প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলার পর কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে এবং পরবর্তীতে সন্তান জন্মদান করে। এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় ওই কিশোরের জামিন চাওয়ার মাধ্যমে হাইকোর্টে একটি আবেদন দাখিল করা হয়। বর্তমান সময় ওই কিশোর যশোরে অবস্থিত একটি শি”শু সংশোধনাগারে আছে বলে জানা যায়। ঘটনার পর কিশোর-কিশোরীর দুই পরিবারই বিয়ের বিষয়টিতে রাজি হয়। কিন্তু তা হলেও তাদের বয়সের বিষয়টি বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে আদালত বলেন, দুজনই নাবালক। কিন্তু তাদের সন্তান হয়েছে। এ কারণে দুই পরিবার বিয়েতে রাজি হলে এবং যশোর শি”শু সংশোধনাগারে গেলে তাদের সার্বিক সহযোগিতা করতে বলা হয়েছে। বিয়ের পর আদালতে প্রতিবেদন আকারে জানাতে বলা হয়েছে। আদালত তখন কিশোরীর মুক্তির বিষয়টি বিবেচনা করবে।
রোববার (২৮ আগস্ট) বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি বশির উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে আবেদনের শুনানি করেন অ্যাডভোকেট সেলিনা আক্তার। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারোয়ার হোসেন বাপ্পী।
এর আগে রংপুরের পীরগাছায় এক কিশোরের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে সন্তান প্রসব করা এবং সন্তান জন্মের পর বিয়ে না করা ওই তরুণীর বাবা-মাকে তলব করেন হাইকোর্ট।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, মেয়েটি স্থানীয় দাখিল মাদ্রাসায় নবম শ্রেণিতে পড়ে। দেড় বছর আগে ওই কিশোরীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হয়। মেয়েটি অন্তঃস’ত্ত্বা হয়ে পড়ে। ২৫ মে পরীক্ষার পর মেয়েটির গর্ভধারণের বিষয়টি নিশ্চিত করে পরিবার। পরে ১ জুন ওই কিশোরের বিরুদ্ধে পীরগাছা থানায় মামলা করে মেয়েটির পরিবার। মামলার পর ওই কিশোরকে আটক করেছে পুলিশ।
এদিকে গত ঈদুল আজহার দুই দিন পর সন্তান প্রসব করেন ওই কিশোরী।
আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেন, ছেলেটি মেয়েটির বাবার সঙ্গে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করেছে। কিশোর ও তার পরিবার মেয়েটিকে বিয়ে করে সন্তানের দায়িত্ব নিতে রাজি হয়। কিন্তু স্থানীয় গ্রামপ্রধান, চেয়ারম্যান-মেম্বারদের প্ররোচনায় মেয়েটির বাবা টাকা ও তিন বিঘা জমি দাবি করেন। যে কারণে সমস্যার সমাধান হচ্ছে না।
তবে তাঁদের বিয়ের বিষয়টি এখন মুখ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে, এমনটাই জানিয়েছে সেখানকার স্থানীয় প্রতিনিধিরা। তাদের মতে যেহেতু দুই পরিবার বিয়েতে সম্মতি দিয়েছে এবং তাদের সন্তান জন্মদান হয়েছে, তাই তাদের বয়সের বিষয়টি বিবেচনা করে হলেও তাদের বিয়ে দেওয়া অনেকটা অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। যেহেতু বয়সের বিষয়টি আইনগতভাবে একটি বাঁধা তাই সেটির ও সমাধান অবশ্যই বের করতে হবে এমনটাই জানান তারা।