাকে নিঠর করা হয়েছে। হ”/ত্যাকাণ্ডে জড়িত সবাইকে শনাক্ত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ফারদিনের হ”/ত্যাকাণ্ডের ঘটনা প্রথমদিকে তার বান্ধবীর সাথে প্রেমের সম্পর্কের জেরে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করা হলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তদন্তে উঠে আসছে ভিন্ন তথ্য। ফারদিনকে নিষিদ্ধ দ্রব্যের কারবারীরা নিথর করেছে বলে র্যাব জানায়। এদিকে ফারদিন নিষিদ্ধ দ্রব্যের কারবারের সাথে জড়িত এমন গু’ঞ্ন ওঠে। তবে কারবারীদের একজন ঘটনার বিসয় স্বীকার করেছেন বলে জানা গেছে।