বিয়ে হলো একটি সমাজিক বন্ধন। বিয়ের দুটি মানুষকে চিরবন্ধনে আবদ্ধ করে এবং এর সাথে দুটি পরিবারকেও মধুর বন্ধনে আবদ্ধ করে থাকে। বিয়ে যে ধ/র্মেরই হোক না কেনো প্রত্যেকটা বিয়েতে কিছু নিয়ম কানুন থাকে আর এই নিয়ম কানুন মেনেই বিয়ে সম্পন্ন করা হয়। মুসলিম বিয়েতে দেনমোহর নির্ধারন করা এবং তা পরিশোধ করা খুবই একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ইসলামিক দৃষ্টিতে দেনমোহর পরিশোধ না করলে বিয়ে পরিপূর্ণ হয় না। সম্প্রতি হাইকোর্ট বিয়ের দেনমোহর নিয়ে একটি যুগান্তকারী রায় দিয়েছেন।
এতে কেবল স্বামী নয়, স্বামীর পক্ষ থেকে যে কেউ মোহরানা প্রদানের দায়িত্ব নিতে পারবেন বলে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে পারিবারিক আদালতে মামলা দায়ের করে জমির সম্পত্তি মোহরানা হিসেবে পুনরুদ্ধার করতে পারবেন স্ত্রী।
বিয়ের চুক্তি সম্পাদনের একটি অন্যতম শর্ত হচ্ছে দেনমোহর। এ শর্তটি পূরণ না করলে ইসলামি মতে বিয়ে বৈধ হয় না। মোহরানার বিষয়ে ইসলামের বিধান অত্যন্ত কঠোর। যা অবশ্যই আদায় করার নির্দেশনা রয়েছে।
সম্প্রতি জমি মোহরানা হিসেবে গ্রহণের জন্য হাইকোর্টে একটি মামলা হয়। মামলাটি হলো ‘জিয়াউল হক ও অন্যান্য বনাম ফারহানা ফেরদৌসী ( Farhana Ferdousi ) ও অন্যান্য’। এ মামলাটির শুনানি শেষে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ( Sheikh Hasan Arif ) ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের ( Ahmed Sohail ) বেঞ্চ যুগান্তরকারী রায়টি দেন।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুরজিৎ ভট্টাচার্য ( Surjit Bhattacharya ) জানান, ঐ রায়ে বলা হয়, মুসলিম বিবাহে স্বামীর পক্ষ থেকে যে কেউ মোহরানা প্রদানের দায়িত্ব নিতে পারেন।
রায়ে আরো বলা হয়, কোনো বৈধ সম্পত্তি, নগদ বা মূল্যবান জিনিসপত্র মুসলিম আইনের অধীনে মোহরানার রূপ নিতে পারবে। পাশাপাশি পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশ, ১৯৮৫ এর অধীনে প্রতিষ্ঠিত পারিবারিক আদালতে মামলা দায়ের করে জমির সম্পত্তি মোহরানা হিসেবে পুনরুদ্ধার করা যেতে পারে।
সুপ্রিম কোর্টের আরেক আইনজীবী ব্যারিস্টার শারমিন আক্তার ( Sharmin Akhter ) মনে করেন, মুসলিম বিবাহের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ রায় হিসেবে বিবেচিত হবে। তবে জমির সম্পত্তি মোহরানা হিসেবে পুনরুদ্ধার করার রায়ের বিরুদ্ধে বিবাদী পক্ষ আপিল শুনানি করবে।
প্রসংগত, স্ত্রীকে দেনমোহর পরিশোধ করা স্বামীর একান্ত কর্তব্য ও দায়িত্ব। এতে করে তাদেরই মঙ্গল হবে আর তাছাড়া তাদের বিয়ে সম্পূর্ণ বলে বিবেচিত হবে না। এটা থেকেই বুঝা গেলো বরের জন্য দেনমোহর পরিশোধ করা কতটা গুরুত্বপূ্র্ণ। হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী বরের পক্ষ থেকে যে কেউ কনের দেনমোহরের টাকা পরিশোধ করতে পারবে।